
ওমর ফারুক জিলন, জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় মসজিদে মহিলাদের জন্য নির্ধারিত স্থানে এক নারী শিক্ষার্থীকে ঘুমন্ত অবস্থায় পাওয়ার ঘটনার সূত্রপাত ধরে ইমামকে অব্যাহতির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বহুমুখিতা প্রদর্শন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস আদেশ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমকে প্রক্টরের দেওয়া বক্তব্য ঘটনার সূত্রপাতের সাথে সাংঘর্ষিক।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জাহাঙ্গীর হোসেন ঢাকা মেইল কে বলেন ঘটনাটি ঘটেছে ১১:৩০ মিনিটের দিকে , প্রথম আলোকে বলে ১৬ মে রাত ১২:৩০ , বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম কে বলেন ১৫ মে ১১:৪৫ , আজকের পত্রিকাকে বলেন ৬ মে রাত সাড়ে ১১টা , রাইজিং বিডিকে বলেন ৬ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে , আমার সংবাদ কে বলেন ১১:৩০ ।
আরও পড়ুনঃ জবি ক্যাম্পাসে অবস্থিত কর্মচারীদের আবাসস্থল ছাড়ার নির্দেশ
প্রসঙ্গত, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মুনমুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে মুনমুন বলেন, ঘটনাটি ছিলো ১৮ মে রাতে প্রায় ১০ টা ৩০ এর দিকে। আমি ঐ দিন মসজিদে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। পরবর্তীতে আমাকে মসজিদের দায়িত্বে থাকা একজন দেখতে পেলে তিনি তার সাথে একজন মহিলা ( হয়তো ওনার স্ত্রী হবে) আমাকে ঐ রুম থেকে বের করে আনেন।ইমাম সাহেব তখন ভিতরেই প্রবেশ করেন নি।পরে বাহিরে আসলে ওখানে থাকা অবস্থায় ইমাম সাহেব প্রক্টর স্যারকে কল দেন। সেখানে প্রক্টর স্যারের সাথে মোবাইলে আমার কথা হয়।প্রক্টর স্যার আমাকে বলেন, তুমি তোমার হলের হাউজ টিউটরকে কল দাও।পরবর্তীতে আমি আমার হাউজ টিউটরকে কল দিলে উনি বলেন, আচ্ছা তুমি হলে চলে আসো।
এর আগে জবির প্রক্টর অভিযোগ করেন তিনি ঘটনাটি জানার পরে নাকি সেখানে একজন সহকারী প্রক্টর পাঠিয়েছেন। তবে এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে মেয়েটি বলেন আমাকে এমন কোনো বিষয়ে নিশ্চিত করা হয় নাই যে সেখানে সহকারী প্রক্টর আসছেন।আমি সরাসরি হলে চলে গেছি।
এছাড়াও প্রক্টর অফিস থেকে অভিযোগ তুলা হয় যে, ইমাম সাহেবকে নাকি ঐ ঘটনা জানার পরে প্রক্টর নিজেই কল দিয়েছিলেন এবং ইমাম নাকি মেয়েটাকে ফোনের ঐ পাশ থেকে কথা শিখিয়ে দিচ্ছিলো।এ বিষয়ে মেয়েটি বলেন ইমাম সাহেব নিজেই প্রক্টরকে কল দিলে আমি স্যারের সাথে কথা বলেছি।আর ইমামের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ তুলা হচ্ছে সব মিথ্যা বলে জানিয়েছেন ঐ শিক্ষার্থী।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম ছালাহ্ উদ্দীন বলেন, আমি ওই ছাত্রীকে চিনতামও না। মসজিদের ভেতরে একজন মেয়ে শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন জেনে আমি সাথে সাথে প্রক্টরকে ফোন দিয়ে জানিয়েছিলাম। আমার মনে কোনো খারাপ চিন্তা থাকলে মেয়েটিকে দেখতে পেয়েই আমি প্রশাসনকে অবগত করতাম না। এখন তারা দায়িত্ব অবহেলার অজুহাত দেখিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আমাকে অপসারণ করেছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ই মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের ভেতরে অনুষ্ঠিত এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে জবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম পুরুষদের নামাযের অংশে অন্যধর্মালম্বী শিক্ষকদের নিয়ে পুরুষদের সামনে বক্তৃতা পেশ করেন। বক্তব্য দেওয়ার আগে উপাচার্যকে মসজিদে ভেতরে এভাবে বক্তব্য না দিতে অনুরোধ জানান সেই ইমাম। আর এতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ অনেকেই এই ঘটনায় ইমামের উপর ক্ষুদ্ধ হন। ওই ইমাম বিগত ১৫-১৬ বছর এই মসজিদে ইমামতি করেন। তবে কখনো উনার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উঠেনি।