spot_img

― Advertisement ―

spot_img

পবিপ্রবিতে রাতভর র‍্যাগিংয়ে হাসপাতালে ৩শিক্ষার্থী, বহিষ্কার  ৭

মোঃ সাইফুল ইসলাম, পবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ র‍্যাগিংয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বনের ঘোষণা দিলেও রাতভর র‍্যাগিংয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) ৩ শিক্ষার্থীকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে...
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসশিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে সেজনশটের কবলে পবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা 

শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে সেজনশটের কবলে পবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা 

মোঃ সাইফুল ইসলাম, পবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার ও প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কর্মসূচির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন সহ সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে গিয়েছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) শিক্ষকরা। 

১ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে এবং সেশনজটের আশঙ্কা করছেন পবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ এ অন্তর্ভুক্তি নিয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের দাবি আদায়ে অনড় অবস্থানে রয়েছে। গত দু’মাস ধরে বিবৃতি, সংবাদ-সম্মেলন, মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় ১লা জুলাই থেকে দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন। ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তীব্র সেশনজটের আশঙ্কা করছেন। 

এর আগে মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে পবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা সেশনজটের কবলে পড়েছিল। কিন্তু ধকল এখনও কাটিয়ে উঠতে ব্যর্থ পবিপ্রবি। সাম্প্রতি ঘটে যাওয়া পবিপ্রবি কর্মকর্তা কর্তৃক শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আনুমানিক দু’মাসেরও অধিক সময় ধরে একাডেমিক কার্যক্রম বিঘ্নিত ছিল। ফলে নতুন করে সেশনজটের মতো ঘটনার পুনরুদ্ধার হয়। 

ফলে পবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা তীব্র আশঙ্কাজনক জীবন-যাপন করছেন। একদিকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করা নিয়ে অনিশ্চয়তা, অপরদিকে সরকারি চাকরির বয়সসীমা অতিক্রম করা, সবমিলিয়ে তারা দূর্বিষহ জীবন-যাপন করছেন। তাদের ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পতিত হচ্ছে। পবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা সেশনজট নামের অভিশপ্ত জীবনের ঝুঁকিতে। যা তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য হুমকি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, পবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সেশনজটের আশঙ্কা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই, যদি বলতে হয় শুরু থেকেই বলতে হবে। আমরা মহামারি করোনার জন্য এমনিতেই ১ বছর ৭ মাস পিছিয়ে আছি। তারউপরে বিভিন্ন আন্দোলন, বিবৃতি, ভ্যাকেশনে অতিরিক্ত ছুটি, সঠিক সময়ে কোর্স শেষ না করা সবমিলিয়ে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। 

করোনাকালীন সময়ে দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে কোর্স শেষ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের চাপমুক্ত করেছেন। কিন্তু আমাদের পবিপ্রবি’তে এরকম কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে আমরা পূর্ব থেকেই অনেক পিছিয়ে যাই।

আরও পড়ুনঃ কোটা আন্দোলনকারীদের সড়ক অবরোধ, এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

সাম্প্রতি আবার পেনশন স্কিম নিয়ে শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে পুনরায় নতুন করে আরও দীর্ঘমেয়াদি সেশনজটের আশঙ্কা রয়েছে। আমার একই সেশনে অধ্যয়নরত অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের গ্রাজুয়েশন শেষ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কিংবা পেশায় নিয়োজিত হয়েছেন। অথচ দূর্ভাগ্যবশত আমরা এখনও গ্রাজুয়েশন শেষ করতে পারিনি। আমাদের পবিপ্রবি’র অন্যান্য অনুষদের সাথে তুলনা করলেও দেখা যাবে আমারা কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা ৬ মাসেরও অধিক সময় পিছিয়ে আছি৷

পবিপ্রবি’র অন্যান্য অনুষদের শিক্ষার্থীদের ইতোমধ্যেই গ্রাজুয়েশন শেষ হয়েছে। আমরা এখনও অষ্টম সেমিস্টারে অধ্যয়নরত। কথা ছিল আমাদের সেমিস্টারগুলো ৪ মাসে শেষ করে অতিদ্রুত গ্রাজুয়েশন শেষ করার কিন্তু ৪ মাস তো দূরে থাক ৮ মাসেও শেষ করতে পারছি না। একদিকে যেমন ফ্যামিলি প্রেশার অন্যদিকে সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা অতিক্রম করতেছে। সবমিলিয়ে আমরা এক অসহনীয় এবং মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। 

পবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মোঃ আসাদুজ্জামান মিয়া (মুন্না) বলেন, “যুগ যুগ ধরে দেশের সেরা শিক্ষার্থীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয় অথচ রাষ্ট্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের যেভাবে দেখছে তা চরম মর্যাদাহানিকর ও অবমাননাকর। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বৈষম্যমূলক প্রত্যয় পেনশন স্কিমের আওতায় থাকবে না। আমাদের জন্য স্বতন্ত্র উচ্চতর বেতনস্কেল প্রবর্তন করতেই হবে। সারা বাংলাদেশে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আজ এই দাবিতে কর্মসূচি দিয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।”