spot_img

― Advertisement ―

spot_img

হাদির ওপর সন্ত্রাসী হামলা, মহাসড়ক অবরোধ করে ইবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণ...
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসবিধি লঙ্ঘন করে ফল প্রকাশে বিপাকে ইবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা

বিধি লঙ্ঘন করে ফল প্রকাশে বিপাকে ইবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা

তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইংরেজি বিভাগে একাডেমিক অর্ডিন্যান্স (বিধি) লঙ্ঘন করে ফল প্রকাশের ঘটনা ঘটেছে। এতে ২০১৯-২০ বর্ষের শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পড়েছে। এ ঘটনায় তৎকালীন দুই বিভাগীয় সভাপতি প্রফেসর ড. মোছা: সালমা সুলতানা ও প্রফেসর ড. মিয়া মোঃ রাসিদুজ্জামানের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

তৎকালীন বিভাগীয় সভাপতিদ্বয়ের অবহেলায় বিধিমালা (অর্ডিন্যান্স) অগ্রাহ্য করে ক্রেডিট বণ্টনে ত্রুটি হওয়ায় মানোন্নয়ন, রিটেক ও প্রকাশিত সনদে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ওই বর্ষের ছাত্রদের ১ম ও ২য় বর্ষে মানোন্নয়ন পরীক্ষা নেয়া হলেও পরবর্তীতে বিভাগটির তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক ড. মিয়া মোঃ রাসিদুজ্জামান শিক্ষার্থীদের সেশনজট নিরসনের জন্য অর্ডিন্যান্স না মেনে ৩য় বর্ষ থেকে মানোন্নয়ন পরীক্ষা গ্রহণের সুযোগ দেননি। চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর মানোন্নয়ন ও রিটেক পরীক্ষার অনুমোদন নিতে গেলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর ফাইল অনুমোদন করেনি। এতে ভোগান্তিতে পড়ে ওই বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের অর্ডিন্যান্স ৮.১ ধারা অনুযায়ী মোট ক্রেডিট হওয়ার কথা ১৩৬ ক্রেডিট। কিন্তু তৎকালীন বিভাগীয় সভাপতি প্রফেসর ড. মোছা: সালমা সুলতানা’র দায়িত্বে অবহেলায় ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অর্ডিন্যান্স ৬.১ ধারা অনুযায়ী করে ১২৮ ক্রেডিট-এর ভিত্তিতে কোর্স বন্টন করা হয়। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী ক্রেডিটসহ তাদের ফল প্রকাশ করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ব স্ব অনুষদের একাডেমিক অর্ডিন্যান্সের অভিন্ন মৌলিক বিষয়গুলোর নীতি অনুযায়ী চুড়ান্ত ফল প্রকাশের পর কোনো শিক্ষার্থী সিজিপিএ- ৩.০০ এর কম পেলে ক্রেডিটপূর্ণ বা মানোন্নয়নের আবেদন করতে পারবে। যদি কোনো শিক্ষার্থী ১ম থেকে ৪র্থ বর্ষ পর্যন্ত কোনো কোর্সে সিজিপিএ-৩.০০ এর কম পেয়েছে তারা ফল প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে মানোন্নয়নের আবেদন করতে পারবে। কিন্তু নিয়মকে অগ্রাহ্য করে তৎকালীন সভাপতি প্রফেসর ড. রাসিদুজ্জামান মৌখিকভাবে প্রতিশ্রুতি দেন, যাদের কোর্সে ৩.০০-এর নিচে থাকবে, গড় সিজিপিএ যাই হোক না কেন, তাদের মান উন্নয়ন নেওয়া হবে। বর্তমানে বিভাগ বলছে, সকল কোর্সের রেজাল্ট মিলিয়ে গড়ে সিজিপিএ ৩.০০ বা তার বেশি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারবে না, যা তৎকালীন সভাপতির দেওয়া প্রতিশ্রুতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

ফলাফল প্রকাশের সময় জানাজানি হলে বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বিভাগের একাডেমিক সভায় এটি উত্থাপন করেন। পরে তারা ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে উপাচার্য বরাবর লিখিত দেন। সেই প্রেক্ষিতে পূর্বের অর্ডিন্যান্স অনুসরণ করে ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের চূড়ান্ত ফলাফল প্রদানের জন্য বিভাগের সভাপতি, ডিনের সুপারিশসহ উপাচার্য বরাবর আবেদন জানান।

পরে গত ১৮ অক্টোবর ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। ফল প্রকাশের পর ওই বর্ষের ১২ জন শিক্ষার্থী মানোন্নয়ন পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়।

বিধি লঙ্ঘন করায় সমাধান খুঁজতে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্নারে সংবাদ সম্মেলন করেন পাঁচ শিক্ষার্থী। তারা হলেন, শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান, বায়োজীদ বোস্তামী, নাহিদ আক্তার নোভা,মাহাথির মোহাম্মদ চমন ও রবিউল ইসলাম প্রমূখ।

আরও পড়ুনঃ নালিতাবাড়ীতে নবাগত ইউএনওর সঙ্গে সাংবাদিকদের পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতার কারণে কম কোর্স পড়ানো এবং মান উন্নয়ন পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে একাডেমিক অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। বর্তমান রেজাল্ট আমাদের কোন কাজে আসবে না। আমরা চরম বৈষম্য এবং প্রতারণার শিকার। আমরা এই সপ্তাহের মধ্যেই যথাযথ নিয়ম মেনে মানোন্নয়ন পরীক্ষার অনুমতি চাই।

এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘পূর্বের সভাপতিদের কিছু ত্রুটির কারণে বিভাগের শিক্ষার্থীরা এই ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছে। আমরা একাধিকবার বিভাগের একাডেমিক সভা করে ডিন স্যারের সুপারিশ নিয়ে উপাচার্য বরাবর পাঠিয়েছি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর ও উপাচার্যের সুপারিশ হলে পরীক্ষা গ্রহণ করতে বাঁধা নেই।

দেশের বাইরে থাকায় প্রফেসর ড. মোছা: সালমা সুলতানার মুঠোফোনে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রফেসর ড. মিয়া রাসিদুজ্জামান বলেন, মানোন্নয়নের আবেদনসহ আমিও ভিসি অফিসে গিয়েছিলাম। পরবর্তীতে সেখান থেকে সিদ্ধান্ত আসেনি। আমরা সদয় সহানুভূতি দেখাতে অনুরোধ করেছিলাম প্রশাসনকে।

এ বিষয়ে কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এমতাজ হোসেন বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের কল্যাণ বিবেচনা করে উপাচার্য মহোদয়ের কাছ থেকে ওই ফলাফল প্রকাশের জন্য অনুমোদন নেওয়া হয়। পরবর্তীতে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে সেটির জন্যও সুপারিশ করেছি। শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হোক এটা কখনোই আমরা কামনা করি না।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. ওয়ালিউর রহমান বলেন, ওরা মানোন্নয়ন চাইছে। তাদের মানোন্নয়নের ব্যাপারে একটু প্রবলেম হয়েছে। মানোন্নয়নের পরীক্ষা অর্ডিন্যান্সের সাথে সাংঘর্ষিক আছে। এছাড়া হয়তো আগের কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে। এ ব্যাপারটা নিয়ে আমরা ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে বসবো। পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে কথা বলবো। তারপর ডিসিশন বা সংশোধন জানানো যাবে।

এ বিষয়ে বিধি মোতাবেক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান উপাচার্য প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।