মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধিঃ রাজশাহী কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে পরিচিত ইয়াসির আরাফাত সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে কলেজ সংলগ্ন মুসলিম ছাত্রাবাসের সামনের রাস্তায় অরক্ষিত ফুটপাতের খোলা ঢাকনায় পড়ে যান তিনি। এ ঘটনায় তিনি গুরুতর আহত হয়ে প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন, পরে আশানুরূপ চিকিৎসা না পেয়ে স্থানান্তর করা হয় খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালে। বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) কলেজের মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা, জুলাই আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ এবং সচেতন নাগরিক সমাজ। দীর্ঘদিন ধরে ফুটপাতের ঢাকনা খোলা থাকায় এবং এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ৩৬-জুলাই পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ জামান কাদেরী, সাংস্কৃতিক কর্মী ওয়ালিউর রহমান বাবু, ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ (ইয়্যাস)-এর সাধারণ সম্পাদক ও বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, ছাত্র প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম সৌরভ, ছাত্রনেতা নাদিম সিনহা, প্রমুখ।
সাংস্কৃতিক কর্মী ওয়ালিউর রহমান বাবু বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের যোদ্ধা ইয়াসির আরাফাত ম্যানহোলে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন—এ ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনা নয়, এটি সিটি করপোরেশন ও রাজশাহী কলেজ প্রশাসনের চরম অবহেলার প্রতিফলন। বহুবার অভিযোগ দেওয়া হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, যার কারণে শিক্ষার্থীরা এখন প্রাণহানির শঙ্কায় ভুগছে।”
আরও পড়ুনঃ বগুড়ায় জুলাই-আগস্ট বিপ্লব স্মরণে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত
৩৬-জুলাই পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ জামান কাদেরী বলেন, “কলেজ ছাত্রাবাসের সামনের ম্যানহোলের ঢাকনা না থাকায় এই দুর্ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার চিত্র। এ ধরনের চুরি ও অবহেলা দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে, অথচ সুনির্দিষ্ট কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ইতিপূর্বেও এমন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন অনেকেই।”
বক্তারা অবিলম্বে সমস্ত খোলা ম্যানহোল ও ফুটপাত ঢেকে ফেলার দাবি জানান এবং ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেজন্য সিটি করপোরেশন ও কলেজ প্রশাসনের প্রতি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষের মন্তব্য জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ফুটপাতের ঢাকনা দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকার বিষয়ে একাধিকবার গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।