মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধিঃ রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসে সিট বরাদ্দ সাময়িকভাবে স্থগিত থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গোপনে সিট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নোটিশ ছাড়াই প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মহলের তদবিরে ও দায়িত্বশীলদের পরিচিত শিক্ষার্থীরা সিট পাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
গত জুলাইয়ে ছাত্রাবাস কর্তৃপক্ষ সীমিত সংখ্যক সিট বরাদ্দের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করে। পরে ২১ আগস্ট প্রকাশিত চূড়ান্ত তালিকায় অনার্স শিক্ষার্থীদের ইন্টারমিডিয়েট ভবনে সিট বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্তে ইন্টারমিডিয়েট শিক্ষার্থীরা রাতেই প্রশাসন ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন। শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে কর্তৃপক্ষ সেদিন রাতেই বরাদ্দ বাতিল ঘোষণা করে। এরপর থেকেই ছাত্রাবাসে সিট বরাদ্দ প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে।
তবে মুসলিম ছাত্রাবাসের বিভিন্ন ব্লকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নোটিশের পরও প্রায় ৮ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থী নতুন সিট বরাদ্দ পেয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, এর সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। এর মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী আনুষ্ঠানিক বরাদ্দ ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে বিনা জামানতে আবাসিকভাবে অবস্থান করছেন।
সূত্র মতে, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ ভবনে (ই-ব্লক) চার থেকে পাঁচ জন, বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন ভবনে (সি-ব্লক) এক থেকে দুইজন এবং বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ভবনে (এ-ব্লক) একজন শিক্ষার্থী সিট বরাদ্দ পেয়েছেন। এছাড়াও আরও কিছু শিক্ষার্থী সিট পেয়েছেন বলে জানা গেলেও প্রশাসন তা নিশ্চিত করেনি। এমনকি অভিযোগ রয়েছে, এ-ব্লকে একজন শিক্ষার্থী বিনা জামানতে অবস্থান করছেন।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইউসুব আলী বলেন, “আমি একাধিকবার আবেদন করেও সিট পাইনি। অথচ যোগ্য না হয়েও অনেককে সিট দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন প্রকাশ্যে সিট বরাদ্দ স্থগিত রাখলেও গোপনে বরাদ্দ দিলে তা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও বৈষম্যমূলক।”
আরও পড়ুনঃ পাবনায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভারতের নাগরিক
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াজ উদ্দীন আহম্মেদ অভিযোগ করে বলেন, “আমরা শুরু থেকেই বৈষম্যের শিকার। আমি স্যারের কাছে একাধিকবার সিটের জন্য গিয়েছি, কিন্তু ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ বিভিন্ন সুপারিশে অন্যদের সিট দেওয়া হয়েছে।”
ছাত্রাবাসের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. রুবাইয়াত-ই-আফরোজ বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নোটিশ ছাড়াও বিশেষ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী তুলতে পারি। আমার জানা মতে পাঁচ-ছয় জন শিক্ষার্থী উঠেছে, এর মধ্যে দুইজনকে আমি বিশেষ বিবেচনায় তুলেছি। এর বাইরে আর কেউ উঠেছে কি না, তা আমার জানা নেই।”
প্রধান তত্ত্বাবধায়ক ড. শাহ মো. মাহবুব আলম বলেন, “বর্তমানে সিট বরাদ্দ স্থগিত রয়েছে। নতুন শিক্ষার্থী ওঠার কথা নয়। কেউ যদি গোপনে উঠে থাকে সেটা আমার জানা নেই।”
এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী বলেন, “কিছুদিন আগে নোটিশ দিয়ে মুসলিম ছাত্রাবাসে নতুন শিক্ষার্থী ওঠা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি ছাড়া কেউ যদি শিক্ষার্থী তোলে, তবে তা অন্যায়। তবে এ বিষয়ে আমি অবগত নই।”