spot_img

― Advertisement ―

spot_img

পরিবহন ও জনবল সংকটে ধুঁকছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

ডালিয়া হালদার, ববি প্রতিনিধিঃ তীব্র পরিবহন ও জনবল সংকটে দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্থায়ী ৩ রুট ও নতুন যুক্ত...
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসববির হলে হাউজ টিউটরদের অনুপস্থিতি, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি চরমে

ববির হলে হাউজ টিউটরদের অনুপস্থিতি, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি চরমে

ডালিয়া হালদার, ববি প্রতিনিধিঃ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) একমাত্র ছাত্রী আবাসিক হল ‘তাপসী রাবেয়া বসরী হলে’ হাউজ টিউটরদের নিয়মিত অনুপস্থিতির কারণে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বাক্ষরের প্রয়োজন, কক্ষ পরিবর্তন কিংবা লেইট ফর্ম জমার মতো দৈনন্দিন জরুরি কাজেও টিউটরদের অনুপস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীদের সময় ও শ্রমের অপচয় হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক নীতিমালায় বলা আছে, নির্ধারিত সময়ের পর হলে প্রবেশ করতে হলে শিক্ষার্থীদের ‘লেইট ফর্ম’ জমা দিতে হয়, যেখানে হাউজ টিউটরের স্বাক্ষর আবশ্যক। তবে অধিকাংশ সময় টিউটরদের হলে না পাওয়া যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিভাগে গিয়ে স্বাক্ষর নিতে বাধ্য হন। এতে একদিকে যেমন হয়রানির শিকার হতে হয়, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ সময়ও নষ্ট হয়।

একাধিক শিক্ষার্থী জানান, “অনেক সময় ক্লাস শেষ করে হলে ফিরতে দেরি হয়। তখন লেইট ফর্ম জমা দিতে হলে টিউটরদের খুঁজে পাওয়া যায় না। তাদের বিভাগে গিয়ে দেখা যায় তিনি ক্লাসে ব্যস্ত বা অনুপস্থিত। শুধু একটা স্বাক্ষরের জন্য পুরোদিন অপেক্ষা করতে হয়।”

শুধু লেইট ফর্ম নয়, কক্ষ পরিবর্তন, জরুরি সমস্যা বা স্বাস্থ্যঝুঁকির মতো গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তেও টিউটরদের উপস্থিতি না থাকায় শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতা ও অবহেলার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেকেই। শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, হলে নিয়মিত নির্ধারিত সময়ে হাউজ টিউটরদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হলে এমন ভোগান্তি অনেকটাই কমে যাবে।

এ বিষয়ে হলের ২য় তলার আবাসিক শিক্ষক ড. নাহিদা আক্তার বলেন, “একসাথে একাধিক দায়িত্ব পালনের কারণে হলে প্রতিদিন সময় দেওয়া সম্ভব হয় না। তাই আমি নিজ বিভাগে ডেকে শিক্ষার্থীদের কাগজপত্রে স্বাক্ষর করি। তবে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে হয় জনবল বাড়াতে হবে, না হয় পূর্ণাঙ্গ আবাসিক শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।”

আরও পড়ুনঃ মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় সাংবাদিকের উপর হামলা

৩য় তলার হাউজ টিউটর সুরাইয়া আক্তার বলেন, “ছুটির দিনগুলোতে আমি হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সময় দেওয়ার চেষ্টা করি। তবে একাডেমিক ব্যস্ততা ও প্রশাসনিক দায়িত্বের কারণে নিয়মিত উপস্থিত থাকা সম্ভব হয় না। বিশ্ববিদ্যালয় যদি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়, তাহলে আমি আরও বেশি সময় দিতে পারবো।”

৫ম তলার আবাসিক শিক্ষক শারমিন সুলতানা বলেন, “মানসিকভাবে সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার চেষ্টা করি, তবে বাস্তব সংকট রয়েছে। হাউজ টিউটরদের কাজের চাপ এবং লোকবল সংকট থেকেই এই সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।”

এ বিষয়ে হলের প্রভোস্ট ড. শারমিন আক্তার বলেন, “আবাসিক শিক্ষকরা দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হলেও শিক্ষক সংকট ও একাডেমিক চাপের কারণে তারা প্রতিদিন হলে সময় দিতে পারছেন না। সেই সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যাও অপ্রতুল, যার ফলে শিক্ষার্থীরা সেবা পেতে দেরি করছেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. তৌফিক আলম বলেন, “এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা প্রভোস্ট ও হাউজ টিউটরদের সঙ্গে বসে আলোচনা করবো। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ও সমস্যাগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে একটি সমাধান বের করার চেষ্টা করব, যাতে হল-জীবন আরও স্বস্তিদায়ক হয়।”