
ইকরাম হাছান, তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধিঃ ঢাকার মহাখালীর প্রাণকেন্দ্রে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা ঐতিহ্যবাহী সরকারি তিতুমীর কলেজ ৫৭ বছর অতিক্রম করে ৫৮ বছরে পা রাখল।
৭ মে—এই দিনটি কলেজের জন্য কেবল একটি তারিখ নয়, বরং একটি ইতিহাসের ধারক, একটি স্বপ্নের পুনর্জাগরণ এবং উচ্চশিক্ষার আলো ছড়ানোর এক দীপ্ত প্রেরণা।
১৯৬৮ সালের উত্তাল সময়ের পটভূমিতে ‘জিন্নাহ কলেজ’ নামে যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানটি আজ কালের ধারায় হয়ে উঠেছে সরকারি তিতুমীর কলেজ—একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গণ্ডি ছাড়িয়ে একটি আদর্শ ও নবজাগরণের প্রতীক। বাংলার সাহসী সন্তান শহীদ তিতুমীরের নামধারী এই কলেজ আজও তার নামের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রেখে চলেছে।
প্রতিষ্ঠার শুরুটা ছিল সাদামাটা—কয়েকটি বিভাগ, হাতে গোনা শিক্ষক, সীমিত পরিসরে শিক্ষার আলো ছড়ানোর এক মহতী প্রয়াস। আজ সেই ছোট্ট শিক্ষাকেন্দ্র বিস্তৃত হয়েছে বিশাল পরিসরে, যেখানে রয়েছে প্রায় ৩৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী, বহু অনার্স ও মাস্টার্স বিভাগ, সুসজ্জিত লাইব্রেরি এবং একদল অনুপ্রেরণাদায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা। সাধারণ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য তিতুমীর কলেজ হয়ে উঠেছে এক সম্ভাবনার সিঁড়ি, যেখানে স্বপ্ন, নিষ্ঠা ও প্রতিভার সমন্বয়ে গড়ে উঠছে আগামীর সমাজনেতা, শিক্ষক, গবেষক, প্রশাসক।
শুধু পুঁথিগত বিদ্যা নয়, বরং বিতর্ক, নাট্যচর্চা, সংগীত, খেলাধুলা, সামাজিক সচেতনতা—সহশিক্ষামূলক সব কার্যক্রমেই তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলে একটি পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে। এখানকার প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অনেকেই আজ সরকারি উচ্চপদে, শিক্ষকতায়, সাংবাদিকতায় এবং উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনটি কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের কাছে শুধু উৎসব নয়, এটি এক কৃতজ্ঞতার দিন, যেখানে ফিরে দেখা হয় প্রতিষ্ঠাতাদের আত্মত্যাগ আর সাফল্যের ইতিহাস। এ দিনে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয় তাঁদের, যাঁদের হাতে এই বিদ্যাপীঠের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ রামগঞ্জে মোরশেদ ব্রিকসের মাটি দিয়ে ব্রিজের মুখ ভরাট, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী
৫৮ বছরে পা রাখা উপলক্ষে কলেজের শিক্ষকমণ্ডলী, কর্মচারী এবং সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস জুড়ে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা জানান। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই মাহেন্দ্রক্ষণে সরকারি তিতুমীর কলেজ নতুন প্রত্যয়ের সাথে অঙ্গীকার করে যাচ্ছে—জ্ঞান, ন্যায়, এবং জনসেবার দীপ্ত পথে আরও বহু দূর এগিয়ে যাওয়ার।