
ওমর ফারুক জিলন, জবি প্রতিনিধিঃ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ঘোষিত হল উদ্ধার আন্দোলনকে ঘিরে ছাত্রলীগের সক্রিয় হওয়ার আশঙ্কায় আন্দোলন স্থগিত করেছে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার রাতে এক ভিডিও বার্তায় এ স্থগিতের ঘোষণা দেন সমন্বয়ক আবু বকর। তিনি শিক্ষার্থীদের হল আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে একটি স্বার্থানেষী মহল ফায়দা লুটার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেন।
এদিকে হল আন্দোলনের ইস্যুকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে দাঙ্গা সৃষ্টি করার পরিকল্পনা আছে বলে গোপন সূত্রে জানা গেছে। এ কাজে নামানো হতে পারে কোটা আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের হয়ে কাজ করা অস্ত্রধারীদের।
এছাড়া আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরব ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা ও শিক্ষকদেরও। কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের জঙ্গী বলে আখ্যায়িত করা শিক্ষক-কর্মকর্তাও ফেসবুকে একের পর এক পোস্ট দিয়ে ক্যাম্পাসে আসার ঘোষণা দিচ্ছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। হল উদ্ধার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে কোনভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ না দেয়ার দাবি তাদের।
ফেসবুকে ইসমাইল হোসেন নামে এক জবি শিক্ষার্থী বলেন, ‘আবার অনেক ছাত্রলীগের সিনিয়র জুনিয়রদের দেখলাম এখন হল আন্দোলনে খুব একাত্মতা প্রকাশ করতেছে,এখন এটা হাইস্যকর লাগে দেখলে।অথচ ক্ষমতায় থাকাকালীন উনাদেরকে হলের ব্যাপারে টু শব্দ করতে দেখি নাই,অথচ তাদের তখন সেই সক্ষমতা ছিল হল উদ্ধারের,তারা উদ্যেগ নিলে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও সাথে যুক্ত হতো।’
জবি শিক্ষার্থীদের জনপ্রিয় ফেসবুক পেজ ‘জবিয়ানস’ এর লেখা তুলে ধরা হলো, কিভাবে নিবেন জানিনা। আজ জবি নীলদলের (আওয়ামীপন্থী) শিক্ষকদের যে তিনটা যে গ্রুপ আছে তার মধ্য দুইটা গ্রুপ এক হয়ে মিটিং করেছেন। মিটিংয়ে তারা সিদ্ধান্তঃ নিয়েছেন তারা সবাই হল উদ্বার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে আবার ক্যাম্পাসে আসবেন।
১৫তারিখ পর্যন্ত আন্দোলন নিয়ে যাবেন এবং একটা অরাজকতা এখানে সৃষ্টি হওয়ার প্রচন্ড শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। আমরা আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ই হল আন্দোলনে আপনাদেরকে উৎসাহ দিয়েছি। তবে তাদের ফেসবুক সরব হওয়া কিন্তু ভিন্ন বার্তা দিচ্ছে। এর মাধ্যমে ব্যাবসায়ীরাও আমাদের বিরুদ্ধে থাকবে আর আগামী ১৫ আগস্টে একটা অরাজকতা করে জগন্নাথ ইউনিটকে দুর্বল করা হবে।
যেহেতু ক্ষমতায় তারা নেই তাই আমরা, ১৬ তারিখেও হল উদ্বার করতে পারব। কিন্তু এদের সুযোগ দেয়া ঠিক হবেনা। আর ১৬ তারিখের পরে যে হল আন্দোলনে যাবেন শুধু ট্রেজারার আর যেসব শিক্ষকেরা জগন্নাথে দালালী করতো না তাদের সঙ্গে নিয়ে আগাবেন।
আরও পড়ুনঃ আপিল বিভাগে চার বিচারপতির নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি
মিনহাজুল ইসলাম নামে অপর এক জবি শিক্ষার্থী বলেন, ‘আগামীকালের (মঙ্গলবার) হল আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার পরিকল্পনা জবি ছাত্রলীগের! অন্যদিকে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে কোটা আন্দোলনবিরোধী ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের শিক্ষকরা।’
উল্লেখ্য, জবি ছাত্র হলগুলোর পাশে অনেক সনাতনী ধর্মের লোকের বসবাস এবং মন্দির রয়েছে। সেক্ষেত্রে যেকোনো ভাবে সেখানে হামলা হলে সেটাকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বলে চালিয়ে দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সক্ষমতা নষ্ট করার প্ল্যান হতে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা।