

মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধিঃ “বিপর্যয় ও জরুরি পরিস্থিতিতে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির সুযোগ”— এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজশাহী কলেজে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ২০২৫ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বেলা ১১টায় কলেজের হাজী মুহম্মদ মহসীন ভবনের ১৭ নম্বর গ্যালারি রুমে রাজশাহী কলেজ মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্যোগে এই বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। মূলত রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাঁধন এবং বিএনসিসির সদস্যদের নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. যহুর আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. মো. সেরাজ উদ্দীন। এছাড়া মনোবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. সাত্তার এবং সহকারী অধ্যাপক ড. নিতাই সাহা কুমার উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী কলেজ মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সাইকোলজিস্ট শতরূপা সরকার। তিনি বলেন, “মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় সাহায্য চাওয়া কখনো লজ্জার নয়, বরং এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। শিক্ষার্থীর মানসিক সুস্থতা তার পড়াশোনা, মনোযোগ ও জীবনমানের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।”
তিনি আরও বলেন, “২ থেকে ৫ দিন মন খারাপ থাকা স্বাভাবিক; কিন্তু যদি তা ১৪ দিন বা তারও বেশি স্থায়ী হয় এবং দৈনন্দিন কাজে প্রভাব ফেলে, তবে সেটি মানসিক সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। অনেকেই শেষ পর্যায়ে এসে চিকিৎসা নেন— অথচ প্রাথমিক পর্যায়েই সচেতনতা ও পরামর্শ নেওয়া জরুরি।”
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের রাজনীতি অহংকার-পতনের বৃত্তে আবৃত
সভায় বক্তারা মানসিক সমস্যার ধরন, কারণ, লক্ষণ, প্রভাব ও প্রতিকার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তারা বলেন, সামাজিক ও পারিবারিক সহায়তা মানসিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত জরুরি, এবং কাউন্সেলিং বা পেশাদার সহায়তা নিতে কখনো দ্বিধা করা উচিত নয়।
সর্বশেষে উপস্থিত সংগঠনগুলোর সদস্যদের উদ্দেশে শতরূপা সরকার বলেন, “আপনারা যেহেতু সরাসরি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কাজ করেন, তাই নিজেরা মানসিকভাবে সচেতন থাকুন এবং অন্যদেরও সচেতন করে তুলুন। একসঙ্গে কাজ করলে আমরা আরও মানসিকভাবে সুস্থ ও সহানুভূতিশীল ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে পারব।”
আলোচনা সভা শেষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত প্রচারণা লিফলেট বিতরণ করা হয় এবং দিনব্যাপী ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করা হয়।