মাহমুদুল হাসান, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ প্রতি বছর জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলে এবং জলাতঙ্ক প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কৃত সাফল্যের স্মরণে পালন করা হয়। প্রথম জলাতঙ্কের টিকা তৈরি করেন French রসায়নবিদ এবং মাইক্রোবায়োলজিস্ট লুই পাস্তুর, যার মৃত্যুবার্ষিকী ২৮শে সেপ্টেম্বর।বিশ্বব্যাপী জলাতঙ্ক নির্মূল করার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার প্রচার এবং রোগের ঝুঁকি এবং প্রতিরোধের কৌশল সম্পর্কে জনসাধারণের জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য বিশ্বব্যাপী বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস পালন করে।
এ বিষয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতামত তুলে ধরেছেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাহমুদুল হাসান ।
জলাতঙ্ক প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো টিকাকরণ
বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস প্রতি বছর ২৮ সেপ্টেম্বর পালিত হয়, যা জলাতঙ্ক রোগের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য নির্ধারিত। এই দিনটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। জলাতঙ্ক একটি প্রাণঘাতী ভাইরাসজনিত রোগ, যা মূলত কুকুরের কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ জলাতঙ্কের কারণে আক্রান্ত হয়, এবং অনেকেই এর ফলে প্রাণ হারায়।
জলাতঙ্ক প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো টিকাকরণ। কুকুর ও অন্যান্য প্রাণীদের নিয়মিত টিকাকরণ এবং মানুষদের জন্য জলাতঙ্কের টিকা পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি, সেমিনার ও ক্যাম্পেইন পরিচালিত হয়, যাতে সাধারণ মানুষ এই রোগের লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে অবগত হতে পারে।
বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবসের মাধ্যমে আমরা একসাথে উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারি, যাতে জলাতঙ্কের ঝুঁকি কমানো যায় এবং এই প্রাণঘাতী রোগ থেকে মানুষের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়। আসুন, আমরা সবাই মিলে এই লক্ষ্যে কাজ করি এবং জলাতঙ্কমুক্ত একটি নিরাপদ বিশ্ব গড়ে তুলি।
মো: আসাদুজ্জামান নুর
লেভেল-২,সেমিস্টার-১
ভেটেরিনারি মেডিসিন এন্ড এনিমেল সায়ন্স অনুষদ
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,সিরাজগঞ্জ ক্যাম্পাস
জলাতঙ্ক কুকুরের বা বিভিন্ন প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে প্রাণী থেকে মানুষে ছড়ায়
জলাতঙ্ক একটি বিপজ্জনক ভাইরাস যা মস্তিষ্কে প্রদাহ সৃষ্টি করে। জলাতঙ্ক কুকুরের বা বিভিন্ন প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে প্রাণী থেকে মানুষে ছড়ায়। প্রতি বছর, জলাতঙ্ক বিশ্বব্যাপী 70,000 মানুষকে হত্যা করে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে 99% মানুষের জলাতঙ্কের মৃত্যুর কারণ কুকুর। জলাতঙ্ক রোগ শুধু কুকুর কামড়ালেই হয় না। বিড়াল, শিয়াল, বেজি, বানরের কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমেও এই রোগ হতে পারে। প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে পানিভীতি, আলোভীতি, বায়ুভীতি হলেও এর শেষ পরিণতি মৃত্যু। তবে এই রোগ শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য। যদি কোনো প্রাণী, বিশেষ করে কুকুর, বিড়াল, বানর, বেজি বা শিয়াল কামড় বা আঁচড় দেয়, এবং সেই আচড় বা কামড়ানো থেকে ই জলাতঙ্ক রোগের বিস্তার শুরু হতে পারে। পশ্চিম গোলার্ধে জলাতঙ্ক থেকে মানুষের মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি।
