spot_img

― Advertisement ―

spot_img

সাগর কন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত

মোঃ তরিকুল মোল্লা, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য গন্তব্য কুয়াকাটা, পটুয়াখালী জেলার একটি বিস্ময়কর সমুদ্র সৈকত, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র...
প্রচ্ছদইসলাম ও জীবন ব্যবস্থাজিলহজ্জের প্রথম দশ দিনের ফজিলত, করণীয় ও বর্জনীয়

জিলহজ্জের প্রথম দশ দিনের ফজিলত, করণীয় ও বর্জনীয়

জিলহজ্জের প্রথম দশ দিন গুরুত্ব এবং মর্যাদা অনেক অনেক বেশি, কেননা আল-কুরআনে জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ রজনি নিয়ে কসম খেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘শপথ প্রত্যুষের ও দশ রজনির।’ (সূরা আল- ফাজর : ১-২)। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তাফসীরে ইবনে কাসিরে এসেছে, ‘দশ রজনি বলতে জিলহজ্জের প্রথম দশ রজনি বুঝায়।’

জিলহজ্জ মাসের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘এমন কোনো দিন নেই যার আমল জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনের আমল থেকে আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় হবে। সাহাবীরা প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর পথে জিহাদ করা থেকেও কি অধিক প্রিয়? রাসুল (সাঃ) বললেন, হ্যাঁ জিহাদ করা থেকেও অধিক প্রিয় তবে যদি এমন হয় যে ব্যক্তি তার জান-মাল নিয়ে আল্লাহর পথে বের হল এবং এর কোনো কিছুই ফেরত নিয়ে এল না। (সহিহ বুখারী হা: ৯৬৯; তিরমিযী: ৭৫৭; মিশকাত: ১৪৬০)

জিলহজ্জের প্রথম দশ দিনের বিশেষ গুরুত্বের কারণ; যেহেতু ঐ দিনগুলিতে মৌলিক ইবাদতসমূহ একত্রিত হয়েছে। যেমন ছালাত, সিয়াম, সদাক্বাহ এবং হজ্জ, যা অন্যান্য দিনগুলিতে এভাবে একত্রিত হয় না’। (ফাতহুল বারী: ২/৪৬০।)

এই দশ দিনের নির্দিষ্ট কিছু আমলের কথা এসেছে যেমন:

এক. বেশি বেশি তাহলীল, তাকবির ও তাহমীদ আদায় করা।

রসুল (সাঃ) বলেছেন,‘এ দশ দিনে নেক আমল করার চেয়ে আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় ও মহান কোন আমল নেই। তোমরা এ সময়ে তাহলীল তথা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, তাকবির তথা আল্লাহু আকবার এবং তাহমীদ তথা আল-হামদুলিল্লাহ বেশি করে আদায়কর। (মুসনাদে আহমাদ: ৫৪৪৬)

দুই. যার উপরে হজ্জ ফরজ হয়েছে সে যেন হজ্জ পালন করে।

আল্লাহ কুরআনের বলেন, ‘সামর্থ্যবান সকল মুসলিমের উপর হজ্জ ফরজ’ (সূরা আলে-ইমরান: ৯৭)।

আরও পড়ুনঃ জিলহজ্জ মাসের এত মর্যাদা ও ফজিলত কেন?

তিন. জিলহজ্জ মাসের ১ তারিখ হতে ৯ তারিখ পর্যন্ত রোজা রাখা।

রাসূল (সাঃ),‘জিলহজ্জ মাসের নয় দিন, আশূরার দিন এবং প্রত্যেক মাসের তিন দিন, মাসের দুই সোমবার এবং বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন’ (সুনান নাসাঈ: ২৪১৭)।

চার. বিশেষ করে আরাফার দিন রোজা রাখা।

রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘আমি আরাফার রোজার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী, যার দ্বারা তিনি আগের এক বছরের ও পরের এক বছরের গুনাহ মাফ করবেন’। (সহীহ মুসলিম: ১১৬২)।

পাঁচ. জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার পর থেকে কুরবানি সম্পাদনের আগে পর্যন্ত নখ, চুল ও মোচ ইত্যাদি না কাটা।

রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘যারা কুরবানী করবে তারা যেন জিলহজ্জ মাসের নতুন চাঁদ উঠার পর থেকে কুরবানী করার পূর্ব পর্যন্ত তার চুল ও নখ না কাটে (সহীহ মুসলিম: ১৯৭৭; আবু দাউদ: ২৭৯১; তিরমিজী: ১৫২৩)।

ছয়. বেশি বেশি তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা। পুরুষরা উচ্চ স্বরে আর মহিলার স্বশব্দে নিচু স্বরে পড়বে। তাকবিরে তাশরিক হলো:

‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’

আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা গণনাকৃত দিনগুলিতে আল্লাহকে স্মরণ করবে’ (বাক্বারাহ ২/২০৩)। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যাই গণনাকৃত দিন বলতে জিলহজ্জ মাসের দশ দিন বুঝানো হয়েছে (সহীহ বুখারী ৯৬৯ নং হাদেসের অনুচ্ছেদ দ্রষ্টব্য)।

সাত. ঈদের সলাত আদায় করা।

রাসূল (সাঃ) ঈদুল ফিত্র ও ঈদুল আযহার দিন ঈদগাহে যেতেন এবং সেখানে তিনি প্রথম যে কাজ করতেন তাহ’ল ছালাত আদায়। আর ছালাত শেষ করে তিনি লোকদের দিকে মুখ করে দাঁড়াতেন এবং তাঁরা কাতারে বসে থাকতেন। তিনি তাঁদের নছীহত করতেন, উপদেশ দিতেন এবং নির্দেশ দান করতেন। যদি তিনি কোন সেনাদল পাঠাবার ইচ্ছা করতেন, তবে তাদের আলাদা করে নিতেন। অথবা যদি কোন বিষয়ে নির্দেশ জারী করার ইচ্ছা করতেন তবে তা জারী করতেন। অতঃপর তিনি ফিরে যেতেন’ (সহীহ বুখারী: ৯৫৬)

আট. জিলহজ্জের অন্যান্য আমল হলো কুরবানি আদায় করা।

আল্লাহ আল-কুরআনে বলেন, ‘তুমি তোমার রবের জন্য ছালাত আদায় কর এবং কুরবানী কর’ (সুরা কাওছার: ০২)।

লেখক:
মাহিদুজ্জামান সিয়াম,
সদস্য, ইসলামি পাঠাগার সাহাপাড়া বাজার।

বি.দ্রঃ মাসিক আত-তাহরীক পত্রিকার জুলাই ২০২১ সংখ্যার ‘যিলহজ্জ মাসের ফযীলত ও আমল’ শীর্ষ প্রবন্ধ হতে রেফারেন্স সমূহ সংগ্রহ করা হয়েছে।