spot_img

― Advertisement ―

spot_img

সাগর কন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত

মোঃ তরিকুল মোল্লা, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য গন্তব্য কুয়াকাটা, পটুয়াখালী জেলার একটি বিস্ময়কর সমুদ্র সৈকত, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র...
প্রচ্ছদইসলাম ও জীবন ব্যবস্থাকুরবানীর গোস্ত কি ৩ ভাগ করা জরুরী?

কুরবানীর গোস্ত কি ৩ ভাগ করা জরুরী?

আজ পবিত্র ঈদুল আজহা, কুরবানী এই ঈদের অন্যতম ইবাদাত। যাকে অনেক আলেম সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ, আবার অনেক আলেম ওয়াজিব বলে থাকেন। ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে ঈদুল আজহার নামাজ শেষ করে সকলে নির্ধারিত পশু জবাই করে থাকেন। তবে ঈদের ও কুরবানীর আনন্দের সাথে সাথে প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মনে বেশ কিছু প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে। তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো ‘কুরবানীর গোস্ত বন্টন করা হবে কিভাবে?’

এ বিষয়ে মাসিক আত-তাহরীক অক্টোবর-২০১৪ তম সংখ্যায় প্রশ্ন উত্তর অংশের ১৯ নম্বর প্রশ্নের উত্তর আলোকিত দর্পণের দৃষ্টিগোচর হয়। প্রশ্ন ও উত্তর দুটিই হুবুহু তুলে ধরা হলোঃ

প্রশ্ন: কুরবানীর গোশত বণ্টনের সঠিক পদ্ধতি জানিয়ে বাধিত করবেন।

উক্ত বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমরা খাও এবং অভাবগ্রস্ত দরিদ্র লোকদের খাওয়াও’ (হজ্জ ২৮)। তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা নিজেরা খাও, যারা চায় না তাদের খাওয়াও এবং যারা নিজেদের প্রয়োজন পেশ করে তাদের খাওয়াও’ (হজ্জ ৩৬)। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) কুরবানীর গোশত তিনভাগ করে একভাগ নিজেরা খেতেন, একভাগ যাকে চাইতেন তাকে খাওয়াতেন এবং একভাগ ফকীর-মিসকীনকে দিতেন।

আবদুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর কুরবানীর গোশত বন্টন সম্পর্কে বলেন যে, তিনি একভাগ নিজের পরিবারকে খাওয়াতেন, একভাগ গরীব প্রতিবেশীদের দিতেন এবং একভাগ সায়েল-ফকীরদের দিতেন। হাফেয আবু মূসা বলেন, হাদীছটি ‘হাসান’। তবে আলবানী বলেন, আমি এটির সনদ জানতে পারিনি। জানি না তিনি অর্থের দিক দিয়ে ‘হাসান’ বলেছেন, না সনদের দিক দিয়ে (ইরওয়া হা/১১৬০; আলোচনা দ্রষ্টব্য: মির‘আত হা/১৪৯৩-এর ব্যাখ্যা, ৫/১২০ পৃঃ)। এছাড়া ইমাম আহমাদ, শাফেঈ (রহঃ) সহ বহু বিদ্বান কুরবানীর গোশত তিনভাগ করাকে মুস্তাহাব বলেছেন (সুবুলুস সালাম শরহ বুলূগুল মারাম ৪/১৮৮ পৃঃ)।

আরও পড়ুনঃ ঈদের দিন: আনন্দ,আবেগ, অনুভূতি ফিরে আসুক বারবার

অতএব কুরবানীর গোশত তিন ভাগ করা যায়। একভাগ নিজেদের ও একভাগ প্রতিবেশীদের যারা কুরবানী করেনি এবং এক ভাগ ফকীর-মিসকীনদের। প্রয়োজনে বণ্টনে কমবেশী করাতে কোন দোষ নেই (সুবুলুস সালাম শরহ বুলূগুল মারাম ৪/১৮৮; আল-মুগনী ১১/১০৮; মির‘আত ২/৩৬৯; ঐ, ৫/১২০ পৃঃ)। উল্লেখ্য যে, কুরবানীর গোশত যতদিন খুশী রেখে খাওয়া যায় (তিরমিযী হা/১৫১০, মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২৭৪৪)।

অতএব মহল্লার স্ব স্ব কুরবানীর গোশতের এক-তৃতীয়াংশ একস্থানে জমা করে মহল্লায় যারা কুরবানী করতে পারেনি তাদের তালিকা করে সুশৃংখলভাবে তাদের মধ্যে বিতরণ করা ও প্রয়োজনে তাদের বাড়ীতে পৌঁছে দেওয়া উত্তম। বাকী এক-তৃতীয়াংশ ফকীর-মিসকীনদের মধ্যে বিতরণ করবেন (দ্রঃ মাসায়েলে কুরবানী ও আক্বীক্বা’ বই, পৃঃ ২৩)। এর ফলে কুরবানীদাতা রিয়া ও শ্রুতি থেকে নিরাপদ থাকবেন এবং তার অন্তর পরিশুদ্ধ হবে। আর এটাই হ’ল কুরবানীর মূল প্রেরণা। আজকাল অনেকে গোশত জমা করে সেখান থেকে প্রতিবেশী ও ফকীর-মিসকীনদের কিছু কিছু দিয়ে বাকী গোশত পুনরায় নিজেদের মধ্যে বণ্টন করে নেন। এটি একটি কুপ্রথা। এর মাধ্যমে কৃপণতা প্রকাশ পায়। যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। [আত-তাহরীক ফতোয়া বোর্ড]

লেখক:
মোঃ মাহিদুজ্জামান সিয়াম
সদস্য, ইসলামি পাঠাগার সাহাপাড়া বাজার।