2030 সালের মধ্যে জলাতঙ্কজনিত মৃত্যু নির্মূল করার লক্ষ্য অর্জনের জন্য, CDC বিশ্বজুড়ে বেশ কয়েকটি সংস্থা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। লোকেরা জলাতঙ্ককে হাইড্রোফোবিয়া বলে কারণ এটি জলের ভয়ের কারণ বলে মনে হয়। কারণ হল যে সংক্রমণের ফলে একজন ব্যক্তি গিলে ফেলার চেষ্টা করলে গলায় তীব্র খিঁচুনি হয়। এমনকি পানি গিলে ফেলার চিন্তাও খিঁচুনি হতে পারে, চিকিৎসা ছাড়া, জলাতঙ্ক ভাইরাস মারাত্মক হতে পারে।ভাইরাসের সংস্পর্শে আসা যে কেউ উপসর্গের জন্য অপেক্ষা না করে অবিলম্বে চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া উচিত। কুকুর বা বন্য প্রাণী কামড়ানো বা আঁচড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সাবান পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান ১৫ মিনিট ধুতে হবে। পরে সময়মতো জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা নিলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
মোঃ রাকিবুল ইসলাম শুভ
ডক্টর অফ ভেটেরিনারি মেডিসিন
লেভেল:০৩, সেমিস্টার: ০১
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়
আরও পড়ুনঃ নারায়ণপুর রাবেয়া মহাবিদ্যালয়ের নতুন সভাপতি হারুনর রশিদ
বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস ২০২৪
প্রতিবছর ২৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস পালিত হয়। জলাতঙ্ক প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং এই ভয়ংকর রোগকে পরাস্ত করার অগ্রগতি তুলে ধরার জন্য এটি প্রতিবছর পালিত হয়। জলাতঙ্ক একটি মারাত্মক কিন্তু প্রতিরোধযোগ্য ভাইরাসজনিত রোগ। এটি সংক্রমিত প্রাণীর কামড় ও আঁচড়ের মাধ্যমে মানুষ ও পোষা প্রাণীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যার ফলে গুরুতর মস্তিষ্কের রোগ ও মৃত্যু ঘটাতে পারে যদি উপসর্গ শুরু হওয়ার আগে চিকিৎসা সেবা না পাওয়া যায়। বাংলাদেশে গড়ে প্রতিবছর প্রায় ৩-৪ লাখ মানুষকে কুকুর ও অন্যান্য প্রাণী কামড়ায় এবং বর্তমানে বাংলাদেশ জলাতঙ্ক মৃত্যু হার বিবেচনায় বিশ্বে ৩য় অবস্থানে।
যথাসময়ে ভ্যাক্সিনেশন এর মাধ্যমে এটি শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য একটি রোগ। এই রোগের বিস্তার ও ভয়াবহতা ঠেকাতে সচেতনতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে ছাত্র শিক্ষক সহ দেশের সচেতন মহলই পারে সর্বসাধারণের মাঝে এর সঠিক ধরনা তুলে ধরতে। এদিনকে কেন্দ্র করে আমরা নানাবিধ সচেতনতা মূলক কার্যক্রম এর মাধ্যমে সর্বসাধারণের মাঝে জলাতঙ্ক নিয়ে সঠিক ধরনা তুলে ধরতে পারি। সকলের উদ্যোগেই সম্ভব জলাতঙ্ক প্রতিরোধ।
মোঃ মারুফ
ফ্যাকাল্টি অফ ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস গণ বিশ্ববিদ্যালয় ,
লেভেল ০২ , সেমিস্টার ০২
জলাতঙ্ক নির্মূলে প্রয়োজন সকল প্রতিকূলতা নিরসন
জলাতঙ্ক (Rabies) হল ভাইরাস জনিত এক ধরনের জুনোটিক রোগ (অর্থাৎ যে রোগটি প্রাণী থেকে মানুষে ছড়ায়)। Rabies ভাইরাস নামক এক ধরনের নিউরো ট্রপিক ভাইরাস দিয়ে এই রোগ হয়। সাধারণত কুকুর, শিয়াল, বিড়াল, বাদুড় ইত্যাদি উষ্ণ রক্তের প্রাণীদের প্রথমে এই ভাইরাস সংক্রমণ করে তারপর এদের লালা রক্ত, কামড় বা আঁচড়ানোর মাধ্যমে মানুষ বা অন্যান্য প্রাণী জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়।জলাতঙ্ক রোগের মাধ্যমে বিশ্বে প্রায় প্রতি বছর ২৪ থেকে ৬০ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন।বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ৪০ থেকে ৫০ জন মানুষ জলাতঙ্ক রোগে মারা যায়। আক্রান্ত হয় আরো অনেক,জলাতঙ্ক একে হাইড্রোফোবিয়া কিংবা পাগলা রোগও বলা হয়।আক্রান্ত প্রাণীর মুখের লালাই এই ভাইরাস বহন করে। সুস্থ ব্যক্তির ক্ষতস্থানে আঁচড় বা দাঁত বসিয়ে কামড় দিলে রাবিস ভাইরাস অতি দ্রুত ব্যক্তির প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছায়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন আক্রান্ত ব্যক্তির লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার সাত দিনের মাঝেই মারা যান। তবে লক্ষণ প্রকাশের পূর্বে টিকা নিলে মৃত্যু এড়ানো যেতে পারে এইজন্যই জলাতঙ্ক নির্মূলে প্রয়োজন সকল প্রতিকূলতা নিরসন।
মোঃ রয়েল
ডক্টর অফ ভেটেরিনারি মেডিসিন
লেভেল ০১, সেমিস্টার ০১
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়