মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ, সিনিয়র ষ্টাফ রিপোর্টারঃ মেটার দ্বিচারিতা বন্ধ না হলে বাংলাদেশে ফেসবুক বন্ধ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত। বাংলাদেশের ৫০টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও ৯৮টি পেজ বন্ধের বিষয়ে সরকার ক্ষুব্ধ বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, অ্যাকাউন্ট ও পেজ বন্ধের বিষয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা জানতে চিঠি দেওয়া হবে। সদুত্তর বা ব্যবস্থা না নিলে প্রয়োজনে বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হবে।
শনিবার (১ জুন) রাজধানীর গুলশান ক্লাবে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) আয়োজনে বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রকে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুনঃ আদালতের নিষেধাজ্ঞাকে ব্যবসা বানিয়ে রেখেছে দুর্গাপুর উপজেলা প্রশাসন
মেটার প্রতিবেদনের বিষয়ে আরাফাত বলেন, মেটা থেকে যেটা করা হচ্ছে বা বলা হচ্ছে; এটা তো তারা বাংলাদেশের কিছু মানুষকে ব্যবহার করে তাদেরকে দিয়ে করিয়েছে। তার ফলে দেখা যাচ্ছে যে, ৯৮টি পেজ ও ৫০টি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের কথা বলছে এগুলো সব আওয়ামী লীগের পেজ। ঠিক আছে হতে পারে, দেখলেই বোঝা যায়। যদি আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বলে আর বিএনপির বিপক্ষে কথা বলে; তাহলে তো বোঝা যাবে তারা আওয়ামী লীগ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষে যারা, তারা তো আওয়ামী লীগ হবে। কিন্তু তাদের আউটফোর্স করল এটাই যে, ১৪৮টা অ্যাকাউন্ট ও পেজ সবগুলো আওয়ামী লীগের পেল, কী করে, ওরা কারা। মেটার উচিত ওদের পরিচয় অনুসন্ধান করা। এটা যে একটা একপাক্ষিক প্রতিবেদন সেটা বোঝা যায়। ওই প্রতিবেদনে ১৪৮টা পেজ থেকে বিরোধীদল বিএনপি, বিএনপির দুর্নীতি নিয়ে বলেছে, তা তো বলবেই। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কী আছে, এ রকম কোনো কিছু আমি পাইনি।
তিনি আরও বলেন, এরপর তারা (মেটা) বলছে যে, যারা এটা চালায়, তাদের পরিচয় তারা পাইনি। গোপন করা আছে, খুব ভালো কথা। তারপর তারা আবার বলছে, তাদের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে এরা এমন ব্যক্তি, যারা আওয়ামী লীগে সাথে, সিআরআইয়ের সাথে সংযুক্ত।
‘ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও পেজগুলোর পেছনের ব্যক্তিরা কীভাবে আওয়ামী লীগ ও সিআরআইয়ের সঙ্গে যুক্ত, তা মেটা উল্লেখ করেনি। তারা যে কারণগুলোর কথা বলেছে, সেগুলোর পক্ষে সুস্পষ্ট কোনো তথ্যও নেই। প্রতিবেদনটি স্ববিরোধী। আওয়ামী লীগের সমর্থক বিএনপির দুর্নীতি নিয়ে তো কথা বলবেই। কোন ব্যাপারটি অসত্য, সেটা মেটা উল্লেখ করেনি,’ বলেন তিনি।
তথ্যপ্রতিমন্ত্রী বলেন, মেটা তার নামের সঙ্গে একটা কলঙ্কযুক্ত করছে, এসব যদি করে তাহলে সতর্ক হতে হবে তাদেরকে। মেটাকে বলতে হবে সতর্ক হও। যাকে তাকে দিয়ে যেন প্রতিবেদন না করে, তাহলে তার গ্রহণ যোগ্যতা থাকবে না। তারা যদি অনুসন্ধান না করে, প্রতিবেদনগুলো যে একপাক্ষিক হচ্ছে, এগুলো নিয়ে যদি ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
উল্লেখ্য, ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে বিরোধীদের সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও এর গবেষণা সেল ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন-সিআরআই’ সংশ্লিষ্ট ৫০টি অ্যাকাউন্ট ও ৯৮টি পেজ মুছে দিয়েছে ফেসবুক। এসব অ্যাকাউন্ট থেকে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ বিএনপি এবং দলটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হতো বলে জানিয়েছে মেটা।
গত ২৯ মে প্রকাশিত ‘প্রতিপক্ষের প্রতি হুমকি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা এই বিষয়টি তুলে ধরেছে।