
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) তিন শতাধিক হাফেজে কুরআনদেরকে সংবর্ধনা প্রদান করেছে শাখা ছাত্রশিবির। এতে হত্যাকাণ্ডের শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাজিদ আবদুল্লাহকে মরণোত্তর সম্মাননাসহ ৩২৭ জন হাফেজকে পবিত্র কুরআন ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের গগন হরকরা গ্যালারিতে ‘হাফেজে কুরআন সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংগঠনটি।
অনুষ্ঠানে শাখা শিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ড. আব্দুল মান্নান, আল-হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন ও অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল বারী সহ কয়েকশো শিক্ষার্থী।
সংগঠনের দাওয়াহ সম্পাদক আসিবুর রহমানের সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক
ছিলেন দা’ওয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. তরিকুল ইসলাম।
হাফেজদের উদ্দেশ্যে প্রধান আলোচক অধ্যাপক ড. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা শুধু কুরআন হেফজ করেননি, বরং কুরআনের আলোয় নিজেদের জীবনকে আলোকিত করেছেন। কুরআন হলো আমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এক মহান নিয়ামত। এটি শুধু একটি গ্রন্থ নয়, বরং এটি জীবন পরিচালনার পূর্ণাঙ্গ সংবিধান। এই কুরআনকে যারা বুকে ধারণ করেন, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সেই, যে নিজে কুরআন শেখে এবং অপরকে শেখায়।” আপনারা এই হাদিসের বাস্তব প্রতিচ্ছবি।’
আরও পড়ুনঃ ইসলামী শিক্ষা দিবস উপলক্ষে ছাত্রশিবিরের আন্ত:হল বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
তিনি আরও বলেন, আপনারা এই সমাজের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। আপনাদের কাঁধে রয়েছে এক বিশাল দায়িত্ব। এখন আপনাদের কাজ হলো কুরআনের এই জ্ঞানকে শুধু নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সমাজের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে দেওয়া। কুরআনের শিক্ষা ও আদর্শ দিয়ে একটি সুন্দর ও শান্তিময় সমাজ গঠনে আপনাদেরকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
প্রধান অতিথি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন,’যারা কোরআনকে ধারণ করে নিজেদের যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছে তাদেরকে আলাদাভাবে ডেকে নিয়ে হাফেজে কোরআনদের মর্যাদা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করার জন্য, উৎসাহিত করার জন্য ছাত্রশিবির আয়োজন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে অনেক হাফেজের কর্ম, লেবাস, চিন্তা-চেতনা অনেক পাল্টে যায়। এটি নাস্তিকদের আগ্রাসন ও সাংস্কৃতিক আধিপত্যের কারণে নিজেদের অস্তিত্ব হারিয়ে হাফেজে কোরআন পরিচয় দিতে লজ্জা বোধ করে এই ক্ষেত্রে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় একটু ইউনিক এখান থেকে বের হয়ে দ্বীনের দায়ী হিসেবে সারা বিশ্বে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। যেহেতু কোরআন আমরা শিখেছি এটি নিজেদের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখার গ্রন্থ না । যে ব্যক্তি কোরআনকে শেখার পরে এটির প্রচার/ প্রসার ও উৎসাহিত করে তাদেরকে কিয়ামতের দিন অন্ধ করে উঠানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, আপনারা দেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে যাবেন, নিজেদের দক্ষতার স্বাক্ষর রাখবেন, কুরআনের আলো ছড়িয়ে দিবেন। যুবকদের নেতৃত্বেই এ সমাজ ব্যবস্থা পরিচালিত হবে। কুরআনের আলোয় এ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলবো।
উল্লেখ্য, গত মে মাসে অনলাইন রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে শাখা ছাত্রশিবির ইবিতে অধ্যয়নরত হাফেজে কুরআনদের তালিকা সংগ্রহ করেছিল।