
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কে চলাচলরত জনি বাসের (লোকাল) সহযোগী দ্বারা মারধরের শিকার হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) একজন নারী শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাফিজ আহমেদ ও শাখা ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবসার নবী হামযা স্বাক্ষরিত আলাদা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। এতে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত শাস্তি প্রদানের দাবি জানান সংগঠনগুলো।
জানা যায়, বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদে বাস সহকারী দ্বারা মারধরের শিকার হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের ছাত্রী। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে শাখা ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির।
যৌথ বিবৃতিতে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ ও সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন বলেন, “একজন নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে এই বর্বর ও লজ্জাজনক আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ভাড়া নিয়ে কথা বলায় একজন শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলা এবং প্রকাশ্যে হেনস্তা করার ঘটনা শুধু মানবিকতাবিরোধীই নয়, তা নারীর প্রতি চরম অসম্মানও বটে।”
তারা আরও বলেন, “আমরা এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও দোষী ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। সেই সঙ্গে, ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে খুলনা-কুষ্টিয়া পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সকল শিক্ষার্থীর নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।শাখা ছাত্রদল দৃঢ়ভাবে জানায় শিক্ষার্থীদের মর্যাদা, নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় সর্বদা সোচ্চার থাকবে।
যৌথ বিবৃতিতে শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান ও সেক্রেটারি ইউসুফ আলী বলেন, “আজ দুপুরে কুষ্টিয়া থেকে ক্যাম্পাস ফেরার পথে ভাড়া নিয়ে তুচ্ছ ঘটনার জেরে একজন ছাত্রীর গায়ে হাত তোলা ও হেনস্তা করার ঘটনা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ও নিন্দনীয়। একজন নারী শিক্ষার্থীর প্রতি এমন সহিংস আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।”
আরও পড়ুনঃ নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে, মাসে আয় ৫ লাখ টাকার বেশি
তারা আরও বলেন, “সাধারণ যাত্রী ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা পরিবহন সংস্থাগুলোর দায়িত্ব। কিন্তু কিছু পরিবহন সংস্থা ও ব্যক্তির বেপরোয়া আচরণ এবং কতিপয় চালক ও সহকারীর ঔদ্ধত্যের কারণে শিক্ষার্থীরা অনিরাপদ বোধ করছে। এ ধরনের ঘটনা যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে সে জন্য প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
আমরা হেনস্তার শিকার হওয়া শিক্ষার্থীর প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি এবং এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১ টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে বগুড়া থেকে আসছিলেন। ভুক্তভোগী কুষ্টিয়ার চৌঁড়হাস থেকে জনি বাসে উঠেন। এসময় ভাড়া নিয়ে হেলপারের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে হেলপার ভুক্তভোগীর ফোন কেড়ে নিয়ে গালে থাপ্পড় মারে ও মাথায় ২-৩ টা ঘুষি ও ধাক্কা মেরে হাতে আঘাত করে। পরে ভুক্তভোগীর ভিডিও ধারণ ও জোর করে ভুক্তভোগীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর ঐ বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ৫ টি বাস আটক করে রাখেন।