
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) অভ্যুত্থানবিরোধী ভূমিকা চিহ্নিত করতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ১৯ জন শিক্ষক, ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ৩১ জন শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে।
রবিবার(১৭ আগস্ট) ১৯ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে শোকজ নোটিশ জারি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, শিক্ষকদের আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রকাশ্যে আন্দোলনের বিরোধিতাকারীদের নাম তালিকায় এসেছে। তবে আন্দোলন বিরোধী বিভিন্ন পরিকল্পনাকারী এবং পৃষ্ঠপোষকেরা এই তালিকায় আসেনি। ভবিষ্যতে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
শোকজ নোটিশে বলা হয়েছে, গত জুলাই-আগস্ট ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ওইসব শিক্ষকদের হুমকি-ধামকি, ভীতি প্রদর্শন, মারমুখী আচরণ, গালাগালি, মিছিলে উসকানিমূলক শ্লোগান প্রদান এবং পুলিশি হয়রানির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নোটিশে নাম উল্লেখিত শিক্ষকরা হলেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. রবিউল ইসলাম, অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মিয়া মো. রাশিদুজ্জামান, অধ্যাপক ড. আক্তারুল ইসলাম জিল্লু, সহযোগী অধ্যাপক ড. আফরোজা বানু, ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন, অধ্যাপক ড. সেলীনা নাসরিন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা।
আরও পড়ুনঃ ইবিতে অভ্যুত্থানবিরোধী চিহ্নিতকরণ কমিটির তালিকায় ১৯ শিক্ষকসহ ৬১ জনের শাস্তির সুপারিশ
এছাড়া আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার, অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডল, অধ্যাপক ড. শাহজাহান মন্ডল, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জয়শ্রী সেন, আল-ফিকহ এন্ড ল’ বিভাগের অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাজেদুল ইসলাম, ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসানের নাম উল্লেখ আছে।
রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. মনজুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরোধী ভূমিকা নিয়েছিলেন তাদের চিহ্নিত করতে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটি ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বাধ্য থাকলেও সময় বৃদ্ধির পর ১৩ আগস্ট প্রতিবেদন জমা দেয়।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে ভূমিকা নেওয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করতে গত ১৬ ই মার্চ ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে প্রশাসন। কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে উপাচার্যের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও পরবর্তীতে সময় বৃদ্ধি করে গত ১৩ আগস্ট প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ জন শিক্ষক, ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ৩১ জন শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ রয়েছে বলে জানা যায়।