
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ার—এই নাম থেকেই এসেছে “পেশোয়ারি বিফ” নামটি। আফগানিস্তান সীমান্তের ঘেঁষে থাকা এই অঞ্চলটি প্রাচীনকাল থেকেই মসলাদার ও পুষ্টিকর খাবারের জন্য বিখ্যাত। আফগান ও পশতু সংস্কৃতির মিশ্রণে গড়ে ওঠা পেশোয়ারি রান্নায় মাংসের আধিক্য দেখা যায়, যার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো পেশোয়ারি কাবাব, চাপলি কাবাব এবং পেশোয়ারি বিফ কারি। এটি সাধারণত ধীর আঁচে রান্না করা হয় এবং এতে ব্যবহৃত হয় ঘন মসলা, দেশি ঘি ও ইয়োগার্ট।
রেসিপি (Peshawari Beef Curry) উপকরণ:
গরুর মাংস – ১ কেজি (সুচি টুকরো করা)
পেঁয়াজ – ৩টি (কুচি)
আদা বাটা – ১ টেবিল চামচ
রসুন বাটা – ১ টেবিল চামচ
টক দই – আধা কাপ
শুকনা মরিচ গুঁড়া – ১ চা চামচ
ধনে গুঁড়া – ১ চা চামচ
জিরা গুঁড়া – ১ চা চামচ
গরম মসলা – আধা চা চামচ
লবণ – পরিমাণমতো
দেশি ঘি – ৩ টেবিল চামচ
পানি – প্রয়োজনমতো
কাঁচা মরিচ ও ধনেপাতা – গার্নিশের জন্য
রান্নার পদ্ধতি:
প্রথমে ঘিতে পেঁয়াজ লালচে করে ভেজে নিন। এরপর আদা-রসুন বাটা দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে মাংস যোগ করুন। মাংস কিছুক্ষণ নাড়ার পর টক দই, সব গুঁড়ো মসলা ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে থাকুন।
মসলা তেল ছাড়লে পরিমাণমতো পানি দিয়ে ঢেকে দিন এবং মাঝারি আঁচে মাংস সেদ্ধ করুন। মাংস নরম হলে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে ঘন গ্রেভি তৈরি করুন।
পরিবেশনের আগে ওপর থেকে কাঁচা মরিচ ও ধনেপাতা ছড়িয়ে দিন।
পেশোয়ারি বিফ সাধারণত নান, পরোটা কিংবা প্লেইন বাসমতি চালের সাথে পরিবেশন করা হয়।
পুষ্টিগুণ
পেশোয়ারি বিফ হলো একটি শক্তিশালী প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার, যা উচ্চমাত্রার ক্যালরি ও ফ্যাট সরবরাহ করে।
উপাদান প্রতি ২০০ গ্রাম (আনুমানিক)
ক্যালরি ৩৫০–৪৫০ ক্যালরি
প্রোটিন ৩০–৩৫ গ্রাম
ফ্যাট ২০–২৫ গ্রাম
আয়রন ১৫–২০% দৈনিক চাহিদার
ভিটামিন বি১২ উপস্থিত
ক্যালসিয়াম দই থেকে কিছুটা
তবে এটি উচ্চ ক্যালরি ও চর্বি সমৃদ্ধ হওয়ায়, যারা ওজন বা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তাদের পরিমাণমতো খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় গোসলের যত্ন: নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস
জনপ্রিয়তার কারণ
ঘন মসলা ও ঘি-এর ব্যবহার: যা এর স্বাদে গভীরতা আনে। ধীর আঁচে রান্না: ফলে মাংস খুব নরম হয় এবং মসলা গভীরে ঢুকে যায়। আফগান-পাক ঐতিহ্যের ছোঁয়া: যেটা দক্ষিণ এশীয়দের কাছে এক বিশেষ লোভনীয়তা তৈরি করে।
পেশোয়ারি বিফ শুধু একটি খাবার নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক স্বাদযাত্রা, যা মধ্য এশিয়া ও উপমহাদেশের মধ্যকার ঐতিহাসিক রান্নার ধারা বহন করে। এর রেসিপি যেমন মুখরোচক, তেমনি পুষ্টিগুণেও সমৃদ্ধ। তবে সঠিক ভারসাম্যে উপভোগ করলেই পাওয়া যাবে এর আসল স্বাদ ও উপকারিতা।



