spot_img

― Advertisement ―

spot_img

গবিসাস কার্যালয়ে হামলা ও হুমকির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

আসাদুর রহমান বিজয়, গবি প্রতিনিধিঃ সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (গবিসাস) কার্যালয়ে হামলার চেষ্টা ও তালা ঝুলিয়ে দেয়ার হুমকির ঘটনায় ৬ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত...
প্রচ্ছদফিচাররক্তক্ষয় যুদ্ধের পর নতুন স্বাধীনতা

রক্তক্ষয় যুদ্ধের পর নতুন স্বাধীনতা

যুদ্ধের ৫৩ বছর পরও আমরা আজও পরাধীন। নিজের ন্যায্য দাবি পাওয়ার জন্য হারাতে হয়েছে বহু প্রাণ, ঝড়েছে বুকের তাজা রক্ত। রক্তে রঞ্জিত হয়েছে পিচের তৈরি রাস্তাগুলো। এ বৈষম্যের জাল এ অরাজকতার সমাপ্ত হলো বাংলার সূর্য সন্তানদের হাত ধরে। এ যেন নতুন সকাল, নতুন স্বাধীনতা। নতুন করে দ্বিতীয়বারের মতো অর্জিত এই স্বাধীনতা নিয়ে কি ভাবছে শিক্ষার্থীরা তা তুলে ধরছি আমি আসাদুর রহমান বিজয়।

সবাই আমরা বাংলাদেশী

দীর্ঘকাল এক স্বৈরাচারী সরকার ব্যবস্থার পতন ঘটিয়ে ২০২৪ সালে নতুন এক ইতিহাস গড়লো এ দেশের ছাত্র সমাজ। আমি ‘৭১ এর যুদ্ধ দেখিনি তবে ‘২৪ এর যুদ্ধ দেখেছি, যেখানে অজস্র মেধাবী তাজা প্রাণ শহীদ হয়েছে। তাদের এই ত্যাগ যেন কখনও বিফলে না যায় এই প্রত্যাশা। ইতিমধ্যেই দেশের সার্বিক অবস্থার অনেক ক্ষেত্রেই পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। ছাত্র জনতা নিজ থেকে কিছু দায়িত্ব পালন করছে।ধর্ম , বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবাই আমরা বাংলাদেশী। নিজেদের চেষ্টায় দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাই। ” বাংলাদেশ শান্তি প্রিয় একটি দেশ” এই উক্তিটি যেন চিরকাল ধরে রাখতে পারি এবং সবাইকে নতুন একটি চিরচেনা দেশে স্বাগতম জানাই।
শুকরিয়া
রসায়ন বিভাগ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।

ছাত্রদের হাতেই এবার বন্ধ হবে দুর্নীতি

পৃথিবীর ইতিহাসে হয়তো বিরল এমন একটি ঘটনা যেটি বাংলাদেশের সদ্য ঘটে গিয়েছে । একজন মানুষ তার ছাত্রত্ব জীবন শেষ করার পরেই তার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট শুরু হয়। অর্থাৎ সে তার কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে । সেই সুবাদে বলা যায়, একজন ব্যক্তি ২৫-২৬ বছর বয়সে যেন কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের অধিকার রাখে। ঠিক সেই ভাবেই আমাদের ছাত্র সমাজ যা করে দেখিয়ে দিয়েছেন, তারা ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে শুরু করে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও নিদারুণ ভাবে সামলাচ্ছেন।একজন প্রবাসী তার প্রেরিত রেমিটেন্স দিয়ে যেমন বাংলাদেশের অবদান রাখছে, অনুরূপভাবেই একজন মেধাবী ছাত্র মেধাকে কাজে লাগিয়ে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের মাধ্যমে বৃহৎ অর্থে বাংলাদেশকে উপকার করছে।

চাকরির ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা, স্বেচ্ছাচারিতা, নাস্তিকতা, অপরাজনীতি, ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙিয়ে কোটি টাকা চাঁদাবাজি, রাহাজানি , লুটতরাজ এবং হত্যাযজ্ঞের মতো কর্মকাণ্ডগুলো যেন কমে যায় এই প্রত্যাশা। বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের এই অদম্য ভূমিকা যেন পৃথিবীর ইতিহাসে উদাহরণ হয়ে দাঁড়াবে।
জিন্নাহ্ আল ফেরদৌস
ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সাইন্সেস অনুষদ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।

