
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০১৮-১৯ বর্ষের অধিকাংশ বিভাগের শিক্ষার্থীরা বছরখানেক আগেই স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু হাতে মার্কশিট তথা নম্বরপত্র না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। এতে করে চাকরি কিংবা উচ্চশিক্ষার আবেদনসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
সফটওয়্যার সিস্টেমে সমস্যা থাকার কারণে মার্কশিট উত্তোলনে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে কবে নাগাদ সমাধান হবে সে বিষয়েও নিশ্চিত বলতে পারেননি তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্বে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের সনদ, ট্রান্সক্রিপ্ট ও নম্বরপত্র প্রদান করা হতো। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে অনলাইনের মাধ্যমে এই সব ডকুমেন্টস প্রদানে প্রিন্ট সেবা মাধ্যম চালু হয়। স্নাতক ২০১৮-১৯ বর্ষ থেকে পরবর্তী বর্ষের শিক্ষার্থীরা এই সেবা পাবেন বলে জানানো হয়। তবে বাস্তবে কেবল সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট প্রদান করা হলেও মার্কশিট পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল রানা বলেন, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্নাতক শেষ করি। তবে এক বছর পরও মার্কশিট হাতে পাইনি। চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারিতে মাস্টার্স শেষ করে ক্যাম্পাস ছেড়েছি। অন্য সব কাগজপত্র তুলতে পারলেও গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস নম্বরপত্র না নিয়েই ক্যাম্পাস ছাড়তে হয়েছে। কবে নাগাদ প্রদান করা হবে সেটাও আমাদের নিশ্চিত করা হয়নি।
অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন শিক্ষার্থী ফুয়াদ হাসান বলেন, আমাদের সেশনের অনেকেই ইতোমধ্যে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেছেন। তবে দুঃখজনকভাবে বলতে হয়, এখনো অনেকেই নম্বরপত্র (মার্কশিট) পাননি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সফটওয়্যার সিস্টেমের অজুহাতে কাগজপত্র উত্তোলনে বারবার ভুল ও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। নিয়মমাফিক প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়ার পরও নম্বরপত্র দেওয়া হচ্ছে না। দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান করা জরুরি।
আরও পড়ুনঃ লাল কাপড়ে মোড়া প্রতিবাদ: শোক দিবস নয়, রক্তক্ষরণের প্রতিচ্ছবি
বৈষম্যবিরোধী ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, কাগজপত্র উত্তোলনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা আগের মতোই হয়রানির শিকার হচ্ছেন। নতুন বাংলাদেশে এমন আচরণ লজ্জাজনক যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিরসনে এবং দ্রুত নম্বরপত্র প্রাপ্তিতে প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে আশা রাখছি।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর পরিচালক ওয়ালিউর রহমান জানান, সফটওয়্যার-এর সিস্টেমের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে মূলত পূর্বের কোম্পানির সাথে কাজের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। নতুনভাবে কোম্পানির সাথে চুক্তি করতে হবে। তারপর তারা কাজ শুরু করবে। কিন্তু এখনও চুক্তিপত্র হয়নি কিংবা কোম্পানিও ঠিক হয়নি বলে জানি। কবে নাগাদ সমাধান হতে পারে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক ড. শাহজাহান আলী বলেন, বিষয়টি অবগত আছি। শুধু মার্কশিট নিয়েই সমস্যা হচ্ছে, বাকিগুলো ঠিকমতো আসছে। যে কোম্পানি সফটওয়্যার তৈরী করেছে তারা সমাধান না করলে এটা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিভিন্নভাবে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা চলছে। এক্ষেত্রে নতুনভাবে কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে। নতুন করে সফটওয়্যার ডেভেলপ করতে হবে এবং ডিজাইন করতে হবে। এটা সময় সাপেক্ষ এবং এর সঙ্গে আর্থিক বিষয়াদিও জড়িত। বিষয়টির সমাধনে অফিসিয়ালি কাজ চলছে। আশাকরছি দ্রুতই সমাধান আসবে।