spot_img

― Advertisement ―

spot_img

শাজাহানপুরে জামায়াত মনোনীত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নাম ঘোষণা

মহিউছ ছাইয়েদ, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শাজাহানপুরে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে।সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল...
প্রচ্ছদরাজনীতিআমীরে জামায়াতের বক্তব্য— এক অনন্য দৃঢ়তার প্রতিচ্ছবি

আমীরে জামায়াতের বক্তব্য— এক অনন্য দৃঢ়তার প্রতিচ্ছবি

মহিউছ ছাইয়েদ, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সভা শুরু হয়েছিল আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্য দিয়ে। মঞ্চে উঠেই বক্তব্য শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই সবার হৃদয় ছুঁয়ে যায় এক বিস্ময়কর দৃশ্য। কিছু মুহূর্তের মধ্যেই তিনি ধপাস করে মাটিতে পড়ে যান। সভাস্থলে মুহূর্তেই উদ্বেগের ছায়া নেমে আসে।

ডাক্তাররা দ্রুত ছুটে আসেন। চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হয় সব ব্যবস্থা। উপস্থিত নেতা-কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা চরম উৎকণ্ঠায় অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, আমীর সাহেব চিকিৎসা নিতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি পুনরায় উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন, আবারও কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু দুর্বল শরীর তাকে সাড়া দেয়নি, আবারও পড়ে যান। তবুও তিনি থামেননি।

শরীরের যন্ত্রণা, অসুস্থতা— সবকিছুকে উপেক্ষা করে তিনি বসে থেকেই বক্তব্য দিতে শুরু করেন। বারবার সবাই অনুরোধ করছিলেন— “আপনি বিশ্রাম নিন, চিকিৎসা নিন।” কিন্তু তিনি নিরুত্তাপ কণ্ঠে বলেন, “এটাই আমার দায়িত্ব। আমি কথা না বলে যেতে পারি না।”

তিনি বলেন, “আমি শিশুদের ভাই, তরুণদের ভাই, নারীদের ভাই, বৃদ্ধদের সহপথিক। আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই। আমি এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যা কেবল কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির নয়— সকল মানুষের জন্য, যেখানে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হবে।”

যারা তাঁর চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমার মৃত্যু আল্লাহর হাতে। তিনি যখন নির্ধারণ করেছেন, তখনই হবে— এক মুহূর্ত আগে নয়, এক মুহূর্ত পরেও নয়।”

এই দৃশ্য সভাস্থলে উপস্থিত সকলকে আবেগাপ্লুত করে তোলে। অনেকে চোখের জল আটকে রাখতে পারেননি। একজন নেতার এমন আত্মত্যাগ, দায়িত্ববোধ ও ঈমানি দৃঢ়তা— সেখানে উপস্থিত সকলের হৃদয় স্পর্শ করে।

আরও পড়ুনঃ নালিতাবাড়ীতে ১৭৫ হতদরিদ্র পরিবারে নতুন আশার আলো: গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগি পেলেন উপকারভোগীরা

কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে, এই মহান মানবিক দৃশ্যের মধ্যেও কিছু বিকৃত মনের মানুষ বিদ্বেষ ও বিদ্রুপ ছড়াতে পিছপা হয়নি। আমীরে জামায়াতের অসুস্থতাকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা ছড়াচ্ছে কটূক্তি ও উপহাস।

তাদের উদ্দেশে মানুষের একটাই বার্তা— “লানত সেইসব হৃদয়হীনদের প্রতি, যারা একটি অসুস্থ মানুষকে সম্মান দেখাতেও ব্যর্থ হয়।”

এই ঘটনা ছিল শুধু একটি বক্তব্য নয়, বরং ছিল দায়িত্ববোধ, আত্মত্যাগ ও তাওয়াক্কুলের অনন্য নিদর্শন। যা মানুষের হৃদয়ে চিরস্থায়ী ছাপ ফেলে যাবে।