ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি। বছর ঘুরে আবার চলে এলো কোরবানির ঈদ। মুসলিম বিশ্বে ঈদ এক অনন্য ধর্মীয় উৎসব। সকল দুঃখ কষ্ট ভুলে নতুন প্রহরে শুরু হয় সাজ সাজ রব। ঈদের দিন শিক্ষার্থীদের সেসব আনন্দ আবেগ অনুভূতি ঘিরে ঈদ উৎসব তা তুলে ধরেছেন মোঃ আসাদুর রহমান।
ঈদ উল আয্’হা আমাদের শেখায় ত্যাগ ও সহমর্মিতার মহিমা
ঈদের অন্য নাম আনন্দ উৎসব বললে ভুল হবে না। আমাদের জন্য প্রতিবছর ঈদ নিয়ে আসে এক আনন্দের বার্তা। ঈদ আরো আনন্দময় বেশি হয় যদি পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া হয়। তাইতো ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে আমাদের ছুটে চলা। ঈদ উল আয্’হা একটু অন্যরকম আনন্দ নিয়েই আসে। এই বিশেষ দিনে সকল মুসলিম ভাই নামাজ আদায় করে একে অপরের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় এবং আলিঙ্গন করেন। ঈদ উল আয্’হা শুধু আনন্দের উৎসব নয়, বরং এটি ভাতৃত্ব, বন্ধুত্ব এবং সামাজিক সম্প্রীতির বার্তা বহন করে। ঈদ উল আয্’হা আমাদের শেখায় ত্যাগ ও সহমর্মিতার মহিমা। এ ঈদের বড় বিশেষত্ব কুরবানী। কুরবানীকে কেন্দ্র করে মাংস খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। তার উপর সাথে যদি থাকে আরো আমাদের পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজন তাহলে তো আনন্দটা আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়। সর্বোপরি ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি।
আলভি চৌধুরী
৩য় সেমিস্টার, বাংলা বিভাগ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।
মানুষের ভেদাভেদ ভুলে যাওয়াই দিনটির উদ্দেশ্য
ঈদ আসলে আনন্দ আর খুশির মাত্রা বেড়ে যায় বহুগুণ। মানুষের ভেদাভেদ ভুলে যাওয়াই দিনটির উদ্দেশ্য। ত্যাগের মহিমা নিয়ে আবার এসেছে ঈদুল আযহা। ইসলাম ধর্মালম্বীদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসবটি উদযাপন হবে সোমবার। যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুত গোটা দেশ। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে মানুষ ছুটছে বাড়ির পথে। ঈদের দিন সকালে ঈদের জামাতে শরিক হয়ে নামাজ আদায় মধ্য দিয়ে শুরু হবে ঈদ উদযাপন। মহান সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহের আশায় ঈদের নামাজ শেষে নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কুরবানী দেবেন ধর্মপ্রাণ ও সামর্থ্যবান মুসলমানরা। মূলত মনের পশুকে জবাই করে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে যাওয়ার যাওয়াই দিনটির উদ্দেশ্যে। ঈদুল আযহা কুরবানির ঈদ নামে পরিচিত এছাড়াও উপমহাদেশে বাকরি ঈদ নামেও পরিচিত। ধর্মীয় শরিয়া অনুযায়ী জিলহজ মাসের ১০ তারিখে উদযাপিত হয়ে থাকে। ঈদ মানে পূর্ণ তিথি, ঈদ মানে আনন্দ আশা, ঈদ মানে ভালোবাসা, ঈদ মানে মিষ্টি মুখ, ঈদ মানে চাঁদ পানে চেয়ে দেখার সুখ।
লোভা ভুঁইয়া
৪র্থ সেমিস্টার, আইন বিভাগ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।
আরও পড়ুনঃ বাবা দিবসে বাবাকে নিয়ে তরুণ প্রজন্মের ভাবনা
ঈদ উল আয্’হা হলো আল্লাহর জন্য মানুষের আত্মত্যাগ
