অপারেশন সিঁদুরের পর সিন্ধু নদের পানি বণ্টন চুক্তি বাতিলের যে সিদ্ধান্ত ভারত সরকার নিয়েছিলো, তা থেকে সরে আসার কোনো ইঙ্গিত নেই। আজ শুক্রবার ভারতের স্বাধীনতা দিবসে দিল্লির লালকেল্লা থেকে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—চুক্তি পুনর্বহালের প্রশ্নই ওঠে না। পাকিস্তানের উদ্দেশে কড়া বার্তায় মোদি বলেন, “রক্ত আর পানি একসঙ্গে বইতে পারে না।” খবর সংবাদ প্রতিদিনের।
প্রধানমন্ত্রী মোদি তার ভাষণে বলেন, সিন্ধু চুক্তির মতো অন্যায্য ও একতরফা কোনো সমঝোতা ভারত মেনে নেবে না। “ভারতের মাটি দিয়ে যে নদী বইবে, সেটার অধিকার শুধুমাত্র আমাদের দেশের জনগণের,”—যোগ করেন তিনি। কৃষকদের ও দেশের স্বার্থে বর্তমান শর্তে সিন্ধু চুক্তি মানা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন মোদি।
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগাওয়ে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ নিরীহ মানুষ নিহত হয়। এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত, পরে পাল্টা হামলা চালায় এবং সিন্ধু নদের পানি চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেয়।
১৯৬০ সালে বিশ্ব ব্যাংকের মধ্যস্থতায় হওয়া এই চুক্তি অনুযায়ী শতদ্রু, বিপাশা, রবি নদীর পানি ব্যবহারের পূর্ণ অধিকার ভারতের হাতে ছিল, আর সিন্ধু, ঝিলম ও চন্দ্রভাগার অধিকাংশ পানি পেত পাকিস্তান।
আরও পড়ুনঃ শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক বছর : অর্জন, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ
চুক্তি অনুসারে, বিতস্তা ও চন্দ্রভাগার পানির ৮০ শতাংশের অধিকার ছিল পাকিস্তানের, ২০ শতাংশ ভারতের। ভারত শর্তসাপেক্ষে ওই নদীগুলোতে বাঁধও নির্মাণ করতে পারত।
দীর্ঘদিন ধরে নয়াদিল্লি দাবি করে আসছিল, চুক্তিতে সংশোধন প্রয়োজন, কারণ ভারতের নদীবাঁধ নিয়ে পাকিস্তান সবসময় আপত্তি জানিয়ে এসেছে। চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তান যে পানি পেত, তা দিয়েই তাদের কৃষি ও অধিকাংশ পানির চাহিদা পূরণ হতো। কিন্তু পেহেলগাও সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত চুক্তি বাতিল করে দেয়। এরপর পাকিস্তান একাধিকবার চুক্তি পুনরায় চালুর আবেদন জানালেও ভারত সাড়া দেয়নি।
এবার স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে মোদি আবারও স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন—বর্তমান শর্তে কোনোভাবেই সিন্ধু পানি চুক্তি পুনর্বহাল হবে না।