
মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ নির্বাচনকালে সাংবাদিকদের দায়িত্বপালনে করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়াবলির ওপর বিস্তারিত নীতিমালা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত বুধবার (২৩ জুলাই) কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত নীতিমালাটি ইসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
এই নীতিমালা অনুযায়ী, জাতীয়, স্থানীয় বা উপনির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংবাদিকদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে পাশ, পরিচয়পত্র ও যানবাহনের স্টিকার ইস্যু করা হবে। রাজধানীকেন্দ্রিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের স্টিকার ও কার্ড ইসির জনসংযোগ অধিশাখা থেকে দেওয়া হবে। আর স্থানীয় সাংবাদিকদের এসব অনুমোদন প্রদান করবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার বা তাঁর কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
সাংবাদিক পরিচয় নিশ্চিত করতে নির্ধারিত ফরমে অফিসিয়াল প্যাডে নিউজ এডিটর/চিফ রিপোর্টার/বার্তা প্রধান/জেলা প্রতিনিধি কর্তৃক স্বাক্ষরিত আবেদন করতে হবে ভোটের অন্তত সাতদিন আগে। আবেদনের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র, সাংবাদিক পরিচয়পত্র বা পিআইডি, সদ্য তোলা ছবি এবং প্রমাণ হিসেবে কিছু সংখ্যক পত্রিকার কপি জমা দিতে হবে।
ভোটগ্রহণ ও ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের জন্য নির্দেশনা
নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়, শুধুমাত্র বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিকগণই ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। ভোটকক্ষে ঢুকে প্রিজাইডিং অফিসারকে জানিয়ে ছবি তোলা, ভিডিও ধারণ ও তথ্য সংগ্রহ করা যাবে। তবে, গোপন কক্ষে কোনো ছবি বা ভিডিও করা যাবে না।
একই ভোটকক্ষে একসঙ্গে দুইয়ের বেশি মিডিয়ার সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারবেন না এবং সেখানে ১০ মিনিটের বেশি অবস্থান করতে পারবেন না। এছাড়া ভোটার, নির্বাচনি কর্মকর্তা বা এজেন্টদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ এবং কোনো সরাসরি সম্প্রচার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও লাইভ করা যাবে না।
ভোট গণনা কক্ষে সাংবাদিকরা উপস্থিত থাকতে পারবেন, ছবি তুলতে পারবেন, তবে সেখানেও সরাসরি সম্প্রচার নিষিদ্ধ।
ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রিজাইডিং অফিসারের নির্দেশ মেনে চলতে হবে এবং তার অনুমতি ছাড়া কোনো নির্বাচনি উপকরণ স্পর্শ বা অপসারণ করা যাবে না।
এছাড়া সাংবাদিকদের রাজনৈতিক প্রচারণা বা বিদ্বেষমূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকতে হবে এবং দায়িত্ব পালনের সময় কোনো পক্ষাবলম্বন করা যাবে না।
আরও পড়ুনঃ ঢাকার উপকন্ঠ শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া যেন ” অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য!”
নীতিমালায় আরও বলা হয়, নির্দেশনা অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের পাশ বাতিল করা যাবে এবং প্রয়োজনে নির্বাচনি আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।
এ নীতিমালা জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছাড়াও সিটি কর্পোরেশন, উপজেলা, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ ও উপনির্বাচনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
নির্বাচন কমিশনের মতে, এই নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি একটি সুশৃঙ্খল ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনায় সহযোগিতা পাওয়া যাবে।