শেখ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, সাভার প্রতিনিধিঃ ১৯৭১ সালের পরে যে বাংলাদেশীর জন্ম হয়েছে, সে স্বাধীনতা দেখল আজ ৫ আগষ্ট ২০২৪ ইং দুপুরে, হাসিনার পলায়ন এর মাধ্যমে। আর যারা ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ দেখেছিলেন তাদের চোখে নতুন এক বাংলাদেশেরর জন্ম হলো ছাত্র জনতার গণ অভ্যুথানের মাধ্যমে। আর ১৯৯০ এর পরে যারা বড় হয়েছেন তারা নতুন করে গণঅভ্যূথান সচক্ষে দেখার অভিজ্ঞতা নিল আগষ্টের ৫ তারিখ।
আগষ্ট মাসটি আওয়ামীলীগের জন্য বুমেরাং তা আবারো প্রমানিত হলো, ১৫ আগষ্ট ১৯৭৫ শেখ মুজিব নিহত হওয়ার অনেক বিশ্লেষণ আপনারা শুনেছেন। তবে এইবার শেখ হাসিনার পালায়নের পিছনে তাঁর অতি আত্নবিশ্বাস, আর রুক্ষ বাক্য ব্যবহার আর ওবায়দুল কাদেরের ছাত্রলীগকে দায়িত্ব দেয়ার' সিদ্ধান্তকেই দায়ি করেছেন সুশীর সমাজ।
তার মানে এই যে প্রায় পাঁচ শতাধিক(আরও বৃদ্ধির আশংকা) শিশু, সাধারণ মানুষ আর অযুত সম্ভাবনাময় ছাত্র জনতার মৃত্যু ও যে ক্ষয়ক্ষতি -তার জন্য দায়ি যদি কেউ হন তবে ১ ও ২ নম্বরে আসে শেখ হাসিনা আর ওবায়দুল কাদেরের নাম। তারা সরাসরি হুকুমের আসামী।
৫ আগষ্ট দুপুরের পরেই মানুষ জানতে পারেন যে, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন। সঙ্গে আছেন শেখ রেহানাও। এরও প্রায় এক সাপ্তাহ পূর্বে থেকেই অর্থ মন্ত্রী, কৃষি মন্ত্রী, সাবেক রেল মন্ত্রী, দক্ষিণ সিটি মেয়র সহ অনেক ভিআইপি, সিআইপি আর যারা এই ১৫ বছরে বিশাল অংকের অবৈধ টাকার মালিক হয়েছে' এমন অনেকেই সপরিবারে পালিয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার আস্থাভাজন কিছু নেতৃবৃন্দ বিশ্বাসই করতে পারেন নাই যে, বঙ্গবন্ধুর কন্যা এভাবে দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন। কিন্তু কি আর করা। বিধি বাম। কথায় আছে, পাপে ছাড়ে না বাপেরে।
৩ আগষ্ট জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ছিল। স্বাভাবিকভাবেই তিন বাহিনীর প্রধান, সিনিয়র মন্ত্রী সহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এই মিটিং উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়। মূলত সেই বৈঠকেই সেনাবাহিনীর প্রধান সাধারণ ছাত্র জনতার বিরুদ্ধে সেনা বাহিনীর গুলি চালানো উচিত হবে না বলে' মতামত ব্যক্ত করেন। নিজ হাতে গড়া সেনাবাহিনী প্রধানের এমন মন্তব্যেই প্রধানমন্ত্রীর মনোবল ভেঙ্গে যায়।
আরও পড়ুনঃ গ্ৰেফতার ডিবি হারুন , চলছে জিজ্ঞাসাবাদ
তাছাড়া ৪ আগষ্ট আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে থাকার ওয়াদা করলেও দুপুরের পরে তারা মূলত ছাত্র জনতার বাধ ভাঙ্গা জোয়ারে মাঠ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। খেলা হবে' বলে যে ঝানু দলটি কয়েক বছর যাবত মাঠ গরম করছিল সেই উজ্জেবিত দলটি মাত্র ২০ দিনের আন্দোলনে গুটি কয়েক তরুন ছাত্রদের তুপের মুখে খেলা শেষ করে দিল- এতে অবাক হয়েছেন খোদ আওয়ামীলীগের শত্রুরাও।
তবে এটুকু বলা যায় যে, সেনাবাহিনীর প্রধান হিসাবে জেনারেল ওয়াকার -উজ্জ-জামানের নামটা ছাত্র জনতা তথা বাংলাদেশী মানুষের হৃদয়ে শ্রদ্ধাভরে অমলিন হয়ে থাকবে অনেকদিন। সব ভাল যার শেষ ভাল তার। সেনাপ্রধান যেভাবে আশ্বস্ত করেছেন আমরাও তাঁর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে বাংলাদেশে পরিচালনায় একটা সফল সরকার ব্যবস্থা ও স্থিতিশিল দেশ তিনি উপহার দিবেন এই প্রত্যাশা করছে সর্বসাধারণ।