ঈদ উল আয্’হা হলো একটি উৎসব, পরীক্ষা ও অনেক বড়ো নিয়ামত। এই দিন পশু কুরবানী করা হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য। কোরবানীকৃত গরুর মাংস খাওয়ার মাধ্যমেই যেন এই ঈদের আনন্দ আয়োজন আরো বহুগুণে বেড়ে যায়। কিন্তুু আমরা যদি শহরাঞ্চলের ঈদের দিকে তাকাই তাহলে আমরা দেখতে পাই যে গ্রামের তুলনায় শহরাঞ্চলের ঈদের দিনটা একটু বেশি বর্ণহীন, মলিন হয়ে থাকে। এই শহর অঞ্চলের ঈদের বৈশিষ্ট্য যেন ঘর কোনে আবদ্ধ হয়ে ঈদ উদযাপন করা। আমার কাছে এই দিন অনেক আনন্দের। এই দিন পরিবারের সকলের সঙ্গে আলিঙ্গন এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করা, বড়দের কাছ থেকে সালামি পাওয়া। এদিন যে আরও কত আয়োজন থাকে! তা কী বলে শেষ করা যায়! ঈদের পরদিন নানিবাড়িতে ঘুরতে যাওয়া। এই দিন পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়-স্বজনের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার দিন। আমার অনুভূতিতে ঈদুল আযহা হলো আল্লাহর জন্য মানুষের আত্মত্যাগ।
নওশীন আরা
২য় সেমিস্টার, আইন বিভাগ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।
সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সম্প্রীতির জন্যই ঈদ
ঈদুল আজহার গুরুত্ব ও আনন্দ অপরিসীম। উৎসব হিসেবে পবিত্র ধর্মীয় অনুভূতি এর সঙ্গে সম্পৃক্ত। ইসলামের দৃষ্টিতে জীবন আর ধর্ম একই সূত্রে গাঁথা। তাই ঈদ শুধু আনন্দের উৎস নয়, বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে কর্তব্যবোধ, সহমর্মিতা ও ভাতৃত্ববোধের বৈশিষ্ট্য। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সম্প্রীতির জন্যই ঈদ। ঈদ উল আয্’হার দিন মুসলমানরা পশু কুরবানি করে। এভাবে ঈদের নামাজ আদায় ও পশু কুরবানির মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের প্রয়াস পান। জিলহজ্ব মাস হচ্ছে হজ্ব পালনের মাস। আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল মুসলমানগন এ সময় হজ্ব সম্পন্ন করে। দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদ। আর এই খুশির ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে উপভোগ করতে চায় সবাই।
আমি আমার পরিবারের সাথেই ঈদের আনন্দ উপভোগ করে থাকি। ঈদের দিন শুরু হয় ঈদের নামাজের জন্য গোসল করে এবং নতুন কাপড় পরিধান করে। এই দিনে নামাজের পরে আমরা পুরো পরিবার একত্রে সকাল বেলা মিষ্টি জাতীয় খাবার দিয়ে নাস্তা করি। সকালের এই নাস্তাতে থাকে নানান ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার। নাস্তা খাবার শেষে পরিবারের পুরুষেরা আল্লাহর সন্তুষ্টির অর্জনের লক্ষ্যে কোরবানির প্রস্তুতি নিতে থাকে। কোরবানির শেষে কোরবানির প্রথা অনুযায়ী কোরবানির মাংস গরীব, আত্মীয় স্বজন এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে ভাগ করে দেয়। মাংস ভাগ করে গোছানোর দায়িত্বে থাকি আমরা মেয়েরা। এ দিনে প্রত্যেক মুসলমান অন্যদের বাড়িতে বেড়াতে যায় আনন্দ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়।
স্মরণিকা রহমান
১ম সেমিস্টার, আইন বিভাগ ,গণ বিশ্ববিদ্যালয়।