spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদজাতীয়গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি, অবরুদ্ধ অবস্থায় এনসিপি নেতাদের নিরাপদ স্থানে

গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি, অবরুদ্ধ অবস্থায় এনসিপি নেতাদের নিরাপদ স্থানে

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত পদযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সহিংসতার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৬টা পর্যন্ত জেলায় কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বলেন, “জীবন-মৃত্যুর মতো পরিস্থিতি না হলে সাধারণ জনগণ ঘর থেকে বের হবেন না।”

তিনি আরও জানান, গোপালগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে এবং “নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের ভেঙে দেওয়া হবে।”

সরেজমিনে জানা যায়, বুধবার দুপুরে গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে অনুষ্ঠিত এনসিপির পূর্বনির্ধারিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে। সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের একদল ক্যাডার মঞ্চ ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তা সত্ত্বেও এনসিপির নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ পরিচালনা করেন।

সমাবেশ শেষে নেতা-কর্মীরা যখন গাড়িবহরে করে স্থান ত্যাগ করছিলেন, তখন আবারও হামলার শিকার হন তারা। এনসিপির গাড়িবহরে ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাডারদের হামলা, গাড়ি ভাঙচুর এবং ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের গাড়ি ও ইউএনওর গাড়িবহরেও হামলা চালানো হয়।

সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা একপর্যায়ে পৌরসভা এলাকায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে তাদের গাড়িবহর খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

আরও পড়ুনঃ শহীদ আবু সাঈদকে উৎসর্গ করে ‘বাংলা এডিশন’ অনুসন্ধানী গণমাধ্যমের শুভ উদ্বোধন

এদিকে পরিস্থিতি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে ঢাকা থেকে বাড়তি পুলিশ ও র‍্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। মনিটরিং করছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, “এই সহিংসতা ছিল পরিকল্পিত এবং পূর্বপরিকল্পিতভাবে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ভণ্ডুল করতে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন হামলা চালিয়েছে।”

কারফিউ জারির কারণে শহরের রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানপাট বন্ধ। সাধারণ জনগণের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কেউ অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনসিপি নেতারা একে গণতন্ত্রবিরোধী দমনপীড়নের ন্যক্কারজনক উদাহরণ বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং দেশবাসীর কাছে প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন।