
মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ক্যাম্পাসে এক শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে ধর্ষণের চেষ্টা ও তার বন্ধুর মোবাইল ছিনতাইয়ের পর টাকা দাবির অভিযোগে দুই বহিরাগত যুবককে আটক করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুজনকে শিক্ষার্থীরা আটক করে রাত ১১টার দিকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। ওই ঘটনায় জড়িত একজন পালিয়ে গেছেন। ওই রাতেই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আশুলিয়া থানায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।
এ মামলায় পরে আটক দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তারা হলেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার খলিলপুর গ্রামের নাজমুল হাসান ও চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার আলামিন। তারা দুজন বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) কর্মচারী। তাদের মধ্যে নাজমুল চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হলেও আলামিন দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কর্মরত ছিলেন। তাদের দাবি, পালিয়ে যাওয়া তৃতীয় যুবকের নামও আলামিন।
আশুলিয়া থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (তদন্ত) মো. নূর আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, আমার বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুহুল আমিন ও আমি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বোটানিক্যাল গার্ডেনের পাশ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনপুরা এলাকার দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় অপরিচিত তিনজন যুবক আমাদের পথরোধ করে দাঁড়ায়। তারা আমাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় ও ২০ লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় আমাকে কুপ্রস্তাব দেয় এবং আমার বন্ধুকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে রাখার পর রুহুল আমিন সুকৌশলে টাকা আনার কথা বলে বন্ধুদের ফোন করে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম বরকত হল থেকে একদল শিক্ষার্থী গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে। সেসময় একজন ছিনতাইকারী পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ আজ সাদিক এগ্রোতে ডিএনসিসি’র অভিযান
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা (ডেপুটি রেজিস্ট্রার) জেফরুল হাসান চৌধুরী সজল বলেন, ঘটনা জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রক্টর মহোদয়কে অবহিত করেছি। পরে রেজিস্ট্রার মহোদয়ের অনুমতিসাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের হাতে আটকদের পুলিশে সোপর্দ করেছি।
তবে এ ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কিংবা প্রক্টরিয়াল বডির কাউকে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির গণমাধ্যমকে বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর একটি অভিযোগপত্র আমরা পেয়েছি, যদিওবা থানায় একটি মামলা হয়ে গেছে। এ ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের কাউকে না পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হতে পারিনি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যের জানাজা শেষ করে আসতে রাত ৮টা পেরিয়ে যায়। তবে সহকারী প্রক্টর কেউ উপস্থিত কেন ছিল না, সে ব্যাপারটি আমি দেখব।
এমন ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির অনুপস্থিতির ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, কার্যত প্রক্টর পরিবর্তন হলেও প্রক্টর বডির কোনো পরিবর্তন হয়নি। যেটি একটি ব্যর্থতা। এর দায় বর্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় প্রশাসনের ওপর। তাদের উদাসীনতায় এমন অবস্থা।