spot_img

― Advertisement ―

spot_img

‘জুলাই আন্দোলনে নারী’ কর্মসূচিতে উপেক্ষিত জাবির আন্দোলনকারী নারীরা

মোঃ আবু বকর সিদ্দিক, জাবি প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সংস্কৃতি সংগঠনগুলোর সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে ‘জুলাই আন্দোলনে নারী’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনীতে উপেক্ষিতই রয়ে...
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসজাবিতে অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণ, 'ঢাল' বানানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের

জাবিতে অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণ, ‘ঢাল’ বানানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আল বেরুনী হলের বর্ধিতাংশের লেকের পাড়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক গাছ কেটে ছয়তলা অপরিকল্পিতভাবে ভবন চারুকলা অনুষদের জন্য নির্মাণের কাজ শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছে বিভাগটি।  জলাশয় ভরাট করে মাস্টারপ্ল্যান ব্যাতীত গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণের তোড়জোড় শুরু করেছে প্রশাসন। একই সাথে জীববিজ্ঞান অনুষদের সম্প্রসারিত ভবনের জন্য ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণাগারের বিপরীতে নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে।  যার ফলে সেখানেও ছোট বড় ২০০ গাছ কাটা পড়বে বলে নিশ্চিত করছেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া নতুন ভবন নির্মাণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঠেকাতে এবার শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। 

আরও পড়ুনঃ জাবিতে তুলনামূলক সাহিত্যের নিয়োগ বোর্ড ঘিরে ছাত্রলীগের ‘শোডাউন’, চাপে উপাচার্য

জানা যায়, গত(১০ মার্চ) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জীববিজ্ঞান অনুষদের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। প্রশাসন জীববিজ্ঞান অনুষদ ভবন নির্মাণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জীববিজ্ঞান অনুষদভুক্ত সকল বিভাগের শ্রেণী প্রতিনিধির (সিআর) সহযোগিতায় বাধ্যতামুলকভাবে উক্ত বিভাগ গুলোর সকল শিক্ষার্থীকে উপস্থিত হতে বলে এবং ভবন নির্মাণ উপলক্ষ্যে সকলকে নাস্তার প্যাকেট ধরিয়ে দেয়া হয়। এ সময় পরিবেশবাদী সংগঠন ও সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জোরালো আন্দোলনের মুখে ঐ সকল শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জীববিজ্ঞান অনুষদভুক্ত একটি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায় গত (১০ মার্চ) ক্লাস শেষে শ্রেণি প্রতিনিধির মাধ্যমে তাদের বলা হয় প্রতি ব্যাচ থেকে বাধ্যতামুলক ভাবে ১০ জন করে শিক্ষার্থীকে ভবন নির্মাণ উদ্ধোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। পরে সবাই মিলে সে অনুষ্ঠানে যোগ দেন তারা।

একইদিনে একইরকম কৌশল অনুসরণ করা হয় গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের ক্ষেত্রেও। অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প কর্তৃপক্ষের পরামর্শে এখানেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জড়ো করা হয়েছিল। তবে এরপরও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল প্রগতিশীল সংগঠনগুলো সহ অন্যান্য সংগঠনগুলো আন্দোলনের হুমকি দিলে পুনরায় একইরকম পথ অবলম্বন করা হবে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাস্টারপ্ল্যান ব্যতীত নির্মাণ কাজের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ প্রকৃতি হুমকির মুখে পড়বে।  মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া নতুন করে গাছ কেটে কোনো ভবন চান না তারা।প্রায় পাঁচ বছর যাবত একটি পূর্ণাঙ্গ মাস্টারপ্ল্যানের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন তারা। উল্লেখ্য যে গত পাঁচ বছরে প্রায় দুই হাজারের বেশি গাছ কাটা হয় যা পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলেছে।

চারুকলা ভবন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থানটির পাশেই রয়েছে একটি সুবিস্তৃত লেক যেখানে কিছুদিন আগেও সবচেয়ে বেশি পাখি আসতো। সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে পরিযায়ী পাখির নিরাপদ আবাসস্থল। পাশাপাশি ভবন নির্মাণ কাজ চলাকালে ব্যহত হতে পারে পরিচায়ী পাখির বিচরণ। এদিকে একি সাথে গানিতিক ও পদার্থবিজ্ঞান অনুষদের ভবন নির্মাণ হলে হুমকির মুখে পড়বে জলাশয় সহ জীববৈচিত্র্য ও জীববিজ্ঞান অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণ হলে কাটা পড়বে ছোট বড় দুইশত গাছ যা  বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ জন্য হুমকি স্বরুপ।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘চারুকলা বিভাগের ও গানিতিক ও পদার্থ বিদ্যা ও জীববিজ্ঞান অনুষদের অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণের জন্য প্রশাসন পাঁয়তারা করেছে। আমরা তা রুখে দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে যত্রতত্র অপরিকল্পিত ভবন হওয়ায় গত তিন দশকে ২৮ শতাংশ জলাশয় এবং স্থলভূমি নাই হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, তিনটি ভবন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত জায়গায় ভবন হলে  সাত শতাধিক গাছ কাটা পড়বে। লেকের পাশে ভবন নির্মাণ হলে তা পরিযায়ী পাখির জন্য অনিরাপদ হবে। । তাই মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া আমরা ভবন হতে দিবো না। কেউ কেউ শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। আমরা মনে করি সচেতন শিক্ষার্থীরা তাদের ইচ্ছে বুঝতে পারবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের নবনির্বাচিত ডিন অধ্যাপক মো. আবদুর রব বলেন, আমি এখনও ডিনের দায়িত্ব গ্রহণ করিনি। তাছাড়া এ বিষয়ে আমি অবগত নয়। ডিনের দায়িত্ব নেওয়ার পর এই বিষয়ে আমি খোঁজ নিবো।

জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক নূহু আলম

বলেন, শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করার প্রশ্নই উঠেনা। এটা একটা ডাহা মিথ্যা কথা।আমার কাছে এমন কোনো অভিযোগ নেই যে শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করা হচ্ছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ও চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এম. এম. ময়েজউদ্দীন বলেন, ‘অংশীজনের মতামত নিয়েই ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহারের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা যারা ওখানে যাচ্ছে নিজেদের ইচ্ছাতেই যাচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের ওখানে যেতে বলা হয় নি।