সবুজের সমরহের ক্যাম্পাসের দিকে তাকাতে গেলে রোদে চোখ ঝলসে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। তীব্র এ তাপদাহে ক্লাস যেন আতঙ্কের নাম হয়ে দাড়িয়েছে। তার মধ্যে আবার যাদের পরীক্ষা চলমান তারা তো আরো বেশি কষ্টে রয়েছে। বিদ্যুৎ নেই, বাতাস নেই তার মধ্যে রাতে পড়াশোনা করে সকালে পরীক্ষা দেওয়ার মত কষ্ট আর কি কিছু হতে পারে?
যে ক্যাম্পাসের বাদাম তলা, আম তলা দিনভর চলতে থাকে আড্ডা গল্প সেসব জায়গা যেন এখন রোদে খা খা করছে, শূন্যতা বিরাজমান সর্বত্র। কোনরকম ক্লাস শেষ করেই সবাই ছুটে চলে বাড়ির পথে।
গাছে গাছে পাখিদের কিচিরমিচির যেন কমেছে তাঁরাও বুঝি সূর্যের উপর অভিমান করে বসে আছে ক্যাম্পাসের সবচেয়ে বড় গাছটির মগ ডালে।
যে ছেলে মেয়ে গুলো, সেই দূর থেকে ক্লাস করতে সকাল সকাল ছুটে আসতো প্রাণচাঞ্চল্য হাসি নিয়ে আজ তাদের মুখে যেন মলিনতার ছাপ। হাসি থাকবে কি করে এই তাপদাহে বাসে চড়ে ক্যাম্পাসে আসা তো আর চাট্টিখানি কথা নয়।
আজকে হটাৎ এক ছোট ভাই আমাকে দেখে ছুটে এগিয়ে আসলো। আমি তখন ঠান্ডা পানি খেয়ে গলাটা ভিজিয়ে নিছি মাত্র। সে এসেই বলল ভাই এই গরমে যে শান্তি করে পানি খাব সেই পরিস্থিতিও নেই। কল দিয়ে যেন ফুটন্ত পানি বের হচ্ছে, হাত দিলে হাত পুড়ে যাওয়ার উপক্রম। তার কথা শুনে বুঝতে বাকি রইলনা, সে পানি চাইতে এভাবে ছুটে এসেছে। ঠান্ডা পানি খেয়ে ছেলেটা যেন জীবন ফিরে পেল।
আর ওদিকে যেসব শিক্ষক মহোদয় টানা ৩ ঘন্টা দাড়িয়ে পরীক্ষায় গার্ড দিচ্ছে তাদের অবস্থা আরও করুণ। গার্ড শেষ করতে না করতে আবার ছুটছে ক্লাসের দিকে, চোখে মুখে ক্লান্ত ছাপ স্পষ্ট তবে উপাই নেই সিলেবাস শেষ করতে হবে।
এদিকে বাতাসও যেন মরুভুমিতে বসে থাকার অনুভূতি জাগিয়ে যাচ্ছে। চোখরাঙানি দিচ্ছে অন্যকিছুর। ঝলসানো রোদে স্বস্তির নিশ্বাস নেওয়ার ও উপায় নেই।
এই তাপদাহ শেষ হয়ে আকাশে মেঘের পাল জমা হোক আর হঠাৎ করেই বৃষ্টি নামুক সবুজ এই চত্বরে। ভিজে যাক গা , ছুয়ে যাক ঠান্ডা হিমেল হাওয়া। দূর হোক ক্লান্তি, বৈশাখী ঝড় হয়ে আসুক প্রশান্তি। আবার ফুটুক সবার মুখে হাসি, ৩২ একরের এই ক্যাম্পাসকে ভালবাসি।
লেখকঃ
মো আসাদুর রহমান বিজয়
আইন বিভাগ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।