
মাহিদুল ইসলাম ফরহাদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: সীমান্তে বিএসএফের আগ্রাসনকে আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “আর নয় সহ্য, সীমান্তে আর বাহাদুরি চলবে না। এবার যদি আগ্রাসন হয়, লংমার্চ হবে।”
রোববার বিকেল তিনটায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে “জুলাই পদযাত্রা” শেষে এক পথসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ সময় তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ চেয়েছি—একটি ইনসাফ ভিত্তিক, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র। আমরা চেয়েছি মৌলিক সংস্কার ও গণত্যাকারীদের বিচার। জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ সে স্বপ্নের রূপরেখা।”
নাহিদ ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের নানা সমস্যা ও উন্নয়ন বঞ্চনার কথাও তুলে ধরে বলেন, “এই জেলা আমের রাজধানী, রেশম শিল্পের প্রাণ। অথচ আজও এখানকার আম রপ্তানির সুযোগ তৈরি হয়নি, রেশম শিল্প বিলীন হতে বসেছে। আমরা এ অবহেলা মানি না। দীর্ঘদিন ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসী ট্রেনের দাবি জানিয়ে আসছে। আমি এখান থেকেই সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই—দ্রুত এই দাবি বাস্তবায়ন করুন।”
তিনি বলেন, “চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিরোধের প্রতীক। এই শহরই জানে কিভাবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে হয়। সীমান্তে কৃষকের হাতে কাস্তে থাকা মানে এই চেতনা, এই সাহস।”
ভারতের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, “সীমান্তে আর গ্রেনেড, বোমা বা হত্যা চলবে না। আমাদের ভাইদের জীবন যদি ঝরে পড়ে, আমরা লংমার্চ ঘোষণা করব, আমাদের সীমান্ত আমরাই রক্ষা করব।”
আরও পড়ুনঃ রায়পুর বণিক সমিতির সভাপতি মুরাদ, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর
পথসভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, “স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে এই দেশের জনগণের উপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে। ভারতের সরকার সেই ফ্যাসিবাদের পাশেই দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এখন বাংলাদেশ বদলেছে—মানুষ তাদের অধিকার বুঝে নিয়েছে, আর আগের মতো আঙ্গুল তুলে কথা বলার সুযোগ ভারতকে দেওয়া হবে না।”
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সদস্য আসিফ মোস্তফা জামাল প্রমুখ।
সভা শেষে নেতৃবৃন্দ এনসিপির চাঁপাইনবাবগঞ্জ কার্যালয় উদ্বোধন করেন এবং রাজশাহীর উদ্দেশে পদযাত্রা চালিয়ে যান। বক্তারা বলেন, ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে জুলাই ছিল একটি ঐতিহাসিক বিস্ফোরণ—যা দেশজুড়ে প্রতিরোধের আগুন ছড়িয়ে দিয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জও তার ব্যতিক্রম নয়।