spot_img

― Advertisement ―

spot_img

সাজিদের খুনিদের বের করতে না পারা ইন্টেরিমের ব্যর্থতা: ইবি ছাত্রশিবির সভাপতি

তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেছেন,ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিদকে হত্যার ৯৩ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত খুনিদের...
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসএক যুগেও সন্ধান মেলেনি ওয়ালিউল্লাহ ও মুকাদ্দাসের, সন্ধান চায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

এক যুগেও সন্ধান মেলেনি ওয়ালিউল্লাহ ও মুকাদ্দাসের, সন্ধান চায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ দীর্ঘ এক যুগ পেরোলেও সন্ধান মেলেনি আওয়ামী শাসনামলে গুম হওয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দুই শিক্ষার্থী ওয়ালিউল্লাহ ও আল মুকাদ্দাসের। তাদের সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শাখা ছাত্রশিবির।

শনিবার (৩০ আগস্ট) দুপুর ২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। এসময় ওয়ালিউল্লাহ ও আল- মুকাদ্দাসের সন্ধান, বিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটালাইজেশন ও সাজিদ আব্দুল্লাহ’র হত্যার বিচারের দাবি জানান তারা।

মানববন্ধনে প্রশাসনের টালবাহানা, মানি না মানবো না, আমার ভাই গুম কেন, প্রশাসন জবাব চাই, আমার ভাইয়ের খোঁজ, দিতে হবে, দিয়ে দাও, মুকাদ্দাস ভাই নিখোঁজ কেন, প্রশাসন জবাব চাইসহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ইবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান, সেক্রেটারি ইউসুব আলী ও ওয়ালিউল্লাহ’র বড় ভাই অধ্যক্ষ খালিদ সাইফুল্লাহসহ শাখা ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক নেতাকর্মী।

গুমের শিকার শিক্ষার্থী ওয়ালিউল্লাহর বড় ভাই অধ্যক্ষ খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, “আমি ওয়ালি-মুকাদ্দাস দুইজনেরই বড় ভাই হিসেবে বলব, আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয় আসি তখন আমার পা চলে না, বুক কেঁপে উঠে, ক্যাম্পাসে আসার সময় আমি বাবা-মাকে বলে আসতে পারি না যে আমি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় যাচ্ছি। কেউ যদি দোষীও হয় পদ্ধতিগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার বিচার হোক শাস্তি পাক, কিন্তু এধরনের গুম-হত্যা একটি দেশের বড় হওয়া, সমৃদ্ধ হওয়াকে থামিয়ে দেয়। আমি বলতে চাই তৎকালীন প্রশাসনে যারা ছিল তাদের সহযোগিতা ছাড়া এ ধরনের কাজ কখনোই সম্ভব ছিল না। আমি এবং মুকাদ্দাসের চাচা গুমের বিষয়ে তদবির করেছিলাম মিডিয়ার ঘরে ঘরে গিয়েছিলাম, প্রশাসনের ঘরে ঘরে গিয়েছিলাম সে সময় আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, তৎকালীন এখানকার স্থানীয় প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যোগসজাগেইই ওয়ালিউল্লাহ-মুকাদ্দাসের গতিবিধি চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছিল।”

শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, আজকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ পতনের একটি বছর হয়ে গেল। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা ওয়ালিউল্লাহ – আল মুকাদ্দাস ভাইয়ের সন্ধান পাই নি। সরকার গুম কমিশন তৈরি করলেও সেটার কার্যকরি পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি। আমার মনে হয় এই সরকার ঘুরি পেচিয়ে ফ্যাসিবাদকে আশ্রয় দিচ্ছে। যেটা প্রতীয়মান হয়েছে গতকালকে নূরের উপর হামলার মাধ্যমে। যদি উপদেষ্টারা পদত্যাগ করেন তবে আপনারাও গুমের শিকার হতে পারেন। তাই আপনাদেরকে অনুরোধ জানাই আমাদের ওয়ালিউল্লাহ – আল মুকাদ্দাস ভাইয়ের সন্ধান দিন। ”

আরও পড়ুনঃ তিতুমীর কলেজে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে উত্তেজনা, আটক ৩

তিনি আরও বলেন, “তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদেন ধরুন। তাহলে আমার মনে হয় অনেক কিছু বের হয়ে যাবে। আপনারা কেন ধরছেন না? কেন কুলুপ আটা আপনাদের মুখে? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর দায় এড়াতে পারে না। প্রশাসনকে বলতে চাই ওয়ালিউল্লাহ -আল মুকাদ্দাস ভাইয়ের ব্যাপারে দ্রুত কথা বলুন। নইলে বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দেওয়া হবে। প্রশাসনে এখনো অনেক ফ্যাসিবাদের দোসর আছে, সরকারকে বলছি প্রশাসনকে ঢেলে সাজান, আর যেন কোনো মা-বাবাকে তাদের সন্তানদেরকে হারাতে না হয়, সে ব্যাপারে এখনি পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।”

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা থেকে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে কুষ্টিয়া ফিরছিলেন ওয়ালিউল্লাহ ও মুকাদ্দাস। পথিমধ্যে নবীনগর এলাকা থেকে র‌্যাব ও ডিবি পরিচয়ে উঠিয়ে নেওয়া হয় তাদের। এরপর থেকে তাদের আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। ওয়ালীউল্লাহ ছাত্রশিবির ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তৎকালীন অর্থ সম্পাদক এবং মুকাদ্দাস সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছিলেন বলে জানা গেছে। পরবর্তীতে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী গুমের খবর অস্বীকার করে। তবে সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ বিভিন্ন সময়ে গুমের শিকার ৭৬ জনের একটি তালিকা দেয় বাংলাদেশ সরকারকে। তালিকায় ওয়ালিউল্লাহ ও মুকাদ্দাসের নাম আছে বলে জানা গেছে।