spot_img

― Advertisement ―

spot_img

গোপালগঞ্জে এনসিপি’র নেতাদের উপর হামলা, ইবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশে নিষিদ্ধ আওয়ামীলীগ ও তার বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের...
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসইবি ছাত্রীকে হেনস্তা, বাস সহযোগীর শাস্তির দাবি

ইবি ছাত্রীকে হেনস্তা, বাস সহযোগীর শাস্তির দাবি

তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কে চলাচলরত জনি বাসের (লোকাল) সহযোগী দ্বারা মারধরের শিকার হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) একজন ছাত্রী। ভুক্তভোগী হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার ( ১৫ জুলাই) দুপুর ১ টার দিকে কুষ্টিয়ার চৌঁড়হাস বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে।

এতে ভুক্তভোগী হাত, কপাল, মাথা ও নাকে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত চিকিৎসক। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে ৪টি রূপসা ও ১ জনি পরিবহনের বাস আটক করে।

জানা যায়, ভুক্তভোগী ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে বগুড়া থেকে বাসে এসে কুষ্টিয়ার চৌঁড়হাস থেকে জনি বাসে উঠেন। এসময় ভাড়া নিয়ে হেলপারের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে হেলপার ভুক্তভোগীর ফোন কেড়ে নিয়ে গালে থাপ্পড় মারে ও মাথায় ২-৩ টা ঘুষি ও ধাক্কা মেরে হাতে আঘাত করে। পরে ভুক্তভোগীর ভিডিও ধারণ ও জোর করে ভুক্তভোগীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মেয়েটার থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে তার গালে থাপ্পড় মারছে।গায়ে হাত দিছে। আশেপাশে এত মানুষ থাকার পরও কেউ কথা বলছে না। আমি ঐ মেয়েকে বলছি কেউ কথা না বললেও আমি তোমার বিষয়ে সবখানে বলবো।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষার জন্য আমি ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে বগুড়া থেকে আসছিলাম। চৌড়হাস থেকে আমি রূপসা বাসে উঠতে চাইছিলাম। তখন ওনারা আমাকে আরেকটা বাস (জনি) দেখিয়ে বললো এটাতে উঠেন। এটা দ্রুত যাবে। তখন হেলপারকে বললাম আমি যেটা বেসিক ভাড়া ২৫ টাকা ভাড়া দিবো। তখন বাসে উঠার পর টাকা নেওয়ার সময় ৪০ টাকা রাখছে। তখন বললাম ভাড়াই তো ২৫ টাকা। তখন হেলপার আমাকে বললো ‘ কোথাকার অশিক্ষিত মেয়ে তুমি, আমি শেখপাড়ায় থাকি ভাড়া কত এটা আমরা জানি না? নাটক শুরু করছো।’ তখন আমি আমার স্বামীকে ফোন দিতে গেলে ফোন কেড়ে নিয়ে গায়ে আঘাত করছে। আমার মুখে ২-৩টা ঘুসি মারছে। আমি যখন প্রতিবাদ করতে ছিলাম একটা লোকও আমার সাপোর্টে কথা বলতে ছিলো না।
একটা মহিলা বেড়িয়ে বললো সব দোষ ঐ লোকের। কেউ কোনো কথা শুনছিলো না। আমার বাপ-মা তুলে গালিগালাজ করতে ছিলো। এমনকি আমার ভিডিও ধারণ করে ওরা আমাকে জোর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. খুরশিদা জাহান বলেন, ওনার হাতে, কপালে, মাথায় আর নাকে আঘাত পেয়েছে। গুরুতর তেমন কিছু হয়নি, রক্তপাত হয়নি। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি ও পর্যবেক্ষণে থাকতে বলেছি। এরপর কোনো প্রয়োজন হলে আসতে বলেছি।

শিক্ষার্থীদের দাবি, এ ঘটনায় জড়িত বাস সহযোগীর শাস্তি নিশ্চিত করা, ভুক্তভোগীকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, ক্যাম্পাস থেকে জনি বাস বাতিল ও কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ রুট পারমিট বাতিল করা।

লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. জুলফিকার হোসেন শিক্ষার্থীদের বলেন, তোমরা যেভাবে চাও সেভাবেই হবে। এসব বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। যারা মারধর ও হেনস্তা করেছে তাদের বিচার ও ভুক্তভোগী ছাত্রীর ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ নালিতাবাড়ীতে ভোগাই নদী থেকে সিএনজি চালকের রহস্যজনক মরদেহ উদ্ধার

পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আব্দুর রউফ বলেন, আমরা ঘটনাটি জানতে পেরেছি। শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকটা বাস আটক করেছে। বাসগুলো ক্যাম্পাসে নিরাপদে রাখা হয়েছে। মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জনি পরিবহনের বাস মালিক আনিস মিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর থেকে বিষয়টি অবগত হয়েছি। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। আমি বাস মালিক সমিতিকে অবগত করেছি। তারা প্রতিনিধি পাঠিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবেন।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, মালিক সমিতি ও বাস মালিকের সাথে কথা হয়েছে। তারা ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি পাঠাবে। তারপর সবাই বসে পরবর্তী ব্যবস্থা নিব।