
মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, “আমরা কোনো স্বার্থের জন্য রাজনীতি করি না, আন্দোলন করি না। তবে একটা বিষয় পরিষ্কার করতে চাই, আওয়ামী লীগ প্রশ্নে গণঅধিকার পরিষদ বিন্দুমাত্র ছাড় দেবে না।”
বৃহস্পতিবার (১ মে) সন্ধ্যায় আশুলিয়ার জিরাবোতে দেওয়ান ইদ্রিস উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে শ্রমিক অধিকার পরিষদ আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নুর বলেন, “আমরা রাষ্ট্র সংস্কার চাই। নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে যত চর্চা হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি জরুরি হচ্ছে জনগণের স্বার্থ রক্ষা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সচেতন থাকা। আমরা কোনো সরকারকেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে দেব না যা দেশের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলতে পারে।”
রাখাইন রাজ্যে তথাকথিত মানবিক করিডর স্থাপনের প্রস্তাব বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কক্সবাজারের ভূমি ব্যবহার করে রাখাইন রাজ্যে সহায়তা পৌঁছানোর নামে যে মানবিক করিডরের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে ফুলস্টপ দিতে হবে। এক পাও না আগাতে বলছি। এমন সিদ্ধান্ত দেশের স্বার্থবিরোধী।”
নুরুল হক নুর আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি তুলে বলেন, “যে দলটা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বরতম গণহত্যা করেছে, মানুষকে পঙ্গু করেছে, সেই আওয়ামী লীগকে এখনো নিষিদ্ধ করা হয়নি — এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, অবিলম্বে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী লুটেরা সংগঠনগুলো নিষিদ্ধ করুন এবং তাদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে আহত ও নিহত পরিবারগুলোকে সহায়তা দিন।”
আরও পড়ুনঃ লক্ষ্মীপুরে চাঁদাবাজদের হুঁশিয়ারি, ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার করার প্রতিশ্রুতি জামায়াত নেতার
তিনি আরও বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান শুধু একটা আন্দোলন ছিল না, সেটা ছিল একটা জাতীয় ঐক্যের বহিঃপ্রকাশ। এখন যদি আমরা ঐক্য ও সংহতি ধরে রাখতে না পারি, তাহলে এই ফ্যাসিবাদ আবার ফিরে আসবে। দেশ আবার ভারতীয় আধিপত্যের ছায়ায় ঢেকে যাবে। এটা কোনোভাবেই হতে দেওয়া যাবে না।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ শওকত হোসেন ফরহাদসহ বিভিন্ন শিল্প এলাকার শ্রমিক নেতারা। সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালিও অনুষ্ঠিত হয়।
নুরের বক্তব্যে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতা, এবং ক্ষমতাসীন দলের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাশাপাশি জনগণকে অধিক সচেতন ও সংগঠিত হওয়ার আহ্বান উঠে আসে।