আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ দীর্ঘদিন ধরে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে উত্তর এবং মধ্য গাজা থেকে বিতাড়িত হয়ে এত দিন দক্ষিণ গাজাতেই আশ্রয় নিচ্ছিলেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি নাগরিক। দক্ষিণ গাজায় মিশরের সীমান্তের কাছে রাফায় বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। এই রাফার পথ দিয়েই গাজায় ঢুকছে আন্তর্জাতিক সাহায্য। এবার সেই রাফা ত্যাগের নির্দেশ দিলো ইসরায়েল।
ইসরায়েল জানিয়েছে, রাফা এবং খান ইউনুসে রকেট আক্রমণ শুরু হয়েছে। আপাতত এই আক্রমণ চলবে। ফলে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
অন্তত ১০ লাখ মানুষ দক্ষিণ গাজায় মিশর সীমান্তে আশ্রয় শিবিরে বসবাস করছেন। নতুন করে কোথায় গিয়ে তারা আশ্রয় নেবেন তা এখনো স্পষ্ট নয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা রাতভর এবং সকালেও খান ইউনুসের আশপাশে একাধিক ইসরায়েলি হামলার কথা জানিয়েছেন। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট এবং এক চিকিৎসাকর্মী এসব হামলায় আটজন নিহত ও ৩০ জনের বেশি আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে। ওই এলাকার ইউরোপিয়ান গাজা হাসপাতাল থেকে পালাচ্ছেন রোগী ও চিকিৎসাকর্মীরা। আলজাজিরা জানায়, হাসপাতালটিতে মাত্র তিনজন রোগী রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি রিক।
উক্ত নির্দেশ ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। জাতিসংঘের প্রধান অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টেফানে দুজারিক বলেছেন, ‘আরও একবার প্রমাণিত হলো যে, গাজায় কোনো জায়গাই নিরাপদ নয়। সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
অপরদিকে, গাজা থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসলামিক জিহাদ। হামলার জেরে ওই এলাকার অনেক বাসিন্দাই পালিয়ে গেছেন।
আরও পড়ুনঃ ভারতে সৎসঙ্গে পদদলিত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১১৬, জায়গা নেই মর্গে
টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, সোমবার গাজা উপত্যকা থেকে দফায় দফায় ইসরায়েলে রকেট হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, সোমবার গাজা থেকে ইসরায়েলের ভূখন্ড লক্ষ্য করে প্রায় ২০টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে।
গত সাত মাসের মধ্যে এটি গাজা থেকে চালানো সবচেয়ে বড় হামলা। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে, গত সোমবার (১ জুলাই) বেশ কিছু ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আল শিফা হাসপাতালের প্রধান ডক্টর মোহাম্মেদ আবু সালমিয়া।
কোনো চার্জ ছাড়াই সাত মাস ধরে তাকে আটক করে রেখেছিলো ইসরায়েল। তার বিরুদ্ধে হয়নি কোন মামলাও। বস্তুত, গাজার এই আল শিফা হাসপাতালটির ভিতরে ঢুকে অভিযান চালিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের অভিযোগ ছিল, এই হাসপাতালের ভিতর এবং নিচে হামাস কে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। সে সময়েই তাকে আটক করা হয়।