অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ বছরের জনুয়ারি মাসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নবনির্মিত শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ হল চালু করা হয়। তবে হল চালু হওয়ার তিন মাস পরেও পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা বাস্তবায়ন করতে পারেনি হল প্রশাসন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উদ্বোধনের প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হলেও হলের ডাইনিং চালু হয়নি। নামমাত্র ক্যান্টিন চালু করা হলেও খাবার সংকটসহ উচ্চমূল্যে শিক্ষার্থীদের নিম্নমানের খাবার খেতে হচ্ছে। নেই ইন্টারনেট সংযোগও। ফলে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট চালাতে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।
এছাড়াও বিদ্যুৎ চলে গেলে লিফটের এআরডি সিস্টেম কাজ করে না। এমতাবস্থায় লিফট আটকে গেলে ভেতরে নেটওয়ার্ক না থাকায় লিফটের দায়িত্বে থাকা ব্যাক্তিকে কল করা সম্ভব হয় না। যার ফলে বিদ্যুৎ চলে গেলে শিক্ষার্থীদের লিফটের ভেতরে আতঙ্কিত অবস্থায় দীর্ঘ সময় থাকতে হচ্ছে। হলের গ্রাউন্ড ফ্লোরে কয়েকটি স্টেশনারি সহ খাবারের দোকান থাকলেও, সেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য না থাকা ও মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগ রয়েছে। বেশিরভাগ সময়েই দোকানগুলো বন্ধ থাকে। এছাড়া খেলার মাঠ,জিমনেশিয়াম,পত্রিকা, সেলুন, লন্ড্রি, ফটোকপি মেশিন সহ একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক হলের যাবতীয় সুযোগ সুবিধা চালু করতে পারে নি হল প্রশাসন।
অপরদিকে, হলে পর্যাপ্ত লোকবলের সংকট থাকায় হলের টয়লেট, করিডোর প্রায়ই অপরিষ্কার থাকে। ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা অভিযোগ জানিয়ে বলেন, হলে এখন পর্যন্ত ডাইনিং চালু করা হয়নি। যার কারণে দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের বাইরে থেকে বেশি দামে খাবার খেতে হচ্ছে। যা তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। সম্প্রতি হলে স্বল্প পরিসরে ক্যান্টিন চালু হয়েছে। যা হলের শতভাগ শিক্ষার্থীদের চাহিদা পূরণে অক্ষম। তবে যাবতীয় এসব সমস্যা নিয়ে হল প্রশাসনকে বেশ কয়েকবার জানালেও তারা আমলে নেয়নি।
আরও পড়ুনঃ ফের জাবির ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মূল্য বৃদ্ধি
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আশিক বলেন, হলে নূন্যতম সুযোগ সুবিধা নেই। একজন শিক্ষার্থীকে যে কোনো প্রয়োজনে বটতলায় যেতে হয়। প্রশাসনের গাফিলতির কারণে এক হাজার শিক্ষার্থীদের মাশুল গুনতে হচ্ছে। হল প্রশাসন আমাদের আদিম যুগে ফেরাতে, হলে ইন্টারনেট সংযোগ চালু করছে না। খেলার মাঠ,পত্রিকা, জিমনেশিয়াম সহ কোনো সুযোগ সুবিধা পাচ্ছিনা আমরা।
এ বিষয়ে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর কবীর বলেন, নতুন হল হওয়ার কারণে সার্বিকভাবে সমস্যা নিরসনে সময় লাগবে। কোনো ওয়াই-ফাই প্রোভাইডার হলে সংযোগ দিতে সম্মত হচ্ছেনা। তাই দেরি হচ্ছে ইন্টারনেট সংযোগ দিতে। এছাড়াও হলে গ্যাস সংযোগ না থাকায় ডাইনিং চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি।