তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ সেশনজট নিরসনসহ ১৪ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২৪ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে মীর মশাররফ ভবনের ৩ তলায় বিভাগের সামনে অবস্থান করে তারা। পরে বিভাগের শিক্ষকবৃন্দের সাথে ভবনের ৩১৭ নং কক্ষে আলোচনা বসে শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানে আইন অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. খন্দকার তৌহিদুল আনাম, বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডলসহ ৯জন শিক্ষক ও শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা ১৪ দফা দাবি উত্থাপন করে। দাবিগুলো হলো - ক্লাস, পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলক ছুটি, পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশের তারিখ উল্লেখপূর্বক একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে। ১৫ দিন পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলক ছুটিসহ ৪ মাসের মধ্যে সেমিস্টার শেষ করে নির্দিষ্ট সময়ে ফলাফল প্রকাশ করে সেশনজট নিরসন করতে হবে। মিডটার্ম পরীক্ষার ফলাফল চূড়ান্ত পরীক্ষার পূর্বেই নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দিতে হবে। পরীক্ষার হলে 'নকল' এর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স বাস্তবায়ন করতে হবে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধান অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
বাকি গুলো হলো, প্রায়োগিক শিখন নিশ্চিত করে বিজেএস ও বার কাউন্সিলের প্রশ্ন অনুসরণ করে মানসম্মত প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নিতে হবে এবং উত্তরপত্র নির্ধারিত সময়ে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতার উপর ভিত্তি করে শিক্ষকদের কোর্স পুনঃবণ্টন করতে হবে ও শিটভিত্তিক লেকচার বন্ধ করতে হবে। রিটেক ও ইম্প্রুভমেন্ট পরীক্ষা স্ব স্ব ব্যাচের চতুর্থ বর্ষের ফলাফল প্রকাশের পরে আয়োজন করতে হবে। বিভাগের কার্যক্রম ও গুরুত্বপূর্ণ নোটিশ প্রকাশ করার জন্য একটি ফেসবুক পেইজ তৈরী করতে হবে।
এছাড়াও বিভাগের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দলীয় রাজনীতি চর্চা নিষিদ্ধ করতে হবে এবং অতিশীঘ্রই আইন বিভাগে ছাত্র-সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। ছাত্র সংসদের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধি ও সকল ছাত্র-শিক্ষকদের নিয়ে মাসে অন্তত একটা করে হলেও উম্মুক্ত মিটিংয়ের আয়োজন করতে হবে।
প্রতি বছর নবীন বরণ ও প্রবীণ বিদায়ের আয়োজন করতে হবে এবং কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার আয়োজন করতে হবে। শিক্ষক নিয়োগের জটিলতা নিরসনপূর্বক নতুন প্রভাষক নিয়োগ দিতে হবে। বিভাগের সাথে সম্পর্কিত দিবসগুলোতে যেমন- মানবাধিকার, লিগাল এইড, ভূমি সেবা ইত্যাদি দিবসগুলোতে সেমিনার, ওয়ার্কশপ ইত্যাদি আয়োজন করতে হবে ও আইন বিভাগের ডিবেটিং সোসাইটি ও মুট কোর্ট সোসাইটির আনুষ্ঠানিক ভাবে কার্যক্রম শুরু করতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ইমার্জেন্সি দুরারোগ্য চিকিৎসা সহায়তার জন্য ডিপার্টমেন্ট থেকে স্ব-উদ্যোগে ফান্ড গঠন করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ বন্যার্তদের পাশে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা, সংগ্রহ ৩লক্ষ টাকা
ক্লাসরুমে এসি, প্রজেক্টর, সচল বৈদ্যুতিক সংযোগ, নিয়মিত ওয়াশরুম পরিষ্কার ইত্যাদি সংস্কার করতে হবে।
শীঘ্রই সেমিস্টার পদ্ধতি বাতিল করে ইয়ার পদ্ধতিতে ফিরাসহ শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকদের এবং ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাবৃন্দের সর্বদা মার্জিত আচরণ বজায় রাখা ও কোনো শিক্ষক বা কর্মকর্তা কোন শিক্ষার্থীকে অযৌক্তিক হয়রানি বা হুমকি প্রদর্শন করলে তাকে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি উত্থাপন করে শিক্ষার্থীরা।
দাবির প্রেক্ষিতে অধ্যাপক ড. নূরুন নাহার বলেন, তোমাদের এ দাবিগুলোতে আমরা একমত। দাবিগুলোর বাস্তবায়নে খুব শীষ্রই একটি উপ কমিটিগঠন করা হবে যেন একটি বাস্তবভিত্তিক, কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া যায়।