
কুয়াশার চাদরে মোড়া চারদিক এরপরেও আবছা দর্শনে কিছু শিক্ষার্থীকে দেখা যাচ্ছে যারা মহাব্যস্ত। এই ব্যস্ততার মুল কারন ছিলো ‘চড়ুইভাতি’। ছোটবেলায় যেটি আমার কাছে পরিচিত ছিলো জোলাভাতি নামে যা কালের বিবর্তনে পরিবর্তন হয়ে চড়ুইভাতিতে রুপান্তর হয়েছে। সে যাই হোক এদিন একটি অন্যরকম অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের(গবি) বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি(বিএমবি) বিভাগ।
নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে ও শিক্ষকসহ সকলের উপস্থিতিতে ‘চড়ুইভাতি’ সবার মাঝে নিয়ে আসে এক অন্যরকম আমেজ। একে-অন্যের সঙ্গে পরিচয় ও ভাতৃত্ব বন্ধনের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তারা।বিভিন্ন বিভাগের চড়ুইভাতি আয়োজন হতে দেখেছি কিন্তু আমার দেখা সব চেয়ে সুন্দর ও অংশগ্রহণ মুলক আয়োজন ছিলো এই বিভাগেরটি। বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী একসাথে বসে আড্ডা, গান, অন্য পাশে শিক্ষার্থীদের একটি টিম রান্নার কাজে মহাব্যস্ত সব যেন স্বপ্নের মত লাগছিলো, প্রায় ২৫০ জনের খাবার রান্নার দায়িত্ব শিক্ষার্থীরা নিজেরাই নিয়েছে এটি অভাবনীয়।
এই সকল আয়োজনের সূচনা কিন্তু আজ নয় আরো আগে থেকে শুরু হয়েছিল। ‘চড়ুইভাতি’ আয়োজনের শুরুতেই পরিকল্পনা করা হয় রানার বিষয়ে। কি কি রান্না হবে, খরচ কত হবে সব পরিকল্পনা শেষ করে সবার জন্য চাদা নির্ধারণ করা হয়। এরপর আসে কঠিন কাজ, সবার থেকে চাদা তোলা যা মোটেও সহজ কাজ নয়। এই কাজ সম্পন্ন করতে ক্লাস রিপ্রেজেনটেটিবসরা খুব পরিশ্রম করেছে, বিশেষ করে ৮ম সেমিস্টারের মহিউছ ছায়েদ তার নেতৃত্বে সবাই টাকা তোলার কাজ সম্পন্ন করেন। এরাই সকল আয়োজনের মুল ভুমিকা পালন করেন। টাকা তোলা শেষ হলে রান্নার কাজে নিয়োজিত শিক্ষার্থীরা বাজারের কাজ সম্পন্ন করে, এখানে বিভাগের শিক্ষকরাও অংশগ্রহণ করেন। বাজার শেষে সিনিয়র জুনিয়র সবাই একসাথে মিলে রান্নার প্রস্তুতি শুরু করেন।
সকাল থেকেই সবার ব্যস্ততা লক্ষণীয় বিশেষ করে রান্নার দায়িত্বে থাকা শিক্ষার্থীদের। একদিকে রান্না শুরু হয়ে যায় অন্যদিকে সবাই বিভিন্ন আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে থাকে। ছবি তোলার জন্য ফটোফ্রেম ও ফেস্টুন বানিয়ে নিয়ে আসে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। কেউ মেতে উঠে গান আড্ডায়, অনেকে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে গল্পের আসর জমাচ্ছিল। পুরো আমবাগান যেন একটুকরো উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে।
ধীরে ধীরে বিভাগের শিক্ষকগণ ও এ আয়োজনে যুক্ত হয়। সবাই মিলে একসাথে গান ও বিভিন্ন খেলায় মেতে উঠেন, কেউ কেউ স্মৃতি ধরে রাখতে সবার সাথে সেলফি তুলছেন, ছবি তুলছেন এ যেন এক অন্য দুনিয়া। দুপুরে খাওয়া শেষে খালেদ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কুইজ ও নানা ধরনের খেলায় আয়োজন করেন ক্যাম্পাসে ছোটদের সাথে বড়দের এত সুন্দর সম্পর্ক হতে পারে এখানে না আসলে কখনো জানতেই পারতাম না। সন্ধ্যা নামার আগ দিয়ে বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদানের মধ্যদিয়ে দিনব্যাপী এই আয়োজন শেষ হয়।
লিখেছেন
ইউনুস রিয়াজ,৮ম সেমিস্টার, বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি, গণ বিশ্ববিদ্যালয়