ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সরকারের শাসনামলে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে—এবিষয়ে জনগণের সামনে তথ্য উপস্থাপনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির নেতৃত্ব দেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। কিন্তু তার মতে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার যে নজির স্থাপনের সুযোগ বর্তমান সরকারের উপদেষ্টাদের সামনে ছিল, সেটি কাজে লাগানো হয়নি।
শুক্রবার বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “ঘটনাটা অনেকটা শেখ হাসিনার মতো হলো। উনিও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সম্পদ ও আয়ের তথ্য প্রকাশ করবেন, কিন্তু করেননি। একইভাবে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারও সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।”
ড. দেবপ্রিয় জানান, ক্ষমতা গ্রহণের দুই সপ্তাহের মাথায় গত বছরের ২৫ আগস্ট জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা শিগগিরই নিজেদের আয় ও সম্পদের বিবরণী প্রকাশ করবেন। পরে এ বিষয়ে নীতিমালাও তৈরি হয়। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো উপদেষ্টার আয়-সম্পদের হিসাব জনগণের সামনে আসেনি।
এর মধ্যেই উপদেষ্টা, তাদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠছে। যদিও অভিযুক্তরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “যদি সম্পদের তথ্য প্রকাশ না হয়, তাহলে প্রশ্ন থেকেই যায়—কেন প্রকাশ করা হচ্ছে না? কিছু কি লুকানো হচ্ছে?”
আরও পড়ুনঃ সাংবাদিক তুহিনের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল রাজশাহী
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদও প্রশ্ন তোলেন, “ড. ইউনূস ক্ষমতায় আসার পর তার হাতে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ প্রতিষ্ঠানের যেভাবে সুবিধা হয়েছে, তা কি পরিবর্তনের নমুনা?”
এদিকে সাম্প্রতিক অভিযোগের মধ্যে রয়েছে—গত বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের এক সাবেক এমপির বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সম্পৃক্ততার দাবি। তবে আসিফ অভিযোগটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করে অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “৫ আগস্ট ২০২৪-এর পর অভিযোগকারী জানে আলম অপুর সঙ্গে আমার দেখা বা কথা হয়নি। রিয়াদ নামে যাকে উল্লেখ করা হচ্ছে, তাকেও আমি চিনি না।”