
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধ ও নিরীহ মুসলিম ভাই-বোনদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ‘মার্চ ফর গাজা’ শীর্ষক পদযাত্রা করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও মুসল্লিবৃন্দ।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে জুমার নামাজ শেষে শিক্ষার্থী ও মুসল্লিরা ক্যাম্পাসে পদযাত্রা করেন। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মসজিদ প্রাঙ্গনে সমবেত হয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ইবি শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতনের মূল কারণ মসজিদুল আকসা দখলে নেয়া নিয়ে। আমরা ১৭৫ একর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঘোষণা দিতে চাই— আমাদের একবিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত মসজিদুল আকসাকে হাতছাড়া করতে দিব না।’
তালাবায়ে আরাবিয়া ইবি শাখার সহ-সভাপতি সাজ্জাতুল্লাহ শেখ বলেন, ‘যখন সারা বিশ্ব ‘ইজরায়েল নো মোর’ আওয়াজ তুলছে সেই সময় এসে জাতিসংঘ নামক বিজাতিসংঘ নেতা নেয়াহুকে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ করে দেয়। তবে শান্তিপ্রিয় দেশগুলো তার বক্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। আজকে সারা বিশ্বে তাওহিদ ও শিরকের লড়াই হচ্ছে, আগামীতে তাওহিদে ঝাণ্ডাবাহীরা জিতবে।’
ইবি শিক্ষার্থী তানভীর মন্ডল বলেন, ‘আল আকসা আমাদের মুসলিমদের প্রথম কেবলা। মুসলিম উম্মাহ-এর ইতিহাস, ঐতিহ্য, আবেগ ও অনুভূতি জড়িত। হাজারো নবী রাসুল পয়গম্বরের পদচারণা পড়েছে ফিলিস্তিনে। দীর্ঘদিন ধরে ইজরায়েল জায়ানিস্টরা গাজা, রাফা জেরুজালেম সহ ফিলিস্তিনের বিভিন্ন অঞ্চল দখল সহ নির্বিচারে নারী-শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের উপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে, যা পৃথিবীর সর্ব প্রকারের নৃশংসতাকে ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের চিকিৎসা ও খাবার সামগ্রী বহনকারী নৌ বহরে আক্রমণ করে আরও একটি মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। আমাদের আরব বিশ্ব তথা মুসলিম বিশ্বের নেতাদের কাছে অনুরোধ আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে এগিয়ে আসলে ফিলিস্তিনের এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে মনে করি।’
আরও পড়ুনঃ ঈমানের প্রতি দৃঢ়তা: হিরনচন্দ্র থেকে মুজাহিদ, পাল্টে গেল জীবন
শাখা ছাত্রশিবির সেক্রেটারি ইউসুব আলী বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে ইজরায়েলিরা ছেষট্টি হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শাহাদাত বরণ করিয়াছে। তারমধ্যে সিংহভাগ নারী ও শিশু। তাদের মধ্যে এতটুকু মানবিক বোধ নাই। সম্প্রতি গত ৩১ আগস্ট থেকে শুরু করে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নামক যে মানবিক সেবার জাহাজ গেছে তাতেও হামলা ও সমাজসেবকদের গ্রেফতার করে তাদেরকেও ছাড় দেয়নি। অথচ তারা ছিল সবাই সমাজসেবক ও মানবিক সহযোগিতা নিয়ে গেছে।
তিনি বিশ্ব মুসলিম ও কমিউনিটিকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আর কতগুলো লাশ ফেললে বিশ্বের বিবেক নাড়া দিবে? আর কতটা অমানবিক নির্যাতন করলে বিশ্ব মানবিক হবে? যাদের প্রতিবাদ করার সুযোগ থাকার পরেও চুপ রযেছে আল্লাহর গজব সন্নিকটে। তারা যদি গাজা দখলে সফল হতে পারে তাহলে আপনার ভূমিতেও আঘাত হানতে তারা কোনো দ্বিধাবোধ করবে না। আসুন আমরা এক হই।
মসজিদের খতিব আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ফিলিস্তিনিদের মাধ্যমে দেখাচ্ছে যে একটি জাতি জিহাদের মাধ্যমে কেমনে টিকে থাকতে পারে। সারা বিশ্বের মুসলিমরা এক দেহতুল্য। আমরা যদি ফিলিস্তিনিদের ব্যথা অনুভব করতে না পারি, তাহলে আমাদের ইসলাম প্রশ্নবিদ্ধ। এজন্য আমাদেরকে অগ্রসর হতে হবে। চোখের পানি ফেলতে হবে। প্রয়োজনে আমরা রক্ত ও জীবন দিতে কোনো কুণ্ঠাবোধ করবো না।’