spot_img

― Advertisement ―

spot_img

সাগর কন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত

মোঃ তরিকুল মোল্লা, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য গন্তব্য কুয়াকাটা, পটুয়াখালী জেলার একটি বিস্ময়কর সমুদ্র সৈকত, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র...
প্রচ্ছদইসলাম ও জীবন ব্যবস্থাইসলামীক রাষ্ট্র কেমন হওয়া উচিৎ?

ইসলামীক রাষ্ট্র কেমন হওয়া উচিৎ?

ইসলামীক রাষ্ট্র বলতে বোঝায় এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে ইসলামের নীতিমালা এবং শরীয়াহ আইনকে ভিত্তি করে শাসন কার্য পরিচালিত হয়। এই ধরনের রাষ্ট্রের মূল উদ্দেশ্য হল ইসলামের আদর্শ অনুযায়ী সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, এবং আইনগত কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা। ইসলামী রাষ্ট্রের কিছু মূল বৈশিষ্ট্য হলো:

১. কুরআনের আলোকে ইসলামীক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য:

-শরীয়াহ প্রতিষ্ঠা:
ইসলামী রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি হলো শরীয়াহ বা ইসলামি আইন। আল্লাহ বলেন:
-“তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তাদেরকে পৃথিবীতে শাসন ক্ষমতা দান করবেন, যেমন তাদের পূর্ববর্তী লোকদের শাসন ক্ষমতা দান করেছেন; এবং তাদের দ্বীনকে (ধর্ম) দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করবেন।”[সূরা আন-নূর, ২৪:৫৫]
ইসলামিক রাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে শূরা বা পরামর্শকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন:
-“তাদের মধ্যে যারা পরামর্শের ভিত্তিতে কাজ করে, আল্লাহ তাদের জন্য রহমতের ব্যবস্থা করেন।” [তিরমিজি, হাদিস নং: ১৬২৭]

শরীয়াহ ভিত্তিক আইন:
ইসলামী রাষ্ট্রে আইন প্রণয়ন এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রে কুরআন এবং হাদীসের উপর ভিত্তি করে শরীয়াহ আইনকে অনুসরণ করা হয়। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, এবং ফৌজদারি ক্ষেত্রে শরীয়াহ আইনই মূল।

২. ন্যায়বিচার:
ইসলাম ন্যায়বিচারকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আল্লাহ বলেন:
-“আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দেন যে, তোমরা আমানতসমূহ তার হকদারদের কাছে পৌঁছে দাও, এবং মানুষদের মধ্যে যখন বিচার কর, তখন ন্যায়বিচারের সাথে বিচার কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে যে উত্তম আদেশ দেন তা কল্যাণকর।” [সূরা আন-নিসা, ৪:৫৮]
নবী (সা.) বলেছেন:
-“ন্যায়পরায়ণ শাসক আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।” [মুসলিম, হাদিস নং: ১৮২৭]
সকল নাগরিকের জন্য সুবিচার নিশ্চিত করা হয় এবং বিচার ব্যবস্থায় পক্ষপাতিত্ব বা অন্যায় করার সুযোগ নেই।

৩. শাসনব্যবস্থা:
ইসলামী রাষ্ট্রে শাসনব্যবস্থা নৈতিকতা ও সুশাসনের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়। শাসকগণকে সৎ, যোগ্য এবং জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করতে হবে। শাসককে অবশ্যই জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে।

৪. মানবাধিকার:
ইসলাম শাসকদের দায়িত্ব দেয় জনগণের কল্যাণে কাজ করার জন্য। নবী (সা.) বলেছেন:
“তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।” [বুখারী, হাদিস নং: ৭১৩৮]
ইসলামী রাষ্ট্রে সকল নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা করা হয়। ধর্মীয় স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, এবং সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়।

৫. সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সাম্য:
ইসলামী রাষ্ট্রে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ধনী-গরীবের মধ্যে ফারাক কমিয়ে এনে সকলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা হয়।

আরও পড়ুনঃ অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল ক্যাম্পাস

৬. শিক্ষা ও সংস্কৃতি:
ইসলামী রাষ্ট্রে শিক্ষাব্যবস্থা এবং সংস্কৃতি ইসলামের নৈতিক আদর্শের উপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা হয়। নৈতিক চরিত্র গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

৭. ধর্মীয় সহাবস্থান:
ইসলামী রাষ্ট্রে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের সহাবস্থানের সুযোগ থাকে। ধর্মীয় স্বাধীনতার সাথে সাথে ধর্মীয় সহনশীলতাও প্রতিষ্ঠিত হয়।

৮. শান্তি ও নিরাপত্তা:
ইসলামী রাষ্ট্রের অন্যতম লক্ষ্য হল শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের জীবন ও সম্পদ রক্ষা করার জন্য প্রচেষ্টা চালায়।

এগুলো একটি ইসলামী রাষ্ট্রের মৌলিক বৈশিষ্ট্য এবং কাঠামো। ইসলামী রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা এবং ইসলামের বিধান অনুযায়ী সমাজ গঠন করা

লিখেছেনঃ হাফেজ মো:ছিয়াম ইসলাম সিফাত