তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে মশাল মিছিল করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নভেম্বরের মধ্যেই এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করার দাবি জানান তারা। এসময় রংপুর বিভাগের আটটি জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির ইবি শিক্ষার্থীসহ অন্যরা অংশগ্রহণ করেন।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাত আটটার দিকে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় থেকে মশাল মিছিল শুরু হয়ে প্রধান ফটকে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী ও দিনাজপুর জেলার ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যরা অংশগ্রহণ করেন।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা 'জাগো বাহে, কোনটে সবায়',' উত্তরবঙ্গের কান্না, আর না আর না', 'উত্তরবঙ্গ ভাসে, ইন্টেরিম হাসে', ''ভারত যদি বন্ধু হও, ন্যায্য পানির হিস্যা দাও', 'চুক্তি নিয়ে টালবাহানা, আর না আর না', 'তিস্তা পাড়ের সাথে, ইবিয়ানরা আছে' ইত্যাদি স্লোগান দেয়
সমাবেশে বক্তারা বলেন, “তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কোনো একদিনের বা এক ব্যক্তির নয়, এটি তিস্তা পাড়ের লক্ষাধিক মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে জড়িত দীর্ঘ আন্দোলন। সরকারের অবহেলায় উত্তরবঙ্গ বারবার বঞ্চিত হয়েছে, রংপুরসহ তিস্তাপাড়ের মানুষ আজও বৈষম্যের শিকার।
প্রতি বছর উত্তরবঙ্গ বন্যায় কবলিত হয়ে অনেকগুলো পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়ে। তাদের ফসল আবাদি জমি সম্পদ বিলীন হয়ে যায় নদী গর্ভে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর কোন স্থায়ী সমাধান করা হয় নি। এর এক মাত্র সমাধান তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান আগামী মাসের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করুন। তিস্তাপাড়ের অধিকার আদায়ে নতুন প্রজন্ম রক্ত দিতেও প্রস্তুত।”
আরও পড়ুনঃ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থঃ ইবি উপাচার্য
ইবির সাবেক সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, “তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কোনো একদিনের বা কোনো এক ব্যক্তির সংগ্রাম নয়, এটি প্রায় ৪৫ বছর ধরে তিস্তা-পাড়ের লক্ষাধিক মানুষের জীবিকা, আশা ও অধিকার রক্ষার সংগ্রাম। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মশাল মিছিল করে এ প্রতিবাদ ব্যক্ত করছি।”
উত্তরবঙ্গের অবহেলার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই অঞ্চল বারবার অবহেলিত হয়েছে; তার ফল হচ্ছে আজকের নিত্যজীবন ও আয়ের পার্থক্যে। তিস্তা-পাড়ের মানুষ সারাবাংলার অন্নভান্ডারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেও ন্যায্য অংশ পাচ্ছে না, এটি সহ্য করা যায় না।”
তিনি আরও বলেন, “নভেম্বরে যদি তিস্তা মহাপ্রকল্পের কার্যক্রম শুরু না হয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা একটি দুর্বার আন্দোলন শুরু করব। ছাত্রসমাজসহ সব সহযোদ্ধাকে ঐক্যবদ্ধ করে সরকারকে বাধ্য করব তাদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে। প্রয়োজনে তিস্তাপাড়ের জন্য হাজার হাজার সাহসী মানুষ আত্মত্যাগ করতেও প্রস্তুত, আমরাও পাশে আছি।”