spot_img

― Advertisement ―

spot_img

লেকসাইডের নীরবতা বলে অজস্র কথা: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শান্তির ঠিকানা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের(খুবি) সৌন্দর্য যেন শুধু ভবন বা স্থাপনার মাঝে সীমাবদ্ধ নয়—তার চেয়ে বেশি, এ ক্যাম্পাস গড়ে উঠেছে অনুভব, নিঃশব্দ প্রাকৃতিক দৃশ্য ও শিক্ষার্থীদের চোখে...
প্রচ্ছদফিচারলেকসাইডের নীরবতা বলে অজস্র কথা: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শান্তির ঠিকানা

লেকসাইডের নীরবতা বলে অজস্র কথা: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শান্তির ঠিকানা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের(খুবি) সৌন্দর্য যেন শুধু ভবন বা স্থাপনার মাঝে সীমাবদ্ধ নয়—তার চেয়ে বেশি, এ ক্যাম্পাস গড়ে উঠেছে অনুভব, নিঃশব্দ প্রাকৃতিক দৃশ্য ও শিক্ষার্থীদের চোখে দেখা স্বপ্ন দিয়ে। এমনই এক নীরবতাপূর্ণ অথচ কথকতায় ভরা স্থান হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকসাইড।

প্রতিদিন সকাল-বিকেল শিক্ষার্থীরা এখানে হাঁটেন, কেউ একাকিত্বের নির্জনতায় ডুবে থাকেন, আবার কেউ বন্ধুদের সাথে শেয়ার করেন জীবনের গভীরতম মুহূর্ত। ২০২১ সালে এই লেকসাইড ওয়াকওয়ে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করেন প্রাক্তন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। এর নকশা করেন আর্কিটেকচার ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. সিরাজুল হাকিম।

লেকের পানিতে সূর্য প্রতিফলিত হলে মনে হয় যেন সময় থমকে গেছে। পানির ওপর ভেসে থাকা পাখি আর বাতাসে দুলে ওঠা ঘাস যেন জীবনের সবচেয়ে প্রশান্ত মুহূর্তের বার্তা দেয়। এক শিক্ষার্থী জানান, “ক্লাসের চাপ, টানা অ্যাসাইনমেন্ট – সব কিছু যখন অসহ্য লাগে, তখন লেকসাইডে এসে কিছুক্ষণ বসলেই সব হালকা হয়ে যায়।”

এই লেকসাইড যেন অনুভবের ক্যানভাস। কেউ এখানে প্রথম ভালোবাসার প্রস্তাব দিয়েছে, কেউ কোনো দুঃখ লুকিয়ে বসে থেকেছে। আবার কেউ রাতের আকাশের নিচে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে জীবনের সেরা মুহূর্তগুলো জমা করেছে। আইন ডিসিপ্লিনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ঋতু সাহা বলেন, “আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সবচেয়ে সুন্দর স্মৃতিগুলো এই লেকসাইডেই তৈরি হয়েছে।”

শুধু শিক্ষার্থীরাই নন, এখানে শান্তির খোঁজে আসে কর্মব্যস্ত মানুষও। লেকসাইডের পিছন দিকে বসে থাকা দম্পতি সালমা বেগম ও সাব্বির রহমান জানান, “আমরা দুজনেই চাকরিজীবী। কাজের চাপের মাঝে একটু নীরবতা খুঁজতেই এখানে আসা। এই জায়গাটা আমাদের সম্পর্কেও যেন নতুন করে কিছু বলে।”

আরও পড়ুনঃ ববিতে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারসহ ৪ দফা দাবিতে মশাল মিছিল ও সড়ক অবরোধ

বহিরাগতরা যখন ক্যাম্পাসে আসেন, লেকসাইড হয় তাদের প্রথম নজরে পড়া স্থান। অনেকে ছবি তোলে, কেউ কেউ কবিতা লেখে এখানকার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে। লেকসাইড যেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা ও নান্দনিকতার প্রতীক।

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ থাকে তার মানুষে, আর আত্মা থাকে এমন নির্জনতায়—যেখানে অনুভব শব্দ ছাপিয়ে কথা বলে। লেকসাইড ঠিক তেমনই—একটি নিঃশব্দ আবেগের গল্প, যেখানে প্রতিটি শিক্ষার্থী খুঁজে পায় নিজস্ব প্রশান্তির ছায়া। সময় হয়তো বদলে যাবে, ক্লাস শেষ হবে, সেমিস্টার পাল্টাবে—তবে লেকসাইডে কাটানো অনুভূতিরা থেকে যাবে হৃদয়ের গহীনে।