তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ছাত্রী হেনস্তা, সমকামিতা প্রমোটসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের শাস্তি পর্যালোচনায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল শুক্রবার (১৬ মে)। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তদন্ত কমিটির সদস্য ও সিন্ডিকেট সদস্য ময়মনসিংহ রেঞ্জের উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) ড. আশরাফুর রহমান সকাল ১০টায় রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের গগন হরকরা মিলনায়তনে বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। সভায় ২০১৭-১৮ বর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ বর্ষ পর্যন্ত ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সকল শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অনুযায়ী, শিক্ষক হাফিজুল ইসলাম শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীদের প্রতি অশালীন আচরণ, গালিগালাজ, নম্বর কম দেওয়ার ভয় দেখানো, এমনকি ছাত্রদের সমকামিতায় প্ররোচিত করার মতো ভয়ংকর অভিযোগে অভিযুক্ত হন।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে এবং লিখিত অভিযোগ জমা দেয়। তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করে। পরে গত ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ২৬৬তম সিন্ডিকেট সভায় তার একটি ইনক্রিমেন্ট বাতিল এবং এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আরও পড়ুনঃ বিজেএসসি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক পরিবার দিবসে বিশেষ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
তবে এই শাস্তিকে ‘লঘু’ আখ্যা দিয়ে শিক্ষার্থীরা শুরু থেকেই হাফিজুল ইসলামের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে আসছে। বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী বোরহান কবির বলেন, “অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও লঘু শাস্তি দিয়ে দায়মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা কোনোভাবেই এটা মেনে নেব না। প্রয়োজনে আন্দোলন আরও জোরদার করব।”
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের দাবি ও চাপের মুখে প্রশাসন সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় শাস্তি পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তদন্তের অংশ হিসেবে শুক্রবারের মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, এই সভায় তাঁরা নিজেদের অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরবেন এবং শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।