
ইকরাম হাছান, তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধিঃ ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজে ছাত্রাবাসের সিট দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কলেজের শহীদ মামুন ছাত্রাবাস ও আশপাশের এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমাম হোসাইন ও সদস্য সচিব সেলিম রেজার অনুসারীদের মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত হয় ছাত্রাবাসের এক কক্ষের সিট দখলকে ঘিরে। সন্ধ্যার দিকে ইমাম হোসাইনের অনুসারীরা সেলিম রেজার এক অনুসারীকে মারধর করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে বাড্ডা লিংক রোড এলাকায় সেলিমপন্থীরা পাল্টা হামলা চালায়।
সংঘর্ষের একপর্যায়ে দুই পক্ষই শহীদ মামুন হলে অবস্থান নেয়। তারা লাঠিসোটা নিয়ে মহাখালী অভিমুখে এগোতে থাকলে ওয়ারলেস গেটে সেনা টহলের মুখে পড়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় সেলিমপন্থীরা। এ সময় সেনা সদস্যরা শাহিন, তাহের ও আনিস নামের তিনজনকে আটক করে বনানী থানায় সোপর্দ করে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ছাত্রাবাসের চতুর্থ তলার একটি কক্ষের সিট নিয়ে বিরোধ থেকেই কয়েক দফায় সংঘর্ষে ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাত ১১টার দিকে ফাঁস হওয়া একটি ভয়েস রেকর্ডে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা নয়ন আলীকে মামুন হলে সিট পাওয়া শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়ে সংঘর্ষে অংশ নিতে বলতে শোনা যায়।
রেকর্ডে তিনি বলেন, “হলে এখন যারা অবস্থান করতেছো, দ্রুত শুদারাঘাট চলে আসো। সেলিম ভাইয়ের সাথে বড় ধরনের ঝামেলা হইছে। যে যে রুমে থাকবি, তার কিন্তু খবর আছে—রুমে যাইয়া কিন্তু পিডামু। দ্রুত চলে আসো।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব সেলিম রেজা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এইগুলো সব ভুয়া তথ্য। এমন কিছুই ঘটেনি। গতকালের ঘটনা শিবিরের অপপ্রচার।”
ভয়েস রেকর্ড প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, “এটাও ষড়যন্ত্রের অংশ। যে কেউ ইচ্ছে করে ভয়েস রেকর্ড তৈরি করতে পারে।”
আরও পড়ুনঃ রাজশাহীতে একমাত্র বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে তালা
অন্যদিকে আহ্বায়ক ইমাম হোসাইন বলেন, “এমন ঘটনা হবার কথা না। যদি হয়ে থাকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সারোয়ার জানান, “গতকাল রাতে একসাথে অনেকে জড়ো হয়েছিল। তখন যৌথ বাহিনী তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।” তিনি নিশ্চিত করেছেন আটক তিনজনই সেলিম রেজার অনুসারী।
ঘটনার বিষয়ে কলেজ প্রশাসনের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে, ছেলেদের হলগুলোতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।