মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধিঃ গত বছরের ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজশাহী কলেজে অংশগ্রহণকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় দীর্ঘ এক বছর পর তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রাজশাহী কলেজ প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) কলেজের ওয়েবসাইটে অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই সংঘটিত সহিংস ঘটনার তদন্তের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। আগামী বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল ১১টায় শিক্ষক মিলনায়তনে এই সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য ও প্রমাণসহ উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির বলেন, “আমরা তদন্ত প্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবো। যেদিন সাক্ষ্য নেওয়া হবে, আমরা সেখানে উপস্থিত থাকবো এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।”
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “যদি ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাবো।”
রাজশাহী কলেজ ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, “এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে, এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও প্রশাসন নিজ উদ্যোগে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা একাধিকবার স্মারকলিপি দিয়েছি, এরপর এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। হামলায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীদের একাডেমিক ও আইনি শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এমনকি তাদের ছবি কলেজ ফটকে টানিয়ে দেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন ঘটনার সাহস না পায়।”
আরও পড়ুনঃ মার্কশিট প্রাপ্তিতে জটিলতার প্রতিবাদ ইবির ছাত্র ইউনিয়নের
এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী বলেন, “আমরা ঘটনার সময় উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে তথ্য ও প্রমাণ আহ্বান করেছি। এসব তথ্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই সারাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরাও রাজপথে নামে। আন্দোলনে সংহতি জানানো সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর সেদিন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। ঘটনার পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও প্রশাসন কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেয়নি। বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের একাধিক স্মারকলিপির পর অবশেষে তদন্ত কমিটি গঠন করল কলেজ প্রশাসন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এই জুলাই মাসের মধ্যেই দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।