spot_img

― Advertisement ―

spot_img

আবিদের উক্তি নিয়ে ব্যঙ্গ, ক্ষমা চেয়ে ব্যাখা দিলেন পোস্টকারীরা

তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ডাকসুর ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলামের জুলাই আন্দোলনে বলা ‘প্লিজ, কেউ কাউকে ছেড়ে যায়েন না’ অংশটি নিয়ে ব্যঙ্গ করার...
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসঅন্যান্য ধর্মগ্রন্থ পাঠ না করায় ইবির ছাত্র ইউনিয়ন নেতার প্রতিবাদ, হট্টগোল

অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ পাঠ না করায় ইবির ছাত্র ইউনিয়ন নেতার প্রতিবাদ, হট্টগোল

তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জুলাই বিপ্লব প্রথম বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ পাঠ না করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নূর আলম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক এধরনের বৈষম্য মেনে নেওয়ার মতো নয় বলেও জানান তিনি। 

মঙ্গলবার ( ৫ আগষ্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠান চলাকালে নুর আলম তার বক্তব্যে এ প্রতিবাদ জানান 

এদিকে ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতির এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় একদল শিক্ষার্থী তাকে ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান শুরু করে এবং হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এর ফলে নূর আলমকে বক্তব্য দিতে না করে বেশ কয়েকজন শিক্ষক। তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তোপের মুখেও বক্তব্য চালিয়ে যান নুর আলম। পরবর্তীতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরী হলে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি সামাল দেন।

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নুর আলম বলেন, আমরা সকলে জানি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু মুসলিম শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে না। এখানে আমাদের সাথে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ সকল সহপাঠীরা আছে। কিন্তু আজকে আমরা দেখলাম এ অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করা হয়েছে কিন্তু বাকী ধর্মগ্রন্থ উহ্য করা হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বৈষম্যহীন সমাজে এ বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। আপনারা এ বৈষম্যহীন সমাজে আজকে সবচেয়ে বড় বৈষম্য করলেন। আপনাদের এর জন্য উপযুক্ত জবাব দিতে হবে। 

তিনি বলেন, ১ জুলাই শাহ আজিজুর রহমান হলের ১১৪ নম্বর রুম যা ছাত্র ইউনিয়নের রুম নামে পরিচিত। সেই রুম থেকেই সূচনা হয় এই জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান। এসময় অডিয়েন্স থেকে পুনরায় একদল শিক্ষার্থী ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে শুরু করে। 

তিনি আরও বলেন, আমি আমাদের সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হাসান এবং সমন্বয়ক এস এম সুইট আলোচনা করি যে আমাদের আন্দোলন করা দরকার। প্রথম দিনের যে আন্দোলন, যেখানে সর্বমোট ২০-২৫ জন অংশগ্রহণ করে। সেখানে ছাত্র ইউনিয়নের ১৫-২০ জন ছিল। প্রথম ব্যানারটির অর্থায়ন করা হয়েছিল ছাত্র ইউনিয়ন থেকে। 

এসময় অডিয়েন্স থেকে পুনরায় ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে শোনা যায়। 

হট্টগোল চলাকালেও নূর আলম তার বক্তব্যে বলেন, ‘ আপনি যদি এই বৈষম্যহীন সমাজে আমার কন্ঠকে রোধ করতে চান। তাহলে এর জন্য জবাবদিহি করতে হবে। বৈষম্যহীন সমাজে আপনারা আমার কন্ঠকে রোধ করতে পারেন না। 

এক পর্যায়ে একদল শিক্ষার্থী ‘স্বাধীন এ বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকে। 

আরও পড়ুনঃ ইবির জুলাই প্রোগ্রামে উপেক্ষিত অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ পাঠ

জুলাই শহিদদের স্মরণ করে নুর আলম বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ১ বছর চলে গেলেও প্রশাসন জুলাই আকাঙ্খা পূরণে কতটুকু সফল হয়েছে তা তারা বুকে হাত দিয়ে বলুক। তারা আইনের দোহাই দিয়ে এখনো ইকসু গঠন করতে পারেনি। এছাড়া আমরা চেয়েছি গণতান্ত্রিক পরিবেশ যেখানে বাক-স্বাধীনতা প্রকাশ করা যাবে। কিন্তু আমরা দেখছি বাক-স্বাধীনতাকে খর্ব করে একদল আমাদেরকে জিম্মি করে রাখার চেষ্টা করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। 

এদিকে অনুষ্ঠান শেষে এ ঘটনা ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে নানা আলোচনা-সমালোচনা। শিক্ষার্থী নুর আলমের বক্তব্যকে সমর্থন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং নুর আলমকে ভুয়া ভুয়া বলে সম্বোধনকারী শিক্ষার্থীদেরকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রশিবিরেরব সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, আজকের এ অনুষ্ঠানে যে ঘটনা ঘটেছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যে বা যারা এ কাজ করেছে একজেক্টলি তারা না বুঝে করেছে বলে আমি মনে করি। তাদের আরও ম্যাচিউরিটির পরিচয় দেওয়া উচিত ছিলো। আমাদের সকল ধর্ম ও মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। সকলের তার মত প্রকাশের অধিকার আছে, এটিকে আমাদের সম্মান করতে হবে।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, আমাদের প্রত্যেকটি ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা থাকা উচিত। আজকের এ পরিস্থিতিতে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেওয়ার কাজটি ঠিক হয়নি। আমি মনে করি যে বা যারা এটি করেছে তারা হয়তো জানেনা বা না বুঝে করেছে। 

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সাবেক সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, আমি যতটুকু জানতে পেরেছি যারা এ কাজ করেছে ওরা না বুঝে করেছে। তবে আমাদের আরও পরমতসহিষ্ণু হতে হবে।

নুর আলমের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, সব প্রোগ্রামই পূর্ণতা পায় কিন্তু কিছু ত্রুটি থেকে যায়। ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠের বিষয়ে অনুষ্ঠানে একটু মিস ম্যানেজমেন্ট হয়েছে। এ জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। একজন বক্তা তাঁর বক্তব্যে জানতে চেয়েছেন কেন পবিত্র কুরআন পাঠ সাথে অন্য গ্রন্থ পাঠ করা হয়নি? আমি তার এ মনোভাবকে শ্রদ্ধা জানাই। তার প্রতি আমার কোনো বিরাগ নেই। আগামীতে আমাদের প্রোগ্রামগুলো যাতে সার্বজনীন চরিত্রে রুপান্তরিত হয় তার প্রতি খেয়াল রাখবো।