আলোকিত দর্পণ, নিউজ ডেস্কঃ লন্ডনের ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিল, বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে তার পরিবার আর্থিক স্বার্থ আদায়ের জন্য সমালোচিত ছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ মুজিবুর রহমান সরাসরি ঘুষ নেননি, তবে তার ছেলেদের ও আত্মীয়দের আর্থিক কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকে। মুজিব পরিবারের এ ধরনের দুর্নীতি ও বিতর্কিত অধ্যায় এখনও আলোচনায় রয়েছে।
শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর তার কন্যা শেখ হাসিনা রাজনীতিতে ফিরে এসে বাবার মতোই একদলীয় শাসনের পথে হাঁটেন। তার শাসনামলে রাজনৈতিক নিপীড়ন, স্বজনপ্রীতি এবং দুর্নীতি আরও বিস্তৃত হয়। গণহত্যা, সম্পদ লুণ্ঠন এবং দেশকে ভারতের আধিপত্যে নিয়ে যাওয়ার দায় নিয়ে হাসিনা ২০২৪ সালের গণ-আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হন এবং দেশত্যাগে বাধ্য হন।
টিউলিপ সিদ্দিক ও ব্রিটেনের রাজনীতিতে বিতর্কিত অধ্যায়ঃ শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টি থেকে টানা চতুর্থবারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়ে প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন। তাকে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ে ইকোনমিক সেক্রেটারি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, যেখানে তার দায়িত্ব ছিল দুর্নীতি প্রতিরোধ করা। তবে দুর্নীতির অভিযোগে নিজেই পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি।
টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে লন্ডনে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার গ্রহণ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাৎ এবং ব্রিটেনে ও বাংলাদেশে একাধিক সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগ।
ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো টিউলিপের দুর্নীতির বিষয়টি ফলাও করে প্রচার করেছে। টিউলিপ ও তার বোন আজমিন সিদ্দিক রুপন্তির নামে কেনা ফ্ল্যাটগুলোর আয় বৈধ নয় বলে দাবি উঠেছে। শেখ রেহানার ফ্ল্যাট কেনার প্রসঙ্গে সালমান এফ রহমানের সংশ্লিষ্টতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
শেখ পরিবারের সদস্যদের বিপুল সম্পদের তথ্য নিয়ে আরও আলোচনা শুরু হয়েছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা ও তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ৩০০ মিলিয়ন ডলার অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আরও পড়ুনঃ দেশের নাম পরিবর্তনসহ সংবিধান, নির্বাচন এবং প্রশাসনে বড় সংস্কারের সুপারিশ
আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থপাচার চক্র: আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী সাইফুজ্জামান জাভেদের লন্ডন ও দুবাইয়ে বিপুল সম্পদ থাকার প্রমাণ মেলে। তিনি স্বীকার করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বিদেশি ব্যবসার কথা জানতেন। একইভাবে, শেখ পরিবারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেক ব্যক্তি বিপুল অর্থপাচারে জড়িত ছিলেন।
শেখ পরিবারের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিপীড়নের শেষ অধ্যায়? শেখ হাসিনার ছেলের বিরুদ্ধে এফবিআইয়ের রিপোর্ট ও টিউলিপ সিদ্দিকের দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করে যে শেখ পরিবার শুধুমাত্র দেশের সম্পদ লুটপাট করেনি, দেশের মানুষকে শোষণ করেও বিদেশে বিলাসী জীবন যাপন করেছে।
টিউলিপ সিদ্দিকের রাজনৈতিক পতন এবং শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি প্রমাণ করে, একদিন চোরতন্ত্রের অবসান হয়। বাংলাদেশের মানুষ আজ তাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে।
সুত্রঃ আমার দেশ