আমাদের ধর্মীয় অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখা

দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী এবং স্বৈরাচারী শাষণের থেকে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ মুক্তি পেয়েছে। বিভিন্ন সরকারি কার্যক্রমে হয়রানি, দীর্ঘসূত্রিতা, ঘুষ এসবের অবসান ঘটেছে।একের পর এক রাজনৈতিক গ্রেপ্তার, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন ইত্যাদি ছিলো সাম্প্রতিক সময়ের নিত্যদিনের ঘটনা। দীর্ঘ এক সময় পর আমরা নতুন এক বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষায়। আশা করি,আমাদের নতুন এই দেশে সাম্প্রতিক দাঙ্গা, সরকারি অফিসে হয়রানি,ঘুষ সহো সকল প্রকার দূর্নীতি থেকে এদেশের মানুষ মুক্তি পাবে।কিন্তু এই সরকারের পতনের পরপরই, এদেশের সংখ্যালঘুদের উপর আলাদা করে হামলা,অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। একজন সনাতন ধর্মের মানুষ হিসেবে আমার চাওয়া -আমাদের ধর্মীয় অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখা। কেননা,আমরাও এদেশের নাগরিক, আমরাও বাঙালি।পরিবেশে, ধর্ম,বর্ণ,জাতি ভুলে আমরা সবাই বাঙালি। আমরা সবাই এদেশের নাগরিক, এখানে কোনো ভেদাভেদ নেই।তাই এদেশে সব ধরনের মানুষ ধর্ম, বর্ণ,জাতি ভুলে সবাই একসাথে শান্তিতে বসবাস করুক।গড়ে উঠুক অসাম্প্রদায়িক, আধুনিক, চির-উন্নত বাংলাদেশ। এটাই আমাদের চাওয়া।
পীযূষ চন্দ্র রায়
ফলিত গণিত, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।

আরও পড়ুনঃ নৌকা থেকে গ্রেপ্তার সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক

বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিনত হবে

দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে চলা এক স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামীলীগ সরকারের পতন শুরু হয় ৫ই জুন, ২০২৪ এ শুরু হওয়া কোটা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। এই আন্দোলন বাংলাদেশকে এক নবরূপ দান করে। ৫ই আগষ্ট “লং মার্চ টু ঢাকা”র মধ্য দিয়ে বিজয় লাভ হয় ছাত্রজনতার। এই বিজয় দেশের জন্য এক নতুন স্বপ্নের দরজা উন্মুক্ত করে দেয়। দেশে বিগত ১৫ বছর ধরে চলা বিভিন্ন অরাজকতার অবসান হয় এবং ৮ই আগষ্ট শান্তিতে নোবেল জয়ী ড ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা করে বঙ্গভবনে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়।

একজন শিক্ষার্থী হিসেবে তারুণ্যের প্রতীক এই ইন্টারিম সরকার এক অপার সম্ভাবনার পথ খুলে দিচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে ১. ফ্যাসিবাদী রাজনীতি থেকে মুক্ত হয়ে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিনত হবে। ২. বর্তমান প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কারিকুলামে যা এদেশের সম্ভাব্য ৩কোটি শিক্ষার্থীর মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে তা পুনরুদ্ধার হবে। ৩. লেজুরভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হবে।৪. তরুণরা দেশ ত্যাগের প্রতি আগ্রহী না হয়ে দেশের প্রতি দায়িত্বশীল হবে। উপরোল্লিখিত পয়েন্টগুলো কার্যকর হলে বাংলাদেশের এই গণঅভ্যুত্থান সফল হবে বলে আশা করা যায়। এবং এতে শুধুমাত্র সরকার একা নয় বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের অংশগ্রহণ প্রযোজ্য বলে আমি মনে করি।
শাহিনুর সিদ্দিকী
মেডিক্যাল ফিজিক্স এন্ড বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।

নতুন বাংলাদেশ

আমি মনে করি আমরা এখন নতুন বাংলাদেশে আছি। যেখানে আমরা নতুন করে নতুন ভাবে সবকিছু ভাবতে পারি। আমরা আবার নতুন করে স্বাধীনতার স্বাদ পেলাম এমন অবস্থায় আমার অনুভূতি মিশ্র। অদ্ভুত রকমের অনুভূতি অনুভব করছি । কখনো আনন্দিত কখনো বিস্মিত কখনো আবার কষ্টের। বেশ কয়েকটা দিন খুব মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে ছিলাম কি হবে দেশের এটা ভেবে। খুব ভালোবাসি বাংলাদেশকে। দেশেকে কতটুকু ভালবাসি এই কয়েকদিনে বেশ টের পেয়েছি। তরুণ সমাজের কাছে অসম্ভব বলতে কিছু নেই আবার তারা দেখিয়ে দিল।
মুসলিমা আক্তার মীম
আইন বিভাগ,গণ বিশ্ববিদ্যালয়।