মুসলিমদের অন্যতম ধর্মীয় ইবাদাত এবং মিলন মেলা হজ্জ পালনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে মিনা হতে আরাফার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে আরাফার ময়দানে অবস্থান করছেন হাজিগণ। লক্ষ্য লক্ষ্য কান্না বিজড়িত কন্ঠে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নিমাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারিকা লাক।’ অর্থাৎ ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার’ এই একটি বাক্যই আবার উচ্চারিত হচ্ছে। আজ সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফার ময়দানে অবস্থান করবে লাখো মুসলিম।
হজ্জ কি?
হজ্জ ইসলামের অন্যতম রুকন ও ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের অন্যতম একটি স্তম্ভ এবং এটি মুসলিমদের জন্য একটি ফরয ইবাদত। রাসুল (সা) বলেছেন, ‘ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপরে প্রতিষ্ঠিত তাওহীদ ও রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান করা এ মর্মে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) তাঁর বান্দা ও রাসূল, ছালাত কায়েম করা, যাকাত প্রদান করা, হজ্জ সম্পাদন করা ও রামাযানের সিয়াম পালন করা’ (সহীহ বুখারী: ৮, সহীহ মুসলিম: ১৬, মিশকাত শরীফ: ৪)।
হজ্জ কাদের পালন করতে হবে?
প্রতিটি সামর্থবান মুসলিম নর-নারীর উপরে হজ্জ আদায় করা ফরজ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমার জন্য উক্ত ঘরের হাজ্জ করা লোকেদের উপর আবশ্যক, যার সে পর্যন্ত পৌঁছার সামর্থ্য আছে এবং যে ব্যক্তি অস্বীকার করবে, সে জেনে রাখুক নিঃসন্দেহে আল্লাহ বিশ্ব জাহানের মুখাপেক্ষী নন’ (সূরা ইমরান: ৩/৯৭)।
হজ্জের ফজিলত কি?
আল্লাহ রব্বুল আলামীন যেমন সম্পুর্ণ মুসলিম জাতির উপরে হজ্জ ফরজ করেছেন, ঠিক একই ভাবে এর জন্য রেখেছেন অসংখ্য-অগণিত ফজিলত। যেমনঃ হজ্জ পালনকারী নবজাতকের ন্যায় গুনাহমুক্ত (সহীহ বুখারী: ১৫২১), হজ্জের একমাত্র প্রতিদান জান্নাত (সহীহ বুখারী: ১৭৭৩), হজ্জ পূর্ববর্তী গুনাহকে ধ্বংস করে দেয় (সহীহ মুসলিম: ১২১), হজ্জ দরিদ্রতা ও গোনাহ সমূহ বিদূরিত করে (সুনান তিরমিজি: ৮১০), হজ্জ হলো শ্রেষ্ঠ জিহাদ হজ্জ (সুনান নাসাঈ: ২৬২৬), হাজীগণ আল্লাহর মেহমান এবং তাদের সম্মানে পাথর, বৃক্ষরাজি, মাটি সবকিছুই তার সাথে তালবিয়া পাঠ করে। (সুনান তিরমিজি: ৮২৮, ইবনু মাজাহ: ২৮৯২)।
লেখকঃ
মো: মাহিদুজ্জামান সিয়াম
সদস্য, ইসলামি পাঠাগার সাহাপাড়া বাজার।