মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান শুধু একটি আন্দোলন নয়, এটি ছিল একটি জাতীয় পুনর্জাগরণ। বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের জন্য এই অভ্যুত্থান ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ অর্জন ধরে রাখতে হবে।”
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯ টায় ঐতিহাসিক ৩৬ জুলাই- ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থান স্মরণে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনী ডক্টর'স এসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃক আয়োজিত "জুলাই বিপ্লব উদযাপন" সপ্তাহের সমাপনী অনুষ্ঠান "স্মৃতিতে জুলাই" সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও পুরস্কার বিতরণী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মেয়র ডা. শাহাদাত বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদ, দুঃশাসন, দুর্নীতি ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে ছাত্র, যুবক, পেশাজীবী ও জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধ। এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণ বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থাকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক ও সমানাধিকারের সমাজের ভিত্তি রচনা করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই অভ্যুত্থান গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের ফসল। এখন সময় এসেছে সেই গণতন্ত্রকে সংহত করার। সরকারের দায়িত্ব হলো একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার নিশ্চিত করা।”
বক্তব্যে তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের মূলনায়ক ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতৃত্বেই এই আন্দোলন সফল হয়েছে। ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানে তরুণদের ভূমিকা ছিল অনন্য, যা প্রমাণ করেছে—তারা অবহেলিত হলে, দমন-পীড়নের শিকার হলে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে জানে। এই তারুণ্যই ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গড়বে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. তানভীর হাবিব তানহা, এবং অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক ডাক্তার আসহাব মেহরাজ আসিফ, চট্টগ্রাম মেডিকেল ড্যাব শাখার সভাপতি ডাক্তার মোঃ জসিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মেম্বার ডাক্তার তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিক, ড্যাব চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি ডা: আব্বাস উদ্দিন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সসদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, এনডিএফ’র কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ডা: এ কে এম ফজলুল হক, ডা: বেলায়েত হোসেন ঢালি, ডা: ঈসা চৌধুরি, ডা: সারোয়ার আলম।
আরও পড়ুনঃ সাংবাদিকরা দলের নয়, জনগণের হোকঃ আমীর খসরু
অধ্যক্ষ ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের মূল বার্তা হলো সমাজে ও রাষ্ট্রে বৈষম্য দূরীকরণ। গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে হলে এ বার্তাকে বাস্তবায়ন করতে হবে।”
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. তসলিম উদ্দিন বলেন, “আমরা চাই এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে ধর্ম, বিশ্বাস ও সংস্কৃতির ভিত্তিতে কোনো নাগরিকের সঙ্গে বৈষম্য হবে না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র মানেই অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র।”
ডা. খুরশিদ জামিল বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ফ্যাসিবাদী শাসন চাপিয়ে দিয়ে জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ অভ্যুত্থানেই সেই ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে।”
এতে আরো বক্তব্য রাখেন এসোসিয়েশিনের সি. সহ-সভাপতি ডাক্তার সাইফুদ্দিন সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার মোনাইম ফরহাদ, স্বাগত বক্তব্য দেন ডাক্তার নুরুল ইসলাম, ডা: মাহমুদুল হাসান, ডা: তাশদীদ আনান, ডা: জুয়েল, ডা: রাকেশ, ডা: রাকিব, ডা. শ্রীপূর্ণা, ডা: মিজান, ডা. তারেক সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় সংগীত পরিবেশন ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। বক্তারা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন, ‘জুলাই চেতনা’ই হবে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গড়ার অনুপ্রেরণা।