মোঃ আবু বকর সিদ্দিক, জাবি প্রতিনিধিঃ হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের আদেশের প্রতিবাদে ৪ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের(জাবি) শিক্ষার্থীরা। দাবী আদায় না হলে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
সোমবার (১জুলাই) সাড়ে এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন তারা। পরবর্তীতে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক প্রতিকি অবরোধ করে পুনরায় শহীদ মিনারের সামনে এসে মিছিল শেষ করেন।
এ সময় ” বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই, একাত্তরের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই, আমাদের সংগ্রাম চলছে চলবে, সারা বাংলায় খবর দে কোটা প্রথার কবর দে,আঠারোর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার,” ইত্যাদি স্লোগান দেন তারা।
শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত দাবিসমূহ হলো- ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে।, ১৮’ এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকুরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।, সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে, দূর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
সমাবেশে ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম ইমন বলেন, আজকের এই জনসমাবেশ প্রমাণ করে কোটর বিরুদ্ধে ছাত্র সমাবেশ সরব রয়েছে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে কোন ক্ষেত্রেই ফ্যাসিস্টরা ছাত্র-সমাজের সাথো টিকে উঠতে পারেনি; বর্তমান সরকারও ১৮’র পরিপত্র পুনর্বহাল না করে পারবে না। আমরা দাবি আদায় হওয়া পর্যন্ত আমাদের সর্বোচ্চ সংগ্রাম চালিয়ে যাবো। সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিলে রাস্ত-ঘাট অচল করে দিবো। মুক্তি যোদ্ধারা তাদের সন্তানের পিছিয়ে পড়া হিসেবে প্রমাণ করার জন্য সংগ্রাম করেনি।
আরও পড়ুনঃ তাহিরপুরে আমন ধানের বীজ ও সার বিতরণ
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, যারা কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে তাদেরকে সরকার-বিরোধী এবং জামাত-শিবির ট্যাগ দেয়া হচ্ছে। তাহলে পেনশন স্কিম নিয়ে যে আন্দোলন চলছে এটা কেন সরকারবিরোধী হবে না? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কুরআন থেকে যে দলিল পেশ করেছিল মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে, সেখানে তিনি বলেছিলেন মুক্তিযুদ্ধায় বিজয়ীরা দেশের ৮০ভাগ সুযোগ সুবিধা পাবেন। তাহলে আমার প্রশ্ন ১৯৭১ সালে কি সাধারণ জনগণ মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করেনি?
তিনি আরো বলেন, একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধারা সংগ্রাম করেছিলেন দেশের বৈষম্য দূর করার জন্য। কিন্তু আজ স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পেরিয়ে গেলেও সেই বৈষম্যকেই প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হচ্ছে, অবমাননা করা হচ্ছে। এ ছাত্রসমাজ আজ এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমানের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে।