
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন সীমিত করতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন। ক্যাম্পাসে সভা, সমাবেশ কিংবা মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালনের আগে শিক্ষার্থীদের অনুমতি নিতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কেবলমাত্র ছাত্র উপদেষ্টা অফিসে তালিকাভুক্ত সংগঠন, সমিতি ও ক্লাব ব্যতীত অন্য কোনো নামে ক্যাম্পাসে কর্মসূচি পালন করা যাবে না। কোনো সংগঠনকে তালিকাভুক্ত হতে হলে গঠনতন্ত্র, পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং উপদেষ্টা পরিষদের তালিকা ছাত্র উপদেষ্টা অফিসে জমা দিতে হবে।
এ নির্দেশনার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের অধিকার খর্ব করছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে আরও সংকীর্ণ করে তুলছে।
শিক্ষার্থী চয়ন সমালোচনা করে লেখেন, “সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন প্রয়োজনের তাগিদে হয়ে থাকে। সংগঠন ছাড়া যৌক্তিক কারণে শিক্ষার্থীরা কথা বলতে পারবে না—এটা স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত।”
আরেক শিক্ষার্থী রাহাত আব্দুল্লাহ লেখেন, “যেসব শিক্ষার্থী কোনো সংগঠন বা ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত নন, তারাও যদি যৌক্তিক দাবিতে মানববন্ধন করতে চান, তবে কি পারবেন না? প্রশাসনের এ ধরনের পদক্ষেপ মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করছে।”
নারী শিক্ষার্থী আশিফা ইসরাত জুঁই মন্তব্য করেন, “ইবিতে ভর্তি মানেই ক্লাস করে রুমে ফেরা। একটু জোরে কথা বলতে গেলেও অনুমতি নিতে হবে। মনে হয় শিগগিরই ওয়াশরুম ব্যবহারেও অনুমতি নিতে হবে।”
আরও পড়ুনঃ ডাকসুর ভিপি-জিএসসহ ২৮ পদের ২৩ পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট
অন্য শিক্ষার্থী ত্বকী ওয়াসিফ লেখেন, “আন্দোলন করলে কি দাবি থাকবে, কী স্লোগান হবে—তাও কি প্রশাসন ঠিক করে দেবে?”
ইবির সাবেক সমন্বয়ক গোলাম রব্বানী বলেন, “আন্দোলন রেজিস্ট্রেশন দেখিয়ে হয় না, প্রয়োজনেই হয়। প্রশাসন যদি সত্যিই দায়িত্ববান হয় তবে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক প্রয়োজনগুলো আমলে নিয়ে সমাধান করা উচিত।”
শাখা শিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসানও মত দেন, “ভালো পরামর্শ হলেও শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার আদায়ে পিছপা হবে না। একজন হলেও আন্দোলন চলবে।”
তবে